পদ হারালেন টিএমসিপি নেতা
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সহ-সভাপতির পদ থেকে সৌমেন আচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হল। সৌমেনের বাড়ি ঝাড়গ্রাম শহরে। গত কয়েক মাসে একের পর এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সংগঠনকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন এই টিএমসিপি নেতা। সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম শহরে পথ দুর্ঘটনার জেরে আকরিক লোহাবাহী বেশ কয়েকটি লরিতে ভাঙচুর ও লরিগুলির যন্ত্রাংশ লুঠের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে সৌমেন ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ঝাড়গ্রাম থানায় সৌমেন-সহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ভাঙচুর-লুঠের অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযুক্তেরা সকলেই শাসক-দলের কর্মী-সমর্থক হওয়ায় কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। শাসক-দলের ছাত্র সংগঠনের নেতা হওয়া সত্ত্বেও সৌমেন ও তাঁর সঙ্গীরা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে বিরোধী দলের মত আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে টিএমসিপি’র অন্দরে। সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও সৌমেনের কার্যকলাপে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছিল তৃণমূল শিবির। কিন্তু সংগঠন তথা দলে এতদিন ‘তাজা ছেলের’ শিরোপা পেয়ে এসেছিলেন সৌমেন। টিএমসিপি সূত্রের খবর, রবিবারই সৌমেনকে জেলা সহ-সভাপতির পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাতে সৌমেনকে টেলিফোন করে বিষয়টি জানিয়েও দেন টিএমসিপি’র জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি। এমনকী সৌমেনকে সাংগঠনিক কাজকর্ম থেকে নিষ্ক্রিয় থাকারও নির্দেশ দেন তিনি। তবে বিষয়টি নিয়ে বিশদে জানাতে চাননি রমাপ্রসাদ। টিএমসিপি’র জেলা সভাপতির মন্তব্য, “এটা সাংগঠনিক রদবদল।” তবে টিএমসিপি সূত্রের খবর, সৌমেনের বিরুদ্ধে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল। রবিবারই টিএমসিপি’র রাজ্য কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে সৌমেনকে পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেন রমাপ্রসাদ। সৌমেনের প্রতিক্রিয়া, “আমি কিছু জানি না। লরি ভাঙচুরের ঘটনায় আমাকে পরিকল্পিত ভাবে জড়ানো হয়েছে। আমি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় জনতার ক্ষোভ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম।” গত বছর ২২ সেপ্টেম্বর ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ চত্বরে দু’দল ছাত্রের মারামারি থামাতে গিয়ে নিগৃহীত হন তৎকালীন অধ্যক্ষ কিশোরকুমার রাঢ়ী। অধ্যক্ষকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে সৌমেনের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে টিএমসিপি’র তরফে সৌমেনের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং কিশোরবাবুর ডানা ছেঁটে তাঁকে উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল কলেজে সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক পদে বদলি করা হয়। কলেজের ভবন সংস্কার ও নতুন ভবন তৈরির কাজের বরাত পাওয়া ঠিকাদারের লোকজনের কাছ থেকে টাকা চাওয়ারও অভিযোগ ওঠে সৌমেন ও তাঁর সঙ্গীসাথীদের বিরুদ্ধে। টিএমসিপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌমেনের গাফিলতির জন্যই ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের নির্বাচন প্রক্রিয়া ভণ্ডুল হয়ে যায়। গত ১৬ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র সংগ্রহের দিন পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তাদের উপস্থিতিতেই কলেজ গেটের সামনে এসএফআই-সহ দু’টি বাম ছাত্র সংগঠনের নামে তোলা মনোনয়নপত্রগুলি লুঠ হয়ে যায়। এক্ষেত্রেও অভিযোগ ওঠে সৌমেনের বিরুদ্ধে। এক তরফা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন টিএমসিপি সমর্থিতরা। ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় এসএফআই। ২৯ জানুয়ারি আবেদনের শুনানি করে ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচনের ফলপ্রকাশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে কলকাতা হাইকোর্ট।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.