বিভিন্ন মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের ফলে রাজ্যের স্কুলে নিয়োগ স্থগিত রয়েছে। এ বার একটি মামলার ভিত্তিতে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা নিয়োগের কমিটি নিয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তির উপরে স্থগিতাদেশ দিল উচ্চ আদালত। এর ফলে এই মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত রাজ্য সরকার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বা সহায়িকা নিয়োগ করতে পারবে না।
হাইকোর্টে মামলাটি দায়ের করেছেন উদয়ন গুহ, পরেশ অধিকারী, অক্ষয় ঠাকুর-সহ কোচবিহারের চার ফব বিধায়ক। সোমবার তার শুনানিতে আবেদনকারীদের আইনজীবী মিলন ভট্টাচার্য জানান, ২০০৬ সালে তৎকালীন রাজ্য সরকার প্রতিটি বিধানসভা এলাকার বিধায়ককে চেয়ারম্যান করে এক-একটি কমিটি তৈরি করে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকার পদে আবেদন খতিয়ে দেখে নিয়োগের সুপারিশ করাই ছিল ওই কমিটির কাজ।
আবেদনকারীদের আইনজীবী জানান, ২০১২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বর্তমান রাজ্য সরকার আগের কমিটি খারিজ করে নতুন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তাতে বলা হয়, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা নিয়োগের জন্য প্রতিটি জেলায় একটি করে কমিটি থাকবে। সেই কমিটির চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান মনোনীত করবে রাজ্য সরকার। কোচবিহার জেলার মন্ত্রী হিতেন বর্মনকে চেয়ারম্যান এবং বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ রায়কে ভাইস-চেয়ারম্যান করে কমিটি গড়া হয়। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চেয়ারম্যান কোনও কারণে অনুপস্থিত থাকলে যে-কোনও লোককে ওই দায়িত্ব দেওয়া যাবে।
এ দিন সরকারের ওই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মিলনবাবু আদালতে জানান, চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকলে যে-কোনও লোক এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে পারবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ এক জন সমাজবিরোধীকেও এই দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে! তিনি মন্তব্য করেন, সরকারের কোনও বিজ্ঞপ্তি যে এত লঘু ভাবে তৈরি করা যায়, তা ভাবাই যায় না। গ্রামাঞ্চলে মা ও শিশুদের কল্যাণের জন্য যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সরকার কতটা উদাসীন, নতুন এই বিজ্ঞপ্তি তারই প্রমাণ।
বিচারপতি তপেন সেন সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চান, যে-কোনও লোককে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া যাবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে যা উল্লেখ করা হয়েছে, তার অর্থ কী? সরকারের আইনজীবী সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। |