উত্তর কলকাতা
ব্যারাকপুর-বারাসত রোড
বাজারের গ্রাসে
রাস্তায় গড়াগড়ি খাচ্ছে কুমড়ো। পাশেই ঝাঁকায় ফুলকপি, টম্যাটো, বাঁধাকপি। সার গিয়ে দাঁড়িয়ে দর করছেন ক্রেতারা। ফুটপাথ বলে কিছু নেই। পাশেই বাস, গাড়ি, সাইকেলের লম্বা লাইন। সবাই কোনওক্রমে এগনোর চেষ্টা করছে। অভিযোগ, প্রতি দিন সাতসকালে ব্যারাকপুর-বারাসত রোডের এই অবস্থা হয়। হয়রান হন এ পথের নিত্যযাত্রীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীরা জানান, প্রতি দিন ব্যারাকপুর-বারাসত রোডে মসজিদ মোড় থেকে ওয়্যারলেস গেট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার অংশে বাজার বসে যায়। চলে দুপুর পর্যন্ত।
বারাসত থেকে ব্যারাকপুর স্টেশন, বিটি রোড, ঘোষপাড়া রোড যাওয়ার বিকল্প রাস্তা না থাকায় অনেকেই রাস্তাটি ব্যবহার করেন। ফলে এক লেনের এই রাস্তায় গাড়ির চাপ এমনিতেই বেশি। বাজার বসায় রাস্তাটি আরও সঙ্কীর্ণ হয়ে যায়। বাজারের অংশটুকু পেরোতেই মিনিট কুড়ি লেগে যায়। সকালে স্কুলের গাড়ি, বাস ও অটো যাত্রী তোলার জন্য দাঁড়ায়। ফলে জট আরও বাড়ে। পুলিশকর্তারা জানান, এক লেনের এই রাস্তার দুই প্রান্তে সিভিক-পুলিশ থাকে। কিন্তু এক লেন রাস্তার মাঝে পুলিশ দেওয়া সম্ভব নয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই বাজারে মূলত সব্জি বিক্রি হয়। চাষিরা সরাসরি মাঠ থেকে ফসল এনে বিক্রি করেন। কাছেই নোনা-চন্দনপুকুর বাজার থাকলেও দাম কম এবং টাটকা সব্জি পাওয়ায় অনেকেই এই বাজারে যান। যদিও এই বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এই বাজারের কোনও প্রশাসনিক স্বীকৃতি নেই। বিক্রেতার সংখ্যা তিনশোর বেশি। এই বাজারের এক বিক্রেতা অসীম দাস বলেন, ‘‘মাঠের ফসল এনে বেচি। ক্রেতারা টাটকা জিনিস পেয়ে খুশি হন। ফড়ে না থাকায় আমরাও ন্যায্য দাম পাই।’’
কিন্তু এখানে বাজার বসে কেন?
বছর দু’য়েক আগে ব্যারাকপুরের নোনা-চন্দনপুকুর বাজার ভাঙা হয়। তখন কিছু ব্যবসায়ী এখানে রাস্তার ধারে পসরা নিয়ে বসতে শুরু করেন। তাঁদের দেখাদেখি স্থানীয় চাষিরাও সব্জি নিয়ে বসতে শুরু করেন। নোনা-চন্দনপুকুর বাজারটির উদ্বোধন হলেও এখনও চালু হয়নি। এখন বাজারের পাশে একটি অস্থায়ী বাজারে ব্যবসায়ীদের একাংশ বসেন।

ব্যারাকপুরের পুরকর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পুরনো বাজারের নথিভুক্ত ব্যবসায়ীরাই নতুন বাজারে জায়গা পাবেন। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, নতুন বাজার ঠিকমতো চালু হলে কি রাস্তার ধারের বাজারটি উঠে যাবে?
ব্যারাকপুরের পুরপ্রধান উত্তম দাস বলেন, ‘‘নোনা-চন্দনপুকুর বাজারের ব্যবসায়ীদের জন্য অস্থায়ী বাজার করে দেওয়া হয়েছিল। পুরনো বাজারের নথিভুক্ত ব্যবসায়ীরাই নতুন বাজারে জায়গা পাবেন। কিন্তু নতুন করে যাঁরা রাস্তায় বসেছেন তাঁদের দায়িত্ব পুরসভা কী করে নেবে? অবশ্য আমরা কারও রুটি-রুজি বন্ধ করতে চাই না। তবে ওই রাস্তায় যান চলাচল বেড়েছে। দ্রুত রাস্তাটির সম্প্রসারণ হবে। তখন ওঁদের সরে যেতে হবে।’’

—নিজস্ব চিত্র




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.