ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে সবুজ-মেরুন সাজঘরে প্রবল ভাবেই যেন ঢুকে পড়ল ডার্বির ভাবনা! শুক্রবার করিম বেঞ্চারিফার কোচিংয়ে আই লিগের প্রথম ম্যাচ জেতার পর ওকোলি ওডাফা পরিষ্কার বলেই দিলেন, “আমার গোল পাওয়াটা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিল। এ বার ডার্বিতেও গোল করে দলকে তিন পয়েন্ট এনে দিতে চাই।” মোহনবাগান ড্রেসিংরুমে ঢুকে মনে হল, ওডাফার রেকর্ডটাই বাজছে সবার মুখে।
৯ ডিসেম্বর যুবভারতীতে কলঙ্কিত ডার্বির ধাক্কায় মোহনবাগানের সঙ্গে ওডাফার ফুটবল জীবনও হঠাৎই এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। ৫৪ দিন পর ফের শুক্রবার আই লিগের ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন। আর তিনি মাঠে নামতেই বদলে গেল বাগানের রঙ। আলো ফিরল সবুজ-মেরুনে। ম্যাচের পর ঘিরে ধরা সমর্থকদের মতো বহু দিন বাদে প্রাণ খুলে হাসতে দেখা গেল মোহন স্ট্রাইকারকেও। মাঠ থেকে সাজঘরে যাওয়ার পথে উচ্ছ্বসিত ওডাফা বলছিলেন, “বলেছিলাম, যাদের দোষ নেই, ঈশ্বর তাদের সঙ্গে থাকেন। আমার জীবনের সব সমস্যারই সমাধান করে দিয়েছেন ঈশ্বর। আজকের গোলটা ওঁকেই উৎসর্গ করলাম।”
যে ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের জন্য শাস্তি পেতে হয়েছিল, সেই দলের বিরুদ্ধে ফিরতি পর্বে তিন পয়েন্ট পেতে মরিয়া হয়ে রয়েছেন বাগান অধিনায়ক। সতীর্থ টোলগে ওজবের মতোই। যদিও অবনমনের আওতায় থাকা মোহনবাগানের কাছে এখন সব ম্যাচই ডার্বি। তবু ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে জয়ের তাগিদটা যেন ওডাফাকে তাড়া করে ফিরছে। কথা বলার সময় সেরকমই মনে হচ্ছিল। বলছিলেন, “ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের আগে এই জয় আমাদের বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে।” ওডাফার সঙ্গী টোলগেরও একই মত। বললেন, “অবশ্যই এ দিনের তিন পয়েন্টটা ডার্বির আগে আমাদের মানসিক ভাবে অনেকটাই এগিয়ে দিল।”
৯ ফেব্রুয়ারি ট্রেভর মর্গ্যান বিপক্ষ দলের যে দু’জন ফুটবলারের মধ্যে বোঝাপড়া ঘেঁটে দিয়ে বাজিমাত করার ছক কষছেন, সেই ওডাফা-টোলগে কিন্তু একে অপরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। অপ্রত্যাশিত ভাবে উদারও। টোলগে যেমন বললেন, “ওডাফা ভারতের সেরা স্ট্রাইকার। ওর পাশে খেলতে পেরে আমি খুশি। খেলাটা উপভোগ করছি।” তেমনই ওডাফাও বলে দিলেন, “টোলগের মতো স্ট্রাইকারকে পাশে পাওয়ায় আমার কাজটা আরও সহজ হয়ে গিয়েছে।”
নির্বাসন ওঠার পর মোহনবাগানের প্রাক্তন কোচ সন্তোষ কাশ্যপের দলের বিরুদ্ধেই প্রথম বার ওডাফা-টোলগে যুগলবন্দিতে আলো জ্বলল বাগানে। নবিরাও ম্যাচের পর কিছুটা চ্যালেঞ্জের ভঙ্গিতেই বললেন, “৯ ফেব্রুয়ারি আমাদের আটকানো সহজ হবে না। এ বার ওডাফা-টোলগে রয়েছে!” |