বেতনের টাকা নেই, পথে নামছে এসি ট্রাম
বিদ্যুতের বিল-বাবদ বকেয়া প্রায় ১৪ কোটি টাকা। কর্মীদের বেতন দেওয়ার টাকা নেই। প্রাপ্য দেওয়া যাচ্ছে না অবসরপ্রাপ্তদেরও। অর্থাভাবে সারানো যাচ্ছে না অচল ট্রাম। তার মধ্যেই এ বার এসি ট্রাম পথে নামাচ্ছে ট্রাম সংস্থা। এমনিতেই ধীর গতির যান বলে যাত্রী হয় না। তাই যাত্রী টানতেই এই উদ্যোগ বলে দাবি সংস্থার।
বুধবার নোনাপুকুর ট্রাম গুমটিতে গিয়ে দেখা গেল, বিভিন্ন ছাউনির নীচে অচল ট্রাম দাঁড়িয়ে। চার দিকে হরেক পোস্টার। সে সবে নিয়মিত বেতন, মহার্ঘভাতা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি প্রভৃতি মেটানোর জন্য কর্মী সংগঠনের দাবি। এ সবের মাঝেই ট্রামের কামরার পিছন দিকে বসছে এসি। সাফসুতরো করা হচ্ছে ফাইবার গ্লাসের রঙিন জানলা।
চলছে এসি ট্রাম তৈরির কাজ। ছবি: সুদীপ আচার্য
অর্থাভাবে অচল ট্রাম সারাই হচ্ছে না। কাজ পাচ্ছেন না কয়েক হাজার কর্মী। কিছু রুটে পরিষেবা বন্ধ। এই অবস্থায় এসি ট্রামের পিছনে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ের যৌক্তিকতা কোথায়? পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের দাবি, “বাম আমলের অপরিকল্পিত কাজের মাসুল দিতে হচ্ছে ট্রাম-সহ পরিবহণ নিগমগুলিকে। পরিস্থিতি এত জটিল যে, রোগ সারানোর দাওয়াই পাওয়া যাচ্ছে না। তার মধ্যেই যতটা সম্ভব ট্রামকে যাত্রীদের কাছে আকর্ষণীয় করার চেষ্টা হচ্ছে।”
ক্যালকাটা ট্রাম কোম্পানির (সিটিসি) চেয়ারম্যান শান্তিলাল জৈন দাবি করেছেন, “ভোলবদল এবং নানা পরিকল্পনার মাধ্যমে ট্রাম আগের চেয়ে জনপ্রিয় হয়েছে। বেড়েছে যাত্রী। ‘বলাকা’ এবং ‘বনলতা’ নামে দু’টি হেরিটেজ ট্রাম চলছে ছুটির দিনে। ব্লক-বুকিংও হচ্ছে। চালু হয়েছে ‘সারদা’ নামে ঝকঝকে এক-কামরার ট্রাম।”
কিন্তু কোন রুটে এই ট্রাম চলবে, ভাড়া কত হবে, তা ঠিক হয়নি এখনও। শান্তিবাবু বলেন, “যাত্রী-আগ্রহ কতটা, তা বুঝতে প্রথমে নির্দিষ্ট কিছু রুটে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চালানো হবে নতুন এই ট্রাম।”
সংস্থা সূত্রে খবর, সাধারণ ট্রামের চেয়ে আয়তনে অল্প বড় এসি ট্রাম। সাধারণ ট্রামে ২৫ জনের বসার আসন থাকে। এগুলিতে থাকবে গদি-মোড়া ৩৬টি আসন। ৩৬ ফুট দীর্ঘ, ৭ ফুট চওড়া এবং ভিতরে ৭ ফুট উঁচু এই ট্রামে থাকবে মিউজিক সিস্টেম, মোবাইল চার্জার। চালকের দরজার পিছনে ছোট্ট আলমারিতে থাকবে জলের বোতল। প্রয়োজনে যাত্রী বিস্কুটও কিনতে পারবেন কন্ডাক্টরের থেকে। চলন্ত ট্রামে ইচ্ছেমতো ওঠানামা করা যাবে না। কারণ স্বয়ংক্রিয় দরজার নিয়ন্ত্রণ থাকবে চালকের হাতে।
ট্রাম-কর্তৃপক্ষের দাবি, এই পরিকল্পনার মাধ্যমে যাত্রীদের আগ্রহী করা সম্ভব হচ্ছে। এমনিতে ট্রামে টিকিট বিক্রি করে দিনে বড়জোর দেড় হাজার টাকা ওঠে। সেখানে সাজানো ট্রাম ভাড়া দিয়ে ৩ ঘণ্টায় পাওয়া যাচ্ছে ৫ হাজার টাকা। “এই ট্রামে হয়তো তিন ঘণ্টায় ১০ হাজার টাকা ভাড়া পাব”, বলছেন শান্তিলালবাবু। তিনি আরও বলেন, “পাশাপাশি এ বছরের মাঝপর্বে চালু হবে ট্রামে ভ্রাম্যমাণ ‘কাফেটেরিয়া’। বেশ কিছুকাল বন্ধ হয়ে থাকা বালিগঞ্জ-টালিগঞ্জ এবং টালিগঞ্জ-মোমিনপুর রুটে ট্রাম ফের চালু হবে শীঘ্রই। স্বামী বিবেকানন্দের জীবন নিয়ে ট্রামে বিশেষ প্রদর্শনীরও ব্যবস্থা হচ্ছে। সিটিসি-র বিভিন্ন ডিপোয় এটি দেখানো হবে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.