|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড |
দশা বদলায় না |
কাজল গুপ্ত |
বদলেছে সরকার। কিন্তু বদলায়নি প্রতিশ্রুতি। আর বদলায়নি সেই প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থতার ছবিটাও। বিধাননগরের করুণাময়ীর মোড়ের কাছে সরকারি বাসস্ট্যান্ডের বেহাল দশা তারই একটি উদাহরণ মাত্র।
বাম আমলে এই সরকারি স্ট্যান্ডের আমূল সংস্কারের কথা ঘোষণা করেছিল তৎকালীন পরিবহণ দফতর। মাঝে কেটে গিয়েছে দু’বছর। বাসস্ট্যান্ডের দশা আরও বেহাল হয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, এটি নামেই বাসস্ট্যান্ড। পরিকাঠামোর ছিটেফোঁটাও নেই। রাতে স্ট্যান্ডে ঢুকতে ভয় লাগে। যাত্রীদের এই সব অভিযোগ সমর্থন করে গাড়িচালকদের বক্তব্য, বাসস্ট্যান্ডে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা নেই। যদিও পরিবহণ দফতর আরও এক বার অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
|
|
সরকারি কয়েকটি রুটের বাস এবং বেসরকারি কিছু বাস এই স্ট্যান্ডে দাঁড়ায়। কিন্তু বর্তমানে বেসরকারি বাসচালক ও খালাসিরা ওই স্ট্যান্ডে রাতে গাড়ি রাখতে চাইছেন না। এক বাসচালকের কথায়: “সকালে উঠে গাড়ি ধোওয়ার জল যোগাড় করতে হিমসিম খেতে হয়। বাথরুম নেই। রাতে স্ট্যান্ডে আলোর কোনও ব্যবস্থা নেই, যাত্রীরা সাতটার পরে স্ট্যান্ডে দাঁড়াতে চান না।”
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, সল্টলেকে যাত্রীর সংখ্যা বিবেচনা করে আগের থেকে সরকারি-বেসরকারি রুটে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এত সংখ্যক বাসের পার্কিংয়ের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই রুটগুলির মধ্যে অনেক রুটের বাস পাঁচ নম্বর সেক্টরে দাঁড়ায়। কিন্তু সেখানেও সুষ্ঠু পার্কিং ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। অথচ মূল সল্টলেকের মধ্যে করুণাময়ীর মোড় ও ১২ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড বলতে করুণাময়ী মোড়ের কাছের স্ট্যান্ডটি। সেখানেই স্বল্প ও দূরপাল্লার বাসগুলি দাড়ায়। সে রুটের কর্মচারীদের অভিযোগ, বাসগুলি সাফাই করার জলের অভাব। বাথরুম নেই, ফলে কর্মীদের সমস্যাও বেড়েছে।
|
|
চালক থেকে যাত্রীদের অভিযোগের সারবত্তা ওই স্ট্যান্ডে কিছু ক্ষণ দাঁড়ালেই বোঝা যায়। স্ট্যান্ডের এক দিক গণপ্রস্রাবাগারে পরিণত হয়েছে। জঞ্জাল ফেলার আলাদা কোনও জায়গাই নেই। স্ট্যান্ডের মধ্যে একাধিক দোকানের খাবার থেকে আবর্জনা স্তূপ হয়ে রয়েছে। স্ট্যান্ডের নিকাশি ব্যবস্থার বেহাল দশা। উপরন্তু স্ট্যান্ডের একাংশের রাস্তা ভেঙে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।
গড়িয়ার বাসিন্দা শর্মিলা চক্রবর্তী বলেন, “রাত ৮টার পরে স্ট্যান্ডে দাঁড়াতেই ভয় লাগে। কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। নেহাত রাস্তার আলো এখানে পৌঁছয়।”
বাম আমলেই পরিবহণ দফতর জানিয়েছিল, ওই স্ট্যান্ডটির সংস্কার করা হবে। উন্নতমানের আরও একটি বাসস্ট্যান্ড তৈরির প্রকল্পও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তা আজও হয়নি। বাসিন্দাদের সংগঠন বিধাননগর (সল্টলেক) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “ওই স্ট্যান্ডে গাড়ি রাখার যেমন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই, তেমনই যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি নিয়েও কোনও কাজ হয়নি। অবিলম্বে স্ট্যান্ডের সংস্কার হোক।” |
|
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, মেট্রো প্রকল্পের কাজের জেরে ওই বাসস্ট্যান্ডের একাংশ ভাঙা হয়। মেট্রো প্রকল্পের ওই অংশের কাজ শেষ হলে পরবর্তী পরিকল্পনা কার্যকর করা হবে। অভিযোগ সম্পর্কে পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি আলোচনার স্তরে রয়েছে। ওই স্ট্যান্ডটি নিয়ে পরিকল্পনা করা হবে।”
|
ছবি: শৌভিক দে |
|
|
|
|
|