|
|
|
|
মঙ্গলকোটে শান্তি ফেরাতে পুলিশ ও গ্রামবাসীর বৈঠক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মঙ্গলকোট |
আজাদ-সাইফুল বিবাদ এড়িয়ে এলাকায় শান্তি ফেরাতে মঙ্গলকোটের ঝিলেরা গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে মহকুমার পুলিশকর্তারা গ্রামে গিয়ে প্রায় আড়াইশো জন বাসিন্দার সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে ঠিক হয়, গ্রামের প্রতিটি পাড়ায় শান্তি কমিটি ও আরজি পার্টি গঠন করা হবে।
এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুব দাসের দাবি, “যে কোনও কারণে কিছু গ্রামবাসী দুষ্কৃতীদের মদত দিচ্ছেন। পুলিশের সঙ্গে বাসিন্দাদের সম্পর্কে উন্নতি হলে তাঁরা আর সেটা করার সাহস পাবেন না। তাই শান্তি কমিটিগুলির সঙ্গে পুলিশ নিয়মিত বৈঠক করবে।” বৈঠকে গ্রামবাসীরা অবশ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।
পুজোর সময় থেকে আজাদ মুন্সি ও সাইফুল খানের লোকজনের মধ্যে মাঝে-মধ্যেই গোলমাল বাধছে মঙ্গলকোটের লাখুরিয়া পঞ্চায়েতের ৪-৫টি গ্রামে। সেই সময়ে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছিল। গত সোমবার রাতে ঝিলেরা গ্রামে সাইফুলের লোকজন তাণ্ডব চালায় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। পাঁচটি বাড়ি ও কয়েকটি খড়ের পালুই পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দুই দুষ্কৃতী দলের বিবাদ পুলিশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মহকুমা পুলিশের একাংশের ধারনা, আজাদ ও সাইফুল, দু’জনই কিছু গ্রামবাসীর কাছে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন পাচ্ছে বলে ঝিলেরা গ্রামে অভিযান চালিয়েও তাদের ধরা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাসিন্দাদের সঙ্গে সম্পর্কে উন্নতি ঘটাতে গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের সামনে বৈঠক করে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দু’ঘণ্টার ওই বৈঠকে এসডিপিও ছাড়াও ছিলেন কাটোয়ার সার্কেল ইনস্পেক্টর শচীন্দ্রনাথ পড়িয়, মঙ্গলকোটের ওসি দীপঙ্কর সরকার ও বিডিও সুশান্ত মণ্ডল। বাসিন্দারা প্রথমেই অভিযোগ তোলেন, পুলিশের একাংশের মদতেই দুবৃর্ত্তায়ন চলছে। কালীপদ সরকার নামে এক বাসিন্দার বক্তব্য, “এ ভাবে প্রকাশ্যে সত্য কথা বলতে সবাই ভয় পাবেন। পুলিশের উচিত ছিল গ্রামবাসীদের সঙ্গে গোপনে কথা বলা। তা হলেই আসল কথা উঠে আসত।”
বাসিন্দারা পুলিশকে জানান, যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। আর যাতে সে সবের পুনরাবৃত্তি না হয় ও এলাকায় শান্তি ফেরে সে জন্য পুলিশকে উদ্যোগী হতে হবে। বিডিও-র কাছে গ্রামবাসীর দাবি, দীর্ঘ দিন একশো দিনের কাজ হচ্ছে না এলাকায়। তা চালু করতে হবে। অশান্তিতে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, প্রশাসনকে তাঁদের সাহায্য করতে হবে। বিডিও দাবিপূরণের জন্য চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বাস দেন।
গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। সেখানে পুলিশকর্তাদের নাম ও ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে। এ ছাড়া গ্রামের বিভিন্ন মোড়ে ফোন নম্বর টাঙিয়ে দিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলকোটের ওসি দীপঙ্করবাবু বলেন, “গ্রামে কোনও দুষ্কৃতী বা অপরিচিত লোক ঢুকতে দেখলে আমাদের খবর দিন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যিনি খবর দেবেন, নাম গোপন রাখা হবে।” বৈঠক শেষে ৩৬ জনের শান্তি কমিটি ও আরজি পার্টি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসডিপিও বলেন, “শুধু ঝিলেরা নয়, পাশের ৪-৫টি গ্রামেও একই রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|