ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে বিপর্যয়ের পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শেষ ওয়ান ডে আর শেষে ইংল্যান্ডেরই বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে ভারতকে ফিরে আসতে দেখে ভাল লাগল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ হেরেছে ভারত। কিন্তু এটাও সত্যি যে, ভারতীয় টিমে অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটারই ছিল না। বিশেষ করে পেস বোলিং বিভাগে। তবু ০-১ পিছিয়ে পড়েও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ জিতে নিল ভারত।
আমার কাছে এই আটটা ম্যাচ থেকে প্রাপ্তি দু’জন। ভুবনেশ্বর কুমার আর সামি আহমেদ। ওরা আমাকে মুগ্ধ করেছে টেম্পারামেন্ট আর অতি সহজে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতার জন্য। ভুবনেশ্বরের দু’দিকে বল সুইং করানোর ক্ষমতা ঈশ্বরদত্ত। ডান-হাতি ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে বল ভিতরে আনতে পারে। বলের সঙ্গে বুদ্ধিটা মিশিয়ে ব্যাটসম্যানকে বাধ্য করে ভুল করতে। ওয়ান ডে নিয়মকানুন এখন পাল্টে গিয়েছে। দু’টো নতুন বল ব্যবহার হয়। সে দিক থেকে দেখলে ভুবনেশ্বর ভয়ঙ্কর। প্রায় সব ম্যাচেই ও শুরুতে উইকেট তুলে নিয়েছে। আর এমএস ওকে ব্যবহারও করেছে খুব ধুরন্ধর ভাবে। নতুন বলে ওকে বড় স্পেল করিয়ে পুরো ফায়দা পেয়েছে।
সামির বলের গতি ভুবনেশ্বরের চেয়ে বেশি। ঠিকঠাক পেসে সুইংও করাতে পারে। আনকোরা প্রতিভা বলতে যা বোঝায়, সামি একদম তাই। যত সুযোগ পাবে, ততই নিজেকে ঘষেমেজে নিতে পারবে। উন্নতিও হবে তত। তবে যা দেখলাম, ওকে নিয়ে আশা রাখাই যায়। ইশান্তকেও পরিশ্রম করতে দেখে ভাল লাগল। তা ছাড়া বলটাও জোরে করছে। জাহির, উমেশ আর ইরফান ফিরলে পেসারদের ‘পুল’ কিন্তু বিশাল হবে। যেখান থেকে দরকারে পেসার বাছা যাবে অনায়াসে। ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে এটা ভাল খবর।
এমএসের কথা ভেবে আমার বিশেষ করে ভাল লাগছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ হেরে প্রবল চাপের মধ্যে ছিল। কিন্তু সে সব সামলে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে। নেতৃত্ব সামলেছে দারুণ। কঠিন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অসাধারণ ব্যাট করেছে। চেন্নাইয়ের সেঞ্চুরিটা ওর সর্বকালের সেরা ওয়ান ডে ইনিংসের মধ্যে থাকবে। যে ভাবে একটা তরুণ টিমকে ও সামলাল, বিশেষ করে সিরিজে পিছিয়ে যাওয়ার পর, তা সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো।
রায়নাকেও রানে ফিরতে দেখে ভাল লাগল। ইংল্যান্ড সিরিজে প্রায় প্রত্যেকটা ম্যাচে ওকে ইনিংস তৈরি তো বটেই, একই সঙ্গে ফিনিশও করতে হল। সিরিজ শেষ করল পরপর চারটে হাফসেঞ্চুরি দিয়ে। রায়না, রোহিত, কোহলি, জাডেজারা থাকায় ভারতীয় ফিল্ডিং যে উচ্চতায় পৌঁছেছে সেটা চললে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এ ভাবেই দাপট চলবে ভারতের।
জাডেজার আবির্ভাবে অলরাউন্ডার নিয়ে চিন্তা কিছুটা কমবে এমএসের। ওয়ান ডে-র নতুন নিয়মে স্পিনারদের কাজটা বেশ কঠিন। কিন্তু বোলিংয়ের পাশাপাশি জাডেজার ব্যাটিংয়েও চিন্তাভাবনার ছাপ দেখলাম। ভারতের পরবর্তী ওয়ান ডে টুর্নামেন্ট ইংল্যান্ডে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। সেখানে এমএসের হাতে জাডেজা ছাড়াও অশ্বিন-ইরফানের মতো অলরাউন্ডার থাকবে। যারা শুধু বোলিংয়েই না, ব্যাটিংয়েও গভীরতা বাড়াবে। |