আজ মুর্শিদাবাদ বন্ধ।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করার প্রতিবাদে বুধবার জেলা কংগ্রেসের ডাকা ওই বন্ধ অবশ্য বিরোধীতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাসক দল তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি মহম্মদ আলি বলেন, “বন্ধ সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত করে। আমরা তাই বন্ধ-অবরোধের বিরোধী।”
পাল্টা, তোপ দেগে জেলা কংগ্রেস নেতারা আগাম জানিয়ে দিয়েছেন বন্ধ সর্বাত্মক হবেই, কেউ জোর করে দোকান-বাজার খুলতে গেলে প্রতিরোধ হবে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যও এ দিন নলহাটিতে বলেন, “অধীরকে গ্রেফতারের চেষ্টা হলে বাংলা জুড়ে অশান্তি ছড়াবে।” গন্ডগোলের এই চাপা আতঙ্কের আবহে মঙ্গলবার বহরমপুর শহরে কয়েকশো বাইক নিয়ে মিছিল করে কংগ্রেস তার মনোভাব বুঝিয়ে দিয়েছে। বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুতুলও পোড়ায় তারা। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, “অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে র্যাফ ও কমব্যাট প্রস্তুত রয়েছে।” |
‘পুলিশের অত্যাচারে’ কংগ্রেস কর্মী শফিকুল শেখ জেল হেফাজতে মারা গিয়েছেন। এই দাবিতে ৭ ফেব্রুয়ারি বিধানসভার পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাবের নেতৃত্বে ৮ জন বিধায়ক-সহ ১৩ জনের প্রতিনিধি দল জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিতে গেলে তা নিতে অস্বীকার করেন জেলাশাসক। গন্ডগোলের সূত্রপাত সেখান থেকেই। বহরমপুর সার্কিট হাউসে এরপরেই ভাঙচুর চালায় কংগ্রেস। অভিযোগ, সরকারি সম্পত্তি ভাঙার সেই ‘অভিযানে’ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর।
তারই জেরে অধীর-সহ দলের ১৪ জন শীর্ষস্থানীয় নেতা ও ১২০০ কংগ্রেস কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে বহরমপুর থানার পুলিশ। পুলিশ জানায়, সেই তালিকায় প্রাথমিক ভাবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির নাম থাকলেও পরে ভিডিও ক্লিপিংস দেখে পুলিশ তাঁর নাম বাদ দেয়। তবে তালিকায় শীর্ষে অধীর চৌধুরীর নাম অপরিবর্তিতই থেকে গিয়েছে। রয়েছে, বিধায়ক ও প্রাক্তন মন্ত্রী মনোজ চক্রবর্তী, বহরমপুরের তিন কাউন্সিলর, বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও কর্মাধ্যক্ষ, বহরমপুর শহর কংগ্রেস সভাপতি-সহ ১৪ জন শীর্ষস্থানীয় নেতার নামও। তারই প্রতিবাদে ১২ ঘন্টার মুর্শিদাবাদ জেলা বন্ধে র ডাক দিয়েছে জেলা কংগ্রেস।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “৭ ফেব্রুয়ারি জেলাশাসক স্মারকলিপি নিতে অস্বীকার করে জনপ্রতিনিধিদের অপমানিত করেছেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আমিই তা সামাল দিই। পুলিশ অবশ্য মনে করছে আমরাই হামলায় প্ররোচনা দিয়েছি। এই সরকারের কাছে এর চেয়ে আর কীই বা বেশি আশা করতে পারি!” তিনি জানান, তৃণমূল নেত্রীকে ‘খুশি’ করতেই অধীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। |