|
|
|
|
স্ত্রীকে লেখা শেষ চিঠিতেও বিশ্বাসে অনড় আফজল গুরু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
নিজের মৃত্যু পরোয়ানা শোনার পর প্রথমে কাগজ-কলম চেয়েছিলেন আফজল গুরু। তা দিয়ে শেষ বারের মতো চিঠি লিখেছিলেন স্ত্রীকে। ফাঁসির দু’দিন পরে সেই চিঠি পাঠানো হয় আফজলের পরিবারকে। ফাঁসির আগে অবশ্য আফজলের স্ত্রী তবসুমকে কোনও খবরও জানানো হয়নি। এ বার আফজলের মৃতদেহ চেয়ে তবসুমের আবেদনও খারিজ করে দিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কারণ উপত্যকায় আফজলের মৃতদেহ পৌঁছলে তাকে ঘিরে নতুন করে অশান্তির আশঙ্কা করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
স্বামীর ফাঁসির পরোয়ানা আগেই হাতে পেয়েছিলেন তবসুম। কাশ্মীরের সোপোরে তাঁর হাতে যখন আফজলের লেখা শেষ চিঠিটি পৌঁছয়, তার তিন দিন আগেই ফাঁসি হয়ে গিয়েছিল সংসদে হামলার মূল অভিযুক্তের। তবে আফজলের শেষ চিঠির বয়ান বলছে, মৃত্যুর ঠিক আগেও একই রকম প্রত্যয়ী ছিলেন তিনি। পরিবারের প্রতি তাঁর বার্তা ছিল, “আমার শেষ পরিণতিতে দুঃখ না পেয়ে যে মর্যাদা আমি পেয়েছি, সেটাকে শ্রদ্ধা করো।”
ফাঁসির আগে আফজলের পরিবারকে কেন খবর দেওয়া হল না, তা নিয়ে তাঁর পরিবার তো বটেই, গোটা কাশ্মীর উপত্যকাতেই অসন্তোষ রয়েছে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তা বলে আফজলের পরিবারের হাতে তাঁর মৃতদেহ তুলে দেওয়া হবে, এমন কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, আফজলের স্ত্রী তবসুম মৃতদেহ চেয়ে যে আবেদন করেছেন, তা খারিজ করে দেওয়া হবে। বারামুলার ডেপুটি কমিশনারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তবসুম। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সেই চিঠি কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। তবে জেলের নিয়ম মেনে আফজলকে তিহাড় জেলের মধ্যেই কবর দেওয়া হয়। কাজেই সেখান থেকে মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনও কারণ নেই।
এ সবের পিছনে আসল কারণ কাশ্মীর উপত্যকায় অস্থিরতার আশঙ্কা। কাশ্মীরের প্রধান বিরোধী দল পিডিপি থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি আফজলের মৃতদেহ পাঠানোর দাবি তুলেছে। বিধানসভায় নির্দল বিধায়ক ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আফজলের মৃতদেহ ফেরানোর জন্য প্রস্তাব এনেছেন। এই প্রস্তাবকে সমর্থনের জন্য সব দলের কাছেই আবেদন জানিয়েছেন তিনি। আফজলের মৃতদেহ শায়িত রাখার জন্য কবরও খুঁড়ে রাখা হয়েছে। এই নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, আফজলের মৃতদেহ দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। কারণ তা হলে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মকবুল বাটের মৃতদেহ ফেরানোরও দাবি উঠবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা অবশ্য বলছেন, আফজলের পরিবারের লোকেরা চাইলে তিহাড়ে এসে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। |
|
|
|
|
|