|
|
|
|
হলদিয়া পুরসভা |
তৃণমূলের বাধায় পণ্ড প্রাক-ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
তৃণমূলের লাগাতার বিক্ষোভে হলদিয়া পুরসভার কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছিলই। সোমবার ভাষা দিবস উপলক্ষে পুরসভা আয়োজিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অনুষ্ঠান ঘিরে পুরসভার বিরুদ্ধে পাল্টা দুর্নীতির অভিযোগ তুললেও বাধা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এই প্রেক্ষিতে ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের মূল অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পুর-কর্তৃপক্ষ।
গত ১১ বছর ধরে হলদিয়া পুরভবনের সামনে বাংলাদেশের ভাষা শহিদ মঞ্চের আদলে মঞ্চ তৈরি করে ভাষা দিবস পালন করছে পুরসভা। রবীন্দ্র নজরুল মুক্ত মঞ্চে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রতিযোগিতার। এই বছর ভাষা দিবসের দিন বন্ধ থাকায় রবিবারই মূল অনুষ্ঠান বাদে প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান সেরে ফেলতে চেয়েছিল পুরসভা। সে জন্য ওই দিন পুর এলাকার পাঁচটি জায়গায় অঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। অভিযোগ, তৃণমূলের বাধায় চার নম্বর ওয়ার্ডের পালকি বাদে অন্য কেন্দ্রে অঙ্কন প্রতিযোগিতা বাতিল হয়ে যায়। সোমবার দুপুরে পুরসভা সংলগ্ন রবীন্দ্র মুক্ত মঞ্চ ও পুরভবনের প্রেস কর্নারে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ছিল। এই দিনও বাম কাউন্সিলরদের ‘দুর্নীতি’র অভিযোগে লাগাতার বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। অভিযোগ পুরভবনের বাইরেও প্রতিযোগীদের বাধা দেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। ফলে প্রাক-ভাষা দিবসের এই অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হয় পুরসভা।
গত বছর ৩ জুন পুর-নির্বাচনে ২৬টি আসনের ১৫টি দখল করে হলদিয়া পুরসভায় ক্ষমতায় আসে বামেরা। ২৬ জুন প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ জায়া তমালিকা পণ্ডা শেঠ পুরপ্রধান হিসেবে চতুর্থ বারের জন্য শপথ নেন। এরপর থেকে প্রতি মাসের উন্নয়নমূলক বোর্ড মিটিংকে ‘অবৈধ’ ঘোষণার দাবি জানিয়ে লাগাতার বিক্ষোভ চালিয়েছে তৃণমূল। পঞ্চম উন্নয়নমূলক বোর্ড মিটিংয়ের পর সমস্যার কথা রাজ্যপালকে জানিয়েছেন তমালিকা পণ্ডা শেঠ। তবু বিক্ষোভ চলছেই। সম্প্রতি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান কেন এত দিন আগে হবে তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলরেরা। তাঁদের দাবি, ভাষা দিবসের দিনেই অনুষ্ঠান করতে হবে। তৃণমূলের আরও অভিযোগ, দুর্নীতি করতে এই সব অনুষ্ঠানের ফাঁদ পেতেছে পুরসভা। বাম কাউন্সিলরদের বাছাই করা কয়েকটি ক্লাবকে এক হাজার করে টাকা দেওয়া হবে বলেও অভিযোগ তৃণমূল কাউন্সিলরদের। বিরোধী দলনেতা দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “মানুষ ক্ষোভ দেখিয়েই অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। লিফলেট বিলি হয়েছে এক দিন আগে। ক্লাবকে পুরস্কৃত করা থেকে মিষ্টির প্যাকেট-সবেতেই দুর্নীতি। তাই আমরা বিরোধিতা করেছি। তবে বাধা দিইনি।” উপ-পুরপ্রধান নারায়ণ প্রামাণিক বলেন, “লিফলেট অনেক আগেই বিলি হয়েছে। কেন ওঁরা দেরিতে পেয়েছেন তা দেখতে হবে। আর ওঁদেরকেও ক্লাব জোগাড় করতে বলা হয়েছিল। ওঁরা দেননি।” পুরপ্রধান তমালিকা পণ্ডাশেঠ বলেন, “পাঁচ জন তৃণমূল কাউন্সিলর ও বাইরে থেকে লোক জমায়েত করে অনুষ্ঠান বানচাল করা হল। মানুষ এর জবাব দেবে। আমার মনে হয় কারও চাপের মুখে পড়ে বিরোধী কাউন্সিলরেরা এই সব করছেন।” |
|
|
|
|
|