চেয়ারম্যান পদ থেকে নান্টু পালের অপসারণের পর শিলিগুড়ি পুরসভার জোট ছেড়ে তারা বেরিয়ে আসবেন কি না তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারল না তৃণমূল। সোমবার তৃণমূলের মেয়র পারিষদরা গাড়ি-সহ পুরসভা থেকে ভাতা এবং মোবাইল ফোনের খরচ আর নেবেন না বলে এ দিন লিখিতভাবে পুর কমিশনারকে জানিয়ে দেন। তবে কাউন্সিলরদের একাংশ চাপ সৃষ্টি করছেন এ ভাবে কিছু সুবিধা ছেড়ে পদে বসে না থেকে বোর্ড ছেড়ে বেরিয়ে আসতে। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তাঁরা নিতে পারেননি। তৃণমূলের পরিষদীয় দলনেতা গৌতম দেব বলেন, “উপনির্বাচন নিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব ব্যস্ত। শীঘ্রই দলের কাউন্সিলররা তাদের সঙ্গে বসে আলোচনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।”
এ দিন তৃণমূলের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মারা নৈতিকতার প্রশ্নে মেয়রের পতদ্যাগ করা উচিত বলে দাবি করেছেন। তাঁদের যুক্তি কংগ্রেস এবং তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যা এতদিন ছিল ১৫ এবং ১৪ জন। সেই মতো জোটের বোর্ডে কংগ্রেসকে মেয়র পদ দেওয়া হয়। নান্টু পাল তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পর এখন পরিস্থিতি উল্টো। মেয়র অবশ্য বলেন, “আমার পদত্যাগের কোনও প্রশ্নই নেই। তৃণমূল চাইলে আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনুক।” তিনি জানান, নান্টুবাবু কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে জিতে কাউন্সিলর হয়েছেন। তিনি পদত্যাগ করে তৃণমূলের টিকিটে ভোটে জিতে আসলে তবেই ওই দাবি মানায়। এ মুহূর্তে পুরসভার ৪৭ জন কাউন্সিলরের মধ্যে তৃণমূলের মাত্র ১৫ জন কাউন্সিলর নিয়ে অনাস্থা আনা যে সম্ভব নয় তা জানেন গৌতমবাবু। তিনি বলেন, “অনাস্থা আনতে ন্যূনতম ১৬ জন কাউন্সিলর দরকার আমরা জানি। মেয়র নির্বাচনে আমরা তাদের সমর্থন করেছিলাম। এখন আমাদের কাউন্সিলররা সমর্থন করছেন না। নৈতিকতার প্রশ্নে মেয়রের পদ থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত বলে তাই কাউন্সিলররা জানিয়েছেন।”
জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শঙ্কর মালাকার বলেন, “জোটের নেতা নান্টুবাবুকে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে নিয়ে গিয়ে অনৈতিক কাজকে সমর্থন করছেন গৌতমবাবুরাই। তাই নৈতিকতার প্রশ্ন তাদের মুখে মানায় না।” এ দিন বেলা ১ টা নাগাদ নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা তৃণমূলের কাউন্সিলররা জানাবেন বলে থাকলেও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বেলা সওয়া ৪ টে বেজে যায়। আপাতত দলের চার জন মেয়র পারিষদ কৃষ্ণবাবু, ডেপুটি মেয়র রঞ্জনবাবু, সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত এবং স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী গাড়ি, ভাতা-সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পুরসভা থেকে নেবেন না বলে জানিয়ে দেন। পুর কমিশনার না থাকায় পুরসভার সচিব কাজলকান্তি সাহার মাধ্যমে তাঁকে লিখিত ভাবে তা জানিয়ে দেন মেয়র পারিষদরা। |