আবেদনের পরে এ বার কড়া বার্তা! দলের কাজে দিনের পর দিন নিষ্ক্রিয়তা দেখা দিলে কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে হুঁশিয়ারি দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমে সম্প্রতি এই দাওয়াই চালু করেছেন গৌতম দেব। কলকাতার লাগোয়া ওই জেলায় সিপিএমের কর্মসূচিতে এখন অনেক বেশি কর্মী-সমর্থককে ময়দানে দেখাও যাচ্ছে। বিমানবাবুও এ বার সেই পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিলেন।
আলিমুদ্দিনে বৃহস্পতি ও শুক্রবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক তৎপরতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দলের কর্মসূচিতে আগের চেয়ে বেশি মানুষের সাড়া যে মিলছে, অধিকাংশ জেলাই তেমন রিপোর্ট দিয়েছে। কৃষক সভার সম্মেলনগুলিকে কেন্দ্র করেও একই প্রবণতা দেখা গিয়েছে বলে রাজ্য কমিটির সদস্যেরা বৈঠকে জানিয়েছেন। জবাবি ভাষণে এ দিন বিমানবাবু বলেছেন, সাংগঠনিক স্তরে ‘জড়তা’ অনেকটাই কেটেছে। তবে ত্রুটি এখনও দূর হয়নি। সিপিএম সূত্রের খবর, নিষ্ক্রিয়তা দেখা গেলে সংগঠনের সব স্তরেই এ বার ‘কড়া ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে বলে রাজ্য সম্পাদক হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। যে কমিটি বা সংগঠনের যে স্তরেই থাকুন, দায়িত্ব পালনে অনীহা দেখা গেলে সেই কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
এ বারের রাজ্য কমিটির বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন বেশ কিছু নেতা। তাঁদের গরহাজিরার জন্য ‘ছুটি’ মঞ্জুর করার কথা বৈঠকে জানান বিমানবাবু। যেমন, নিরুপম সেন ও শ্রীদীপ ভট্টাচার্য পার্টি ক্লাসের জন্য ভোপাল গিয়েছিলেন। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর আর এক সদস্য রবীন দেব ভিয়েতনামে। রেজ্জাক মোল্লা ও সান্দোপাল লেপচা অসুস্থ। অসুস্থতার জন্যই প্রথম দিনের প্রথমার্ধে থাকতে পারেননি গৌতমবাবু। কিন্তু তালিকায় বাদ পড়ে গিয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার শমীক লাহিড়ীর নাম! আলিমুদ্দিনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে শমীক রাজ্য কমিটির বৈঠক এড়িয়ে চলছেন কি না, এই নিয়ে জল্পনাও আছে দলে। তবে সিপিএমেরই একটি সূত্রের বক্তব্য, এই ক্ষেত্রে সম্ভবত কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকবে। কারণ, দাদার অসুস্থতার জন্য শমীক গিয়েছিলেন মুম্বইয়ে। কলকাতায় এ দিনই রাতে ফিরে তাঁর বক্তব্য, দলকে জানিয়েই তিনি মুম্বই গিয়েছিলেন। সামনে ধর্মঘট উপলক্ষে সিটু নেতা হিসাবে তাঁর কিছু কাজ আছে। এর মধ্যেই অসুস্থ দাদার কাছে যেতে হয়।
শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের অশালীন মন্তব্যের পাল্টা হিসাবে তাঁদের তরফে কেউ যেন ভাষার সংযম না হারান বা হিংসার প্ররোচনায় পা না দেন, সেই কথাও রাজ্য কমিটিতে ফের স্মরণ করিয়ে দেন বিমানবাবু। আগে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনার পরে রাজ্য কমিটিতেও বিধায়ক আনিসুর রহমান দুঃখপ্রকাশ করেছেন তাঁর অশালীন মন্তব্যের জন্য। প্রসঙ্গত, রাজ্য কমিটির শেষ দিনে দীর্ঘ দিন পরে সভাপতিত্ব করেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। |