নিজস্ব সংবাদদাতা • রানিগঞ্জ |
সাত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ উঠল রানিগঞ্জে।
জেএম লেনের বাসিন্দা তথা ব্যবসায়ী মঞ্জুর আলমের অভিযোগ, ২০ ডিসেম্বর তৃণমূল নেতা খুরশিদ আলম, আব্দুল কালাম-সহ সাত জন বিকাল ৫টার সময় তাঁর বাড়িতে আসেন। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণ দেখিয়ে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন তাঁরা। দিতে না চাইলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। ২৩ ডিসেম্বর ফের দুপুর ৩টে নাগাদ তাঁর বাড়িতে হানা দিয়ে একই দাবি করেন ওই নেতারা। সেদিনও মঞ্জুরবাবু টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়ে চলে যান তাঁরা। একদিন পর বেলা ২টা নাগাদ আবার ওরা ফিরে আসেন। এ দিন খুরশিদ তাঁর মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরে রাখেন এবং তাঁর সঙ্গীরা চিৎকার করে ভয় দেখাতে থাকেন বলে মঞ্জুরবাবুর অভিযোগ। তাতেও তিনি দাবি না মানায় খুরশিদ এবং আবুল কালাম ৬ হাজার ২০০ টাকা এবং অন্যান্যরা তিন হাজার দুশো টাকার ব্যাগ তাঁর ঘর থেকে নিয়ে পালায়। যাওয়ার আগে তাঁরা হুমকি দেয় পুলিশে খবর দিলে মেরে ফেলা হবে। আব্দুল কালাম অবশ্য বলেন, “ষড়যন্ত্র করে উনি আমাদের ফাঁসাচ্ছেন।”
মঞ্জুরবাবু বলেন, “আমি এরপরে রানিগঞ্জ থানায় যাই। সেখানে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী। এমনকী থানায় উপস্থিত রাজনৈতিক নেতাদের চাপে পড়ে ওই পুলিশ কর্মী আমাকে অভিযোগ না করার পরামর্শ দেন। শুধু তাই নয়, ওরা যদি আমার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে তাহলে আমাদের থানায় ঢুকিয়ে দেওয়া হবে বলে ভয়ও দেখানো হয়। আমি ভয়ে বাড়ি ফিরে আসি। পরে প্রতিবেশীদের পরামর্শে ৭ জানুয়ারি আসানসোল আদালতে ওদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি।” এতেও রানিগঞ্জ থানা কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ১৭ জানুয়ারি আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান মঞ্জুরবাবু। তবে সমাধান হয়নি। তিনি বলেন, “অভিযুক্তরা সবাই বিধায়কের ঘনিষ্ঠ। ওদের লোকবল, অর্থবল সবই আছে। ওরা যে কোনও ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে।” তবে রানিগঞ্জের ওসি উদয় ঘোষ বলেন, “আমার কাছে ওরা কখনও আসেনি। আদালত থেকে কোনও নির্দেশ এসেছে কী না দেখে ব্যবস্থা নেব। ওরা আমার কাছে এসেও অভিযোগ জানাতে পারতেন।”
তবে খুরশিদ আলম সাফ বলেন, “দলের সঙ্গে আলোচনা করেই যা বলার বলব।” তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক সোহরাব আলি বলেন, “এই ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ বলেন, “বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।” |