|
|
|
|
অবহেলায় রুগ্ণ দশা ‘সরকারি’ বলদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুবরাজপুর |
বয়স হয়তো হয়েছে। তবে সরকারি টাকা খরচ করে বছর দশেক আগে কেনা দু’টি বলদকে দুবরাজপুর কৃষি খামারে কাজে লাগাতে পারেনি। বর্তমানে অবহেলা ও খাদ্যের অভাবে হাড় সর্বস্ব চেহারা হয়েছে বলদ দু’টির। খামারের কর্মীদের কথায়, এ ভাবে চললে তারা আর বেশি দিন বাঁচবে না।
কেন এই হাল? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মীদের কথায়, “বলদ দু’টির জন্য প্রতিদিন বরাদ্দ এক কিলো করে খোল। গত চার মাস ধরে বন্ধ তা রয়েছে। দ্বিতীয়ত-- গত দু’ বছর এই কৃষি খামারে ফসল উৎপাদিত না হওয়ায় বলদ দু’টিকে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত খড়ও ছিল না। সম্প্রতি কিছু খড় যোগাড় হলেও শুধু খড় চিবিয়ে থাকতে হচ্ছে বলে তাদের শরীর ক্রমশ জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।” প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুবরাজপুর ব্লক কৃষি দফতর অধীনস্থ ওই কৃষি খামার ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত। রয়েছে প্রায় ৭৫ বিঘা জমি। খামারের সীমানার মধ্যেই রয়েছে ব্লক কৃষি অধিকারিকের কার্যালয়। ২০০২ সালে ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে বলদ দু’টি কেনা হয়েছিল। তখন থেকেই নিয়মিত চাষের কাজে লাগানো হত তাদের। এমন কী খামারের জন্য পাওয়ার টিলার-সহ অন্যান্য যন্ত্র আনার পরেও। তবে ২০০৮-২০০৯ পর্যন্ত ধান, গম, সর্ষে, ভুট্টা, সূর্যমুখী-সহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হলেও খামারের সীমানা প্রাচীরের একটা বড় অংশ না থাকায় গত দু বছর ধরে আশপাশ এলাকার গরু, ছাগল খামারে ঢুকে পড়ায় চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে খামার সূত্রে জানা গিয়েছে। একই কথা ব্লক কৃষি সম্প্রসারণ অধিকারিক গোঁসাইদাস বিশ্বাসেরও। তবে বলদ দু’টির খাবারের অভাব বা অবহেলা প্রসঙ্গে গোঁসাইবাবু বলেন, “এ ব্যপারে যা বলার দায়িত্বে থাকা খামার ম্যানেজার বলবেন।” |
দুবরাজপুর কৃষি খামারে তোলা —নিজস্ব চিত্র। |
খামার ম্যানেজার দুর্গাদাস সৌমণ্ডল খাদ্য সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “এখানে ফসল ঠিক মতো হলে এই সমস্যা হত না। খড় যোগাড় হয়েছে। কিন্তু খোল নেওয়া হয় স্থানীয় একটি সমবায় সমিতি থেকে। কিন্তু সেই খোল এখনও এসে পৌঁছায়নি। বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানায়েছি।”
বর্তমানে খামারের তিন কৃষি শ্রমিকই পালা করে বলদ দু’টির দেখভাল করেন। তাঁদের একজন দুলাল বীরবংশী বলেন, “এ ভাবে খড় খেয়ে কত দিন বাঁচবে জানি না।” দুবরাজপুর ব্লক প্রাণিবিকাশ আধিকারিক শুভ্রমিত্র মজুমদারও বলেন, “গরু যদি কাজ না করে শুধু দাঁড়িয়ে থাকে, তা হলেও খড় খাইয়ে কিছু হবে না। কেন না ওতে কোনও পুষ্টিগুণ নেই।” সিউড়ি সদরের সহকৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) শিবনাথ ঘোষ বলেন, “বিষয়টি আমার নজরে ছিল না। তবে এরকম খাদ্য সমস্যা থাকার কথা নয়। তবে দুবরাজপুরে স্থায়ী এডিও এবং ফার্ম ম্যনেজার নেই। যাঁরা আছেন অতিরিক্ত দাষিত্বে রয়েছেন। সে জন্য একটা ফাঁক তৈরি হচ্ছে। বিষয়টি দেখছি।” |
|
|
|
|
|