রাত বাড়লেই এলাকায় ঢুকে পড়ছে কালো পোশাক পরা জনা আটেক যুবক। চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই বা ইভটিজিংয়ের মতো কোনও ঘটনা নয়, তারা চেষ্টা করছে দরজা বা বাড়ির টালি ভেঙে ভিতরে ঢোকার। কাউকে একা দেখলে ভয় দেখাচ্ছে। পর পর বেশ কিছু দিন এমন ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে বিধাননগর ও নিউ টাউনের সীমানায় নজরুলপল্লি এলাকায়, অভিযোগ এমনই।
বেশ কিছু দিন ধরে লাগাতার এমন অভিজ্ঞতার সাক্ষী হচ্ছেন বিধাননগর পুর-এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, গত ১০-১২ দিন ধরে একটি মোটরসাইকেল ও ট্যাক্সিতে রাজারহাট-নিউ টাউন বক্সব্রিজ লাগোয়া নজরুলপল্লিতে ঢুকে পড়ছে কখনও চার জন, কখনও বা আট জনের দল। প্রত্যেকেরই পোশাক কালো। হাতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রও। তারা চেষ্টাও করছে বাড়ির দরজা বা টালি ভেঙে ভিতরে ঢোকার।
বাসিন্দাদের দাবি, এই দলটি কখনও সন্ধ্যায়, কখনও বা রাত ১২টার পরে এলাকায় ঢুকছে। স্থানীয় বাসিন্দা অপু মণ্ডল বলেন, “দলটি রাতে বাড়ির দরজায় এসে ধাক্কা দেয়। কয়েক জনের বাড়ির টালিও ভেঙে দিয়েছে। সন্ধ্যার পরে ভয়ে ঘরের মেয়েদের বাইরে পাঠাতে পারছি না।”
বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, নিউ টাউন ব্রিজের তলায় জড়ো হয় ওই যুবকেরা। সেখানে আলোর কোনও ব্যবস্থা নেই। এলাকার এক বাসিন্দা নিতাই রায় বলেন, “রাতে কালো পোশাক পরে ঢুকছে বলে শুধু ওদের চোখ দেখা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই যুবকেরা স্থানীয় একটি বাড়ির দরজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করলে আমরা দলটিকে তাড়া করেছিলাম। তখন তারা নিউ টাউনের দিকে পালিয়ে যায়।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, পালানোর আগে ওই যুবকেরা হুমকি দেয়, পুলিশকে বলে কোনও লাভ হবে না। ফের তারা এলাকায় ঢুকবেই।
শুক্রবার সকালে স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চামেলি নস্করের কাছে বাসিন্দারা অভিযোগ জানান। চামেলিদেবী বলেন, “বাসিন্দাদের অভিযোগ সত্যি। পুলিশকর্তাদের জানিয়েছি। এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে, বিশেষত, রাতে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা চিন্তিত।”
ওই রাতেই বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে পুলিশ। চামেলিদেবী জানান, নিউ টাউন ব্রিজের তলায় রাস্তার কাজ হয়েছে। তবে বিদ্যুত্ সরবরাহের কাজ এখনও হয়নি। দ্রুত তা করার জন্য বিধাননগর পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করবেন।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনার খবর দেওয়া সত্ত্বেও দু’ঘণ্টা পরে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। এক পুলিশকর্তার দাবি, গত দশ-বারো দিন ধরে ঘটনা ঘটলেও কোনও অভিযোগ আসেনি। তবে আজ কাউন্সিলর মারফত বিষয়টি জানা যায়। সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিধাননগরের অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণকলি লাহিড়ী বলেন, “সর্বত্রই নজরদারির ব্যবস্থা হয়েছে। অভিযোগ এলে নিশ্চিত ভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |