সালটা ১৯৮২। আকাশবাণীর সর্বভারতীয় স্তরে অ্যানুয়াল অ্যাওয়ার্ড (নাট্যবিভাগ)-এ প্রথম স্থান দখল করে নিল নারায়ণ সান্ন্যালের গল্প অবলম্বনে নাটক তিমি তিমিঙ্গিল। পরে নাটকটি চোদ্দোটি ভাষায় অনূদিত হয়ে দিল্লি বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমে পরিবেশিত হয়। সংবাদপত্রগুলিতে নাটকটির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা হয়। বেতার জগৎ পত্রিকা নাটকটিকে ‘তিলোত্তমা’ নামে অভিহিত করেছিল। এই সাফল্যের ভিত যিনি রচনা করেছিলেন তিনি উত্তরবঙ্গের নাট্যজগতে সর্বজনপরিচিত নাট্যকার সমর চৌধুরী। সেই শুরু। তার পর জীবন যত এগিয়েছে, নাটক রচনার প্রক্রিয়া তত এগিয়ে চলেছে। সমরবাবুর মননে চেতনা ও সৃষ্টিশীলতার বীজ বুনে দিয়েছিলেন তাঁর বড়মামা পতিতপাবন বন্দ্যোপাধ্যায় (বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার)। মৌচাক, বসুমতী, রূপাঞ্জলিতে যখন সমরের একের পর এক ছোটগল্প প্রকাশিত হচ্ছে তখন তিনি কলেজের ছাত্র। নাটক সম্পর্কে কৌতূহল জাগিয়ে দিলেন পরিবারঘনিষ্ঠ আর এক বিশিষ্ট জন বাণীকুমার। আকাশবাণী কলকাতা ও শিলিগুড়ি থেকে প্রচারিত তাঁর নাটকের সংখ্যা প্রায় ৬০টি। মঞ্চাভিনয়ের জন্য নাটক লিখেছেন কুড়িটির মতো। চালচিত্র, অন্তর্ঘাত, দালিয়া সেগুলির মধ্যে অন্যতম। নেলসন ম্যান্ডেলার কলকাতা আগমন উপলক্ষে আকাশবাণী কলকাতা থেকে প্রচারিত হল সমরবাবুর রচিত ‘মুক্তিসূর্য ম্যান্ডেলা’। রমাপদ চৌধুরীর লেখা ‘স্বজন’-এর নাট্যরূপ দেন তিনি। অভিনয় করেছিলেন তৃপ্তি মিত্র, কাজল চৌধুরী, শৈলেন মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। কলকাতা দূরদর্শনের জন্য টেলি-প্লে লিখেছেন ‘বিপন্ন সুখ’, ‘তাসের ঘর’। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বন দফতর প্রযোজিত তথ্যচিত্রের জন্য রচনা করেছেন ‘নতুন পৃথিবী’ এবং ‘মাহুত বন্ধু রে’। চার অধ্যায় ও ঘরে বাইরে অবলম্বনে লিখলেন শ্রুতি নাটক। জগন্নাথ বসু ও ঊর্মিমালা বসু অভিনীত নাটক দুটি প্রকাশিত হয়েছে সিডি আকারে। তাঁর রচিত শ্রুতিনাটক বিবেকানন্দের জীবনালেখ্য ‘যুগনায়ক’ সম্প্রতি পরিবেশিত হয়ে চলেছে কলামন্দির, নজরুল মঞ্চ, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার, স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে গিরিশ মঞ্চ, খড়দা, বার্নপুরে। প্রচারবিমুখ এ হেন মানুষটিকে নিয়ে ধূপগুড়ি থেকে প্রকাশিত সাহিত্যপত্রিকা ‘চিকরাশি’ একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করতে চলেছে। |
মুক্তিযুদ্ধের স্মারকচিহ্ন |
১৯৭১-এর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের এক স্মারকচিহ্ন। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বার পেরিয়ে সোজা হাঁটলে ডান দিকে দেখা যায় সেই স্মারকচিহ্ন অর্থাৎ ট্যাঙ্কটি। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের পূর্বাঞ্চল বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল অফিসার অফ কম্যান্ডিং জগজিৎ সিংহ অরোরা। পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন জেনারেল এ কে নিয়াজি। যুদ্ধের সময় শিলিগুড়ির বিভিন্ন ভবন এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হয় সেনানিবাসে। ১৫ ডিসেম্বর প্রায় ৯৫ হাজার পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দি-সহ নিয়াজি ঢাকায় আত্মসমর্পণ করেন। যুদ্ধজয়ের স্মারক হিসেবে একটি ট্যাঙ্ক বিশ্ববিদ্যালয়কে উপহার দেন লেফটেন্যান্ট এম এল থাপন এবং ৩৩ কোর রেজিমেন্টের সৈন্যরা। |
লেখা পাঠান নাম ও সম্পূর্ণ ঠিকানা লিখে। |
|