শিকেয় আদিবাসীদের শিক্ষা বরাদ্দ বন্ধ, ছাত্রাবাসে তালা
রকারি বরাদ্দ বন্ধ। তাই ছাত্রাবাসের হেঁসেলে উঠে গিয়েছে রান্নার পাট। তালা পড়েছে অযোধ্যাপাহাড় আশ্রমধর্মী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের দরজায়। পাহাড়ের একমাত্র আবাসিক বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে মাস খানেকের বেশি সময় ধরে রান্না বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে এলাকার আদিবাসী পড়ুয়াদের পঠন পাঠনে। স্কুলের শিক্ষকরাও স্বীকার করেছেন, ছাত্রাবাসে রান্না বন্ধের জেরে স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি কমেছে। সমস্যা মেটাতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
অযোধ্যা পাহাড়ের মাথায় অবস্থিত এই স্কুলে পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রাম ও টোলার প্রায় ১৮০ জন পড়ুয়া পড়াশোনা করে। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এখানে পড়ানো হয়। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই গ্রামগুলির সঙ্গে হিলটপের যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত নেই। তাই ধানচাটানি, লুকুইচাটানি, ভুদা, পাটটাঁড়, হিঙ্গুটাঁড়, পুনিয়াশাসন, উসুলডুংরি, রাঙা, তেলিয়াভাসা, ভুঁইঘরার মতো গ্রামের ছাত্রেরা এই স্কুলে থেকেই পড়াশোনা করে। রান্না বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কমবেশি ৮-১০ কিলোমিটার দূর থেকে পড়ুয়াদের প্রতিদিন চড়াই-উতরাইয়ের পাহাড়ি পথ বেয়ে স্কুলে যাতায়াত কষ্টকর হয়ে উঠেছে। তাই স্কুলে তাদের হাজিরাও কমেছে।
বন্ধ ছাত্রাবাসের ছবিটি তুলেছেন সুজিত মাহাতো।
স্কুলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ছাত্রাবাস বন্ধ। ক্লাসগুলিতেও ছাত্রদের সংখ্যা নগন্য। সাইকেলে চড়ে বাড়ি ফিরছিল দুই পড়ুয়া দশম শ্রেণির জয়দেব মুর্মু ও উপেন টুডু। ওদের বাড়ি ধানচাটানি ও লুকুইচাটানি গ্রামে। তাঁরা বলে, “ছাত্রাবাসে রান্না বন্ধ অনেকদিন। তাই বাড়ি থেকে সাইকেলে ১২-১৩ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে স্কুলে আসতে খুব কষ্ট হয়।” স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আদিত্যপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “টাকার অভাবেই জানুয়ারি মাস থেকে ছাত্রাবাসে রান্না বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ, আগে স্কুলের নামে ছাত্রাবাস চালানোর টাকা আসত। কিন্তু কয়েক মাস আগে সরকারি নিয়ম পাল্টে নির্দেশ দেওয়া হয়, ছাত্রদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ছাত্রবাসের টাকা দেওয়া হবে। সেই টাকা এখনও দেওয়া চালু হয়নি।” তিনি জানান, পুজোর আগে থেকে স্কুলের নামে টাকা দেওয়াও বন্ধ হওয়ায় ছাত্রাবাস চালাতে গিয়ে প্রচুর টাকা মুদির দোকানে তাঁদের দেনা হয়ে গিয়েছে। তাই ছাত্রাবাস বন্ধ রাখতে তাঁরা বাধ্য হয়েছেন। সমস্যার কথা তাঁরা প্রশাসনকেও জানিয়েছেন।
পদাধিকার বলে ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) এবং সভাপতি মহকুমাশাসক (পশ্চিম)। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক রাধারানি মুখোপাধ্যায় বলেন, “এ ভাবে ছাত্রাবাসের রান্না বন্ধ রাখা যাবে না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি টেন্ডার করে ছাত্রাবাস চালানোর জন্য জিনিসপত্র সরবরাহ করা হবে। সেই অনুযায়ী টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।” মহকুমাশাসক (পশ্চিম) নিমাইচাঁদ হালদার বলেন, “আশা করছি চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকেই ছাত্রাবাসে রান্না চালু করা যাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.