জমি বাঁচাতে বিকল্প চাষে আগ্রহী ময়নাগুড়ি
চা বাগানের গ্রাস থেকে উর্বর জমি রক্ষায় অস্ত্র হয়েছে ফুল ও ফলের চারা। সবজির দাম না পেয়ে যখন চা বাগান তৈরির হুজুগে ভাসছেন অনেকে তখন ময়নাগুড়ির টেকাটুলি গ্রামের এক চাষি শুধু ফুল ও ফলের চারা তৈরি করে বিকল্প রোজগারে নজির গড়েছেন। শুধু নিজের স্বাচ্ছন্দ্য নয়। চা বাগান যে ভাবে উর্বর চাষের জমি গ্রাস করছে তা দেখে উদ্বিগ্ন চাষি ননীগোপাল রায় গ্রামে ঘুরে অন্য চাষিদেরও উৎসাহিত করছেন চারা তৈরির কাজে।
হলহলিয়া নদীর ধারে প্রায় পাঁচ বিঘা জমি জুড়ে ফুটেছে গাদা, এস্টার, কেলেন্ডুলা, পপির মতো রকমারি ফুল। এক কোণে ঘেরা জায়গায় বিঘা খানেক জমিতে চলছে আম, জাম, দারচিনি, আমলকি, কাঁঠাল, নিম চারা পরিচর্যার কাজ। এভাবেই বাঁশ বাগান ঘেরা গ্রামের মাঝে জেগে উঠেছে রঙিন দ্বীপ। আশপাশে সামান্য কিছু ধান ও সবজির খেত। বেশিরভাগ জমি চলে গিয়েছে চা বাগানের দখলে। ফনফন করে ধেয়ে আসা বাগান নদীর কাছে থমকে গিয়েছে ননীগোপালবাবুর একরোখা মেজাজের ভয়ে।
ফুল-চারার চাষ। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
ওই চাষি জানেন তা। তিনি বলেন, “উর্বর চাষের জমিতে চা বাগান তৈরি কোনও ভাবে মেনে নিতে পারছি না। একবার বাগান গড়লে জমির চরিত্র পাল্টে যাবে। জমি ফের সবজি ও ধান চাষের উপযোগী করে তুলতে কয়েক বছর চলে যাবে। তা ছাড়া শুধু চা খেয়ে থাকব নাকি!” ননীগোপালবাবু বছরের অন্য সময় ধান ও পাট চাষ করেন। শীতে একই জমিতে ফুলের চারা তৈরি করেন। তিনি জানান, এক বিঘা জমিতে শুধুমাত্র গাদা ফুলের চারা তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় ৮ হাজার টাকা। ফুল সহ চারা বিক্রি করে মিলছে ২০ হাজার টাকা। ১২ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। বাজারের সমস্যা নেই। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, সিকিম ও ভুটানের ক্রেতারা চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ একই জমিতে বোরো ধান অথবা সবজি চাষ করে ৪ হাজার টাকার বেশি লাভের কথা কেউ ভাবতে পারে না। সঙ্গে রয়েছে বাজারের সমস্যাও।
প্রয়াত বাবা নগেন্দ্রনাথ রায়ের কাছে চারা তৈরির কৌশল শিখে বছর পঁচিশেক আগে ননীগোপালবাবু বাড়ির সামনে যে ছোট বাগান সাজিয়ে বড় কিছু করার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন সেটাই এখন পরিধিতে পাঁচ বিঘায় দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, “গত পাঁচ বছরে চা বাগান তৈরির হিড়িক শুরু হওয়ায় চারা তৈরির কাজের জেদ বেড়েছে। প্রচারও করছি।” কী প্রচার করেন? স্থানীয় চাষি হিতেন বর্মন জানান, ননীগোপালবাবু দেখা হলেই বলেন চা বাগান না করে ফুল ও ফলের চারার বাগান করুন। চায়ের বাজার ভাল। কখন খারাপ হবে বলা যায়! তখন কী হবে? ময়নাগুড়ি ব্লক কৃষি আধিকারিক সঞ্জীব দাস বলেন, “চাষিদের উৎসাহিত করতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমরা ননীগোপালবাবুকে ডাকব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.