কয়েক মাস আগের আতঙ্কিত মুখগুলো এখন তুলনায় শান্ত। চোখের ভাষায় স্বস্তি। গুছিয়ে কথা ফোটে না বেশির ভাগের মুখে। হাবেভাবে বুঝিয়ে দিলেন, “বেঁচে গিয়েছি।”
গুড়াপ-কাণ্ডের পরে রাজ্য জুড়ে শোরগোল শুরু হওয়া ‘দুলাল
স্মৃতি সংসদ’ নামে সেই হোম থেকে তিন শিশু-সহ ২০ জন আবাসিককে সরিয়ে আনা হয়েছিল জাঙ্গিপাড়ার ‘জনশিক্ষা প্রচার কেন্দ্র’ নামে অন্য একটি হোমে। শিশুরা বাদে প্রায় সকলেই মানসিক ভাবে অসুস্থ। চিকিৎসা চলছে। সোমবার হোমে গিয়ে দেখা গেল, জনে জনে ডেকে তাদের হাতে ওষুধ তুলে দিচ্ছেন মেয়েদের কাউন্সিলিংয়ের দায়িত্বে থাকা মৌসুমী হাজরা। সঙ্গে হোমেরই এক কর্মী সুদেষ্ণা দাস।
১৭ জন মেয়ের মধ্যে মানসিক ভাবে সুস্থ পানপাতিয়া। বছর চল্লিশের এই মহিলা গুড়াপ কাণ্ডের পরে জানিয়েছিলেন সেখানকার ভয়ঙ্কর দিনগুলির কাহিনী। খেতে-পরতে পাওয়া তো দূরস্থান, নিয়মিত শারীরিক অত্যাচারের সম্মুখীন হতে হত মানসিক প্রতিবন্ধী বহু আবাসিক মহিলাকেই। সে কথা সিআইডি-র জেরায় জানিয়েওছেন পানপাতিয়া। এ দিন একগাল হেসে সেই মহিলাই বললেন, “এখানে এসে অন্তত বেঁচে গিয়েছি। অনেক শান্তিতে আছি সকলে।”
১৯৬৯ সালে তৈরি হয়েছিল জাঙ্গিপাড়ার এই হোম। এই মুহূর্তে আবাসিকের সংখ্যা ১১৭ জন। আধিকারিকদের এক জন দিলীপকুমার দে জানালেন, গুড়াপের হোম থেকে আসা মেয়েদের দেখভালের যথাসাধ্য চেষ্টা চলছে। তবে এঁদের বেশির ভাগেরই মানসিক চিকিৎসা হচ্ছে। সেই খাতে বাড়তি সরকারি সাহায্য এলে ভাল। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই হোমের তরফে হুগলি জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিকের কাছে দরবারও করেছেন তাঁরা। হোমটির দায়িত্বে আছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক আবির হোসেন। তিনি বলেন, “আবেদন বিবেচনা করা হচ্ছে।” জেলার অন্যান্য হোমগুলিতেও নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। |