|
|
|
|
হাইকোর্টে অভিযোগ স্ত্রীর |
বেনাচাপড়া-কাণ্ডে অভিযুক্ত সিপিএম
নেতার মৃত্যুতে চিকিৎসা-রিপোর্ট তলব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
জেলবন্দি থাকাকালীন বেনাচাপড়া কঙ্কাল-কাণ্ডে অভিযুক্ত সিপিএম নেতা কিরীটী রায়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট।
গত ৪ ডিসেম্বর কেশপুরের ওই নেতার মৃত্যু হয়। কিরীটীবাবুর স্ত্রী যমুনাদেবীর অভিযোগ ছিল, বন্দি থাকাকালীন জেলের হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতির জন্যই মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্বামীর। সুবিচার পেতে প্রথমে জেল কর্তৃপক্ষ, তার পর রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানিয়ে সুরাহা হয়নি। শেষে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
যমুনাদেবীর অভিযোগের প্রেক্ষিতেই শুক্রবার রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিয়ে জেলে থাকাকালীন কিরীটীবাবুর অসুস্থতা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। জেলে থাকাকালীনই জানা গিয়েছিল, পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক কিরীটীবাবুর মস্তিষ্কের টিউমারটি ‘ম্যালিগন্যান্ট’। সে কথা বুঝেই তাঁর জামিনের আবেদনে জোরালো আপত্তি করেনি রাজ্য সরকার। জামিনে মুক্তি পেয়ে বেশি দিন বাঁচেননি। এ দিনও যমুনাদেবী বলেন, “ঠিক ভাবে চিকিৎসা হলে স্বামীর মৃত্যু হত না।”
|
কিরীটী রায়।—ফাইল চিত্র |
২০১১ সালের ১৬ অগস্ট বেনাচাপড়া কঙ্কাল মামলায় প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক কিরীটীবাবুকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তিনি সিপিএমের কেশপুর জোনাল কমিটির সদস্য ছিলেন। এই মামলাতেই অভিযুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রী তথা গড়বেতায় বর্তমান বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। যমুনাদেবীর অভিযোগ, কিরীটীবাবু গ্রেফতার হওয়ার সময়েই পুলিশ ও আদালতকে জানিয়েছিলেন তাঁর অসুস্থতার কথা। আলিপুর জেলে বন্দি থাকাকালীন ওই সিপিএম নেতার মাথার যন্ত্রণা অসহনীয় হয়ে ওঠে। যমুনাদেবীর মতে, জেল হাসপাতাল এবং এসএসকেএমে দু’-এক বার স্বামীর চিকিৎসা হলেও তা ছিল দায়সারা। চিকিৎসায় গাফিলতিতে স্বামীর মৃত্যুর অভিযোগ এনে সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন যমুনাদেবী।
রাজ্য সরকার অবশ্য নিজেদের অবস্থানে অনড়। সরকারি আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন আদালতে পাল্টা বলেন, “এই মামলা খারিজ করে দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে সরকারের বিরুদ্ধে অকারণে মামলা করার জন্য আবেদনকারীকে জরিমানা করা হোক।”
তাঁর যুক্তি, কিরীটীবাবুর মৃত্যু হয়েছে জামিনে মুক্ত থাকাকালীন। তা-ও সরকারের কাছে যমুনাদেবী ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়েছেন। এটা ঠিক নয়। সরকারি আইনজীবীর আরও দাবি, জেলবন্দি থাকাকালীন কিরীটী রায়ের যথাযথ চিকিৎসাই হয়েছে।
যমুনাদেবীর আইনজীবী অসীমেশ গোস্বামীর অবশ্য যুক্তি, রাজ্য সরকার বিষমদে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। অথচ ক্যানসারে আক্রান্ত জেলবন্দি রোগীর চিকিৎসায় গাফিলতিতে মৃত্যুর পরেও তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে অস্বীকার করছে।
তিনি জানান, কর্মরত অবস্থায় মৃত শিক্ষকের যা প্রাপ্য, তা দেওয়া হয়নি কিরীটীবাবুর পরিবারকে। সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের আর্জি জানিয়েও জবাব পাননি যমুনাদেবী। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে কিরীটীবাবু জেলে থাকাকালীন চিকিৎসার সব রিপোর্ট চেয়ে পাঠান বিচারপতি। |
|
|
|
|
|