ফের নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার ঘটনাস্থল নলহাটি বিধানসভা এলাকার বাউটিয়া গ্রাম। ওই কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব ওঝা-র বসতবাড়ি আছে সেই গ্রামেই। শুক্রবার বিতর্কের সূত্রপাত হয় কয়েক জন ব্যক্তি ওই গ্রামে বৈদ্যুতিন খুঁটিতে ও বেশ কয়েকটি বাড়িতে বাতি লাগাতে শুরু করলে। বিজেপি-র অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরাই ভোটের মুখে জনগণকে প্রভাবিত করতে বেআইনি ভাবে আলো ‘বিলি’ করছিল। ওই ঘটনায় নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজেপি-র জেলা সম্পাদক স্বরূপরতন সিংহ ও জেলা সহ-সভাপতি শুভাশিস চৌধুরী। তাঁরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে এ দিনই নলহাটি উপ-নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার তথা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত রায়কে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
অভিযোগ পেয়েই সুব্রতবাবু সংশ্লিষ্ট বিডিওকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পুলিশ গিয়ে ওই এলাকা থেকে বেশ কিছু বৈদ্যুতিন বাতি ও একটি বড় মই বাজেয়াপ্ত করে। নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, “প্রাথমিক ভাবে খবর পেয়ে ওই কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিই। বিডিওকে খোঁজ খবর নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলেছি। তার পরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বাতি লাগানোর কাজ কারা করছিল? এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের দখলে থাকা বাউটিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূলের ললিতা লেট। একই দাবি ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য বাদল রবিদাস ও নলহাটি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মধুসূদন মণ্ডলেরও। আর ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানি না বললেও তৃণমূলের প্রার্থী বিপ্লব ওঝা-র দাবি, “ওই ঘটনায় তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।” তবে সে কথা মানতে চাননি বাউটিয়া গ্রামেরই বাসিন্দা, এলাকার বিজেপি কর্মী অশোক দাস, করুণাসিন্ধু লেটরা। তাঁদের অভিযোগ, “সারা বছর কিছু না করে এখন ভোট টানতে তৃণমূল বাতি দিয়ে মানুষকে লোভ দেখাচ্ছে। আমরা পুলিশে খবর দিলে এলাকার দুই তৃণমূল কর্মী প্লাস্টিকের প্যাকেট ভর্তি বাতি ও বৈদ্যুতিন তার ফেলে পালিয়ে যান।” পরে সেই গুলিই উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ।
এ দিকে, বাতি বিলিতে দলের কেউ জড়িত নয় বললেও ঘটনা সম্পর্কে বিপ্লববাবু মন্তব্য করেন, “গ্রামের মানুষকে অন্ধকারে পথ চলতে হয়। বাতি লাগিয়ে সেই সমস্যা দূর করা তো ভাল কাজ। সেই কাজে যদি কোনও রাজনৈতিক দল বাধা দিয়ে থাকেন, তা হলে সেই দলেরই ভোট কমবে, বাড়বে না।” তৃণমূল প্রার্থীর এই যুক্তি শুনে শুভাশিসবাবুর কটাক্ষ, “এত দিন কোথায় ছিলেন? গ্রামের মানুষের সমস্যা নিয়ে এত কাতর হলে তো আগেও ওই কাজ করা যেত। কিন্তু ভোটের সময় বাতি লাগানোর প্রকৃত উদ্দেশ্য কী হতে পারে, তা মানুষ কিন্তু বোঝেন।” |