এ বার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চও জানিয়ে দিল, ডানলপের সাহাগঞ্জ ও অম্বাত্তুর কারখানার যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির দখল নেবে অফিসিয়াল লিকুইডেটর। কিন্তু তিনি সম্পত্তি বিক্রি করে দায় মেটনোর পথে এখনই যেতে পারবেন না। বরং তার আগে সম্পত্তি মূল্যায়নের শেষে সব পক্ষের দাবি পরীক্ষা করে দেখবেন লিকুইডেটর।
গত ডিসেম্বরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ডানলপের ওই দুই কারখানার সম্পত্তি বিক্রি করে পাওনাদারদের বকেয়া মেটাতে লিকুইডেটর নিয়োগের নির্দেশ দেন। তাঁর রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে কয়েক দিন আগে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন ডানলপ কর্তৃপক্ষ। ডিভিশন বেঞ্চ কর্তৃপক্ষকে ১০ কোটি টাকা আদালতে জমা রাখার নির্দেশ দিয়ে সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত লিকুইডেটর বসার ওই নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে। ডানলপ কর্তৃপক্ষ ১০ কোটি টাকা জমাও দেয়। |
সোমবার সেই মামলায় বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি শুক্লা কবীরের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানান ডানলপের আইনজীবী। বেঞ্চ সেই আবেদন নাকচ করে দিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, অফিসিয়াল লিকুইডেটর অবিলম্বে ডানলপের দায়িত্ব নেবে। তবে ডানলপ নিয়ে আপিল মামলাটি চলবে।
এই নির্দেশের ফলে হাইকোর্টের কাছে জমা রাখা ১০ কোটি টাকা এখনই ফেরত পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা রইল না ডানলপের। শুধু তা-ই নয়, এর ফলে দুই কারখানার উপর ডানলপ কর্তৃপক্ষের আর কোনও রকম কর্তৃত্বও থাকল না। সবই চলে গেল লিকুইডেটরের হাতে।
ডানলপ নিয়ে রায় দেওয়ার আগে হাইকোর্ট বলেছে, সাহাগঞ্জ এবং অম্বাত্তুরের কারখানা থেকে ডানলপ কর্তৃপক্ষ গত কয়েক বছরে প্রায় ২,৩০০ কোটি টাকা সরিয়ে ফেলেছেন। এর মধ্যে স্থাবর এবং অস্থাবর দু’ধরনের সম্পত্তিই রয়েছে। হিসেবে দেখা যায়, শুধু শ্রমিকদেরই বকেয়া রয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। এ ছাড়া ১৬টি পণ্য সরবরাহকারী সংস্থা পাবে কয়েকশো কোটি। প্রায় ১০০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বলে রাজ্য সরকারেরও দাবি।
এ দিন ডানলপ কর্তৃপক্ষের আইনজীবী অতনু রায়চৌধুরী জানান, ডিভিশন বেঞ্চ তাঁদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, অফিসিয়াল লিকুইডেটর ডানলপের সব সম্পত্তির দখল নেবে। এবং তিনিই সরিয়ে নেওয়া ও বর্তমান সম্পত্তির তালিকা তৈরি করবেন। পুনরায় নির্দেশ ছাড়া সম্পত্তি বিক্রিও করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। |