বারাসত যে বারাসতেই আছে, মঙ্গলবার অটোরিকশায় এক যুবতীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় ফের তার প্রমাণ মিলল। নিজেকে বাঁচাতে ওই মহিলা ধস্তাধস্তি শুরু করায় তাঁকে অটো থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে পিষে দেওয়ারও চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। বারাসত-ব্যারাকপুর রোডে বরবরিয়ার কাছে ঘটনাটি ঘটে রাত সওয়া ৮টা নাগাদ। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।
দু’বছর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি, ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র রাতে দিদির সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে মদ্যপ দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয় বারাসতেরই কিশোর রাজীব দাস। এ বার ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র দু’দিন আগে একই ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি হল ওই জেলা শহরে।
এ দিন ঠিক কী ঘটেছিল?
হেলাবটতলার একটি চিকিৎসা কেন্দ্রের রিসেপসনিস্ট, বছর চব্বিশের ওই যুবতী পুলিশকে জানান, অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে অটোয় উঠেছিলেন তিনি। চালক জানিয়েছিল, অটো যাবে নীলগঞ্জের দিকে। তখন সেটিতে এক জন যাত্রী ছিল। জগন্নাথপুরের বাসিন্দা ওই মহিলা চালককে আর কোনও যাত্রী নিতে বারণ করেন। বাকিদের ভাড়া তিনিই দিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন।
যুবতীর অভিযোগ, অটো চলতে শুরু করার পরেই একটি মোটরবাইকে দু’জন যুবক তার পাশে চলে আসে। কিছু দূর এগোনোর পরেই চালক অটোর গতি কমিয়ে দেয়। তখনই পিছনের আসনে উঠে পড়ে মোটরবাইকের পিছনে থাকা এক যুবক। মাঝখানে ছিলেন ওই যুবতী। তাঁর দু’দিকে বসে থাকা সহযাত্রী অশালীন ব্যবহার শুরু করে। তাঁকে জড়িয়ে ধরে তারা। ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। ছিঁড়ে দেওয়া হয় তাঁর জামাকাপড়। প্রতিবাদ করলে দুষ্কৃতীরা তাঁকে শাসায়। চিৎকার শুরু করেন তিনি। চালক অটোর গানের আওয়াজ বাড়িয়ে দেয়। ধস্তাধস্তি শুরু করেন ওই মহিলা। বরবরিয়ার কাছে মাঝরাস্তায় তাঁকে ঠেলে ফেলে দেয় দুষ্কৃতীরা।
ওই যুবতীর অভিযোগ, রাস্তায় পড়ে যাওয়ার পরে চালক অটো ঘুরিয়ে তাঁকে পিষে দেওয়ার জন্য জোরে ধেয়ে আসছিল। ঘটনাস্থলের লাগোয়া একটি সংবাদমাধ্যম সংস্থার অফিসের নিরাপত্তাকর্মী ছুটে আসেন। আশপাশের লোকজনও জড়ো হয়ে যান। বেগতিক দেখে অটো নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবতী। পুলিশ জানিয়েছে, রাতেই তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে।
|