|
|
|
|
মেঘালয়-নাগাল্যান্ড |
ভোটারদের বুথে টানতে গানই হাতিয়ার কমিশনের |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • শিলং |
প্রেম দিবসে প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড যখন গাইছে ‘মাই ভোট, মাই ভ্যালেন্টাইন’, তখনই নাগাল্যান্ডের ঘরে ঘরে বাজছে, ‘লেট্স রাইজ আপ।’ কেল্লাফতে! ভোট প্রচারের ‘থিম সং’ হিট হওয়ায় শুক্রবারের সলমন বা শাহরুখের মতোই হাঁফ ছেড়েছেন দুই রাজ্যের দুই মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)। এক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমন গান পাগল যে গানকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করে পৃথক দফতরই খুলে ফেলেছেন। অন্য জন, কথায় কথায় গুনগুনিয়ে ওঠেন ‘বিট্ল্স’, ‘বন জোভি’ থেকে ‘এয়ার সাপ্লাই’।
নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ের ভোটে সেই তালে তাল মিলিয়েছে নির্বাচন কমিশনও।
মেঘালয় ও নাগাল্যান্ড, দু’টি রাজ্যই গান পাগল। যস্মিন দেশে যদাচার-এর তত্ত্ব মেনেই তাই নির্বাচন কমিশন বুঝে গিয়েছিল, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের ‘জেন-ওয়াই’-কে বুথমুখী করতে গেলে নীতিকথায় চিড়ে ভিজবে না। তাই বিজ্ঞাপন সংস্থার পেশাদারদের সহায়তায় মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের জমপ্রিয় গায়ক-সুরকারদের নিয়ে তৈরি হয় ‘থিম সং’, ‘জিঙ্গল’।
এমন কী যুব সমাজকে বুথের দিকে টানতে মেঘালয়ের সিইও পি নায়েকের চেষ্টায় ‘ভ্যালেন্টাইন মিউজিক্যাল নাইট’-এর আয়োজনও করা হয়। এক মঞ্চে হাজির রক-জ্যাজ্-মেটাল ব্যান্ড প্রেমের জয়গান গাইছে।
মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমাও গানের পোকা। পারলে গিটার কাঁধেই প্রচারে যান। ফুলবাড়ির বাঙালি হেভিওয়েট মন্ত্রী, আবু তাহের মণ্ডল আবার গোয়ালপাড়িয়া গানের ভক্ত। বলছিলেন, “আমার প্রতিপক্ষ তো জসিমউদ্দিনের গানের সুরে আমার বিরুদ্ধে গান বেঁধেছে। কয়েকটা গানের সুর বেড়ে হয়েছে। আমিও সেই গান মনের ভুলে গুনগুনিয়ে ফেলছি।”
নাগাল্যান্ডের মানুষও উৎসব আর গানের টানে নাওয়া-খাওয়া ভুলতে পারেন। জঙ্গি নেতা বন্দুক চালাতে যতটা দড়, তার চেয়েও স্বচ্ছন্দ গিটারের ছয় তারে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী নেফিয়ু রিও, গানকে রাজ্যে শিল্পের মর্যাদা দিয়ে গড়ে তুলেছেন সরকারি প্রতিষ্ঠান, ‘মিউজিক টাস্ক ফোর্স’। এক প্রার্থীর প্রচার-সঙ্গীতে বলা হচ্ছে, ‘ম্যারেড খান বি হনিমুন যাব মন চাইলিতো মোই কি ভোট কোরিবি (বিবাহিত দম্পতিরা মধুচন্দ্রিমায় যেতে চাইলে আমায় ভোট দিন)।’
এমন রাজ্যের কোণায় কোণায় পৌঁছতে গেলে গানকেই যে বাহন করতে হবে সেটা বুথেছিলেন নাগাল্যান্ডের সিইও জে আলম। জনপ্রিয় গায়ক আলোবো নাগার সঙ্গে জোট বেঁধে ‘মাই ভোট মেক্স মাই ফিউচার’ মিউজিক ভিডিও ও ‘লেট্স রাইজ আপ’ থিম সং বানানো হয়েছে। সেখানে যোগ দিয়েছেন ডিজে ইনা, ‘টেটসেও সিস্টার্স’, রেনবেনি অডিও, আলো ওয়ান্থ, মোয়ানুংসাং-সহ প্রায় সত্তরজন নাগা গায়ক। ২০০৮ সালে নাগাল্যান্ডে ভোট পড়েছিল ৮৫ শতাংশ। এমটিভির ‘ইউরোপিয়ান মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’-এ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা আলোবোর কথায়, “এ বার অনুপাতটা আরও বাড়বে। যদি দেখি নতুন প্রজন্ম গলায় গান আর হাতে গিটার নিয়ে বুথের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছে তবে আরও খুশি হব।” |
|
|
|
|
|