দুর্গাপুজো বা কালীপুজোর থেকে সরস্বতী প্রতিমার সংখ্যা কিছু কম নয়। অথচ, দুর্গাপুজো বা কালীপুজোর বিসর্জনে গঙ্গার ঘাট সাফাইয়ে সামাল দিতে পারলেও সরস্বতী প্রতিমা বিসর্জনে বেসামাল কলকাতা পুরসভা। ঘাটের স্তূপাকৃতি জঞ্জাল দেখে প্রশ্ন উঠেছে পুর-পরিষেবা নিয়ে।
সরস্বতী পুজো ছিল শুক্রবার। শনি ও রবি দু’দিন ধরে চলেছে বাবুঘাটে বিসর্জন। দু’দিনেই জমে উঠেছে জঞ্জালের স্তূপ। গঙ্গার ঘাট পর্যন্ত পৌঁছনোই যেন দুরূহ ব্যাপার। গত দু’দিন ধরে বাবুঘাটের রানি রাসমণি ঘাট ও প্রিন্সেপ ঘাটে এটাই চিত্র। রানি রাসমণি ঘাটে জমে উঠেছে সরস্বতীর বীণা থেকে হাঁস এমনকী ঘট, পচা ফুলও। ছোট থেকে বড় বিভিন্ন আকৃতির সরস্বতী প্রতিমার কাঠামো কাদায় গেঁথে আছে। কেউ আবার জঞ্জালের স্তূপ দেখে ঘাটের সিঁড়িতেই ঠাকুর রেখে চলে গিয়েছেন। |
সরস্বতী বিসর্জনের পরে এমনই অবস্থা বাবুঘাটের। —নিজস্ব চিত্র। |
রাসমণি ঘাটের কাছে যজমানি করেন অরূপ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বহু প্রতিমা জঞ্জালে আটকে যাচ্ছে।” জঞ্জালের স্তূপের মধ্যেই অনেককে দেখা গেল স্নান করতে নামছেন। তাঁদের অভিযোগ, জোয়ার এলে এই জঞ্জাল ভেসে গেলেও ফের ঘাটে এসে জমা হবে। পরিষ্কার করার কেউ নেই।
প্রায় একই অবস্থা প্রিন্সেপ ঘাটেও। তালতলা থেকে আসা এক পুজোকর্তা রাজেশ বসু বলেন, “নোংরা দেখে জলে নামতেই ইচ্ছা করছে না। কাঠামোগুলি পাড়েই পড়ে আছে।”
সরস্বতী পুজোর বিসর্জনকে কেন্দ্র করে ঘাটের সঙ্গীন অবস্থার কথা মানছেন পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারও। তিনি বলেন, “বাবুঘাটের দু’টি ঘাটেরই অবস্থা খুব খারাপ। পুরসভার চার জন কর্মী দু’দিন ধরে কাজ করছেন। আমরা বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে পারিনি। আগামী বার থেকে সরস্বতী পুজোর বিসর্জনের ক্ষেত্রেও সচেতন থাকব।” পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের অভিযোগ, “ঘাট তদারকির দায়িত্ব পুরসভার সঙ্গে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদেরও। এ ব্যাপারে হাইকোর্টের নির্দেশ আছে। কিন্তু পর্ষদ দায়িত্ব পালন করছে না।” পর্ষদের চেয়ারম্যান বিনয়কৃষ্ণ দত্ত বলেন, “সরস্বতী পুজোর বিসর্জনের পরে ঘাটের যে এমন অবস্থা হয়েছে, তা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।” |