|
|
|
|
দু’টি পরিবারকে চেক মুখ্যমন্ত্রীর |
নৈনান কাণ্ডে ১৩ মাস পর ক্ষতিপূরণ |
শুভাশিস ঘটক • আমতলা |
১৩ মাস বাদে মিলল সরকারি ক্ষতিপুরণ।
মগরাহাটের নৈনান-কাণ্ডে পুলিশের গুলিতে মৃত রেজিনা খাতুন এবং সায়েরা বিবির পরিবারের লোকজন এত দিন নানা মহলে ঘুরে সরকারি ক্ষতিপূরণের আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার, দক্ষিণ শহরতলির আমতলায় একটি সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকেই সেই ক্ষতিপূরণ পেলেন তাঁরা। দু’টি পরিবারের হাতেই দু’লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
১৩ মাসের অপেক্ষার পরে এই চেক পেয়ে খুশি দু’টি পরিবারই। রেজিনার বাবা আজগর আলি মল্লিক বলেন, “আমার আরও দু’টি সন্তান রয়েছে। এই টাকা তাদের পড়াশোনায় খরচ করব। অনেক দিন ধরে প্রশাসনের কাছে দরবার করেছি। এখন প্রশাসন সদয় হয়েছে।” সায়েরা বিবির স্বামী সফিক শেখ বলেন, “এই টাকা পাওয়ার পর সন্তানদের পড়াশোনার সুবিধা হবে। তা ছাড়া, যদি অন্য কোনও ব্যবসা করা যায়, তার চেষ্টাও করব।”
২০১১ সালে ১ ডিসেম্বর মগরাহাটের নৈনান গ্রামে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ কাটতে গিয়েছিলেন বিদুৎ বণ্টন দফতরের কর্মীরা। জনতা তাঁদের আটকে রাখে। পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে জনতার সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে। গুলিও চলে। বিকেল চারটে নাগাদ পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী রেজিনা স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল। বাড়ির কাছে একটি মাঠে ওই খণ্ডযুদ্ধের মধ্যে থেকে একটি গুলি এসে তার গলায় লাগে। পুলিশই ওই গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ। ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা রেজিনাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রায় একই ভাবে মারা যান ওই গ্রামের বধূ সায়েরা বিবি। তিনি মাঠের পাশের একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির ছাদে উঠেছিলেন। আচমকা গুলি এসে তাঁর মাথায় লাগে। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে তোলপাড় হয়। সরকার মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে।
রেজিনার বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালান। সায়েরা বিবির স্বামী সফিক শেখ ঠিকাদারি কাজ করেন। দু’জনেরই কষ্টের সংসার। সরকারি ঘোষণার কয়েক মাস পরেও ক্ষতিপূরণ না মেলায় দু’টি পরিবারই প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে দরবার করেছে বারেবারে। কিন্তু শুধু প্রতিশ্রুতি ছাড়া এত দিন আর কিছুই মিলছিল না বলে তাঁদের অভিযোগ।
এ দিকে, নৈনান-কাণ্ডের কয়েক দিন পরেই সংগ্রামপুরে বিষমদ-কাণ্ডে ১৭২ জন মারা যান। মাস আটেক আগে ওই পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু ঘোষণা সত্ত্বেও সরকারি সাহায্য না মেলায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন রেজিনার বাবা এবং সায়েরার স্বামী। এ বার সেই হতাশা কাটল।
মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে চেক নিয়ে নৈনানে বাড়ি ফিরলেন আজগর-সফিক। |
|
|
|
|
|