নাসিরুদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তভার নিল সিআইডি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া |
ধনেখালিতে পুলিশি হেফাজতে তৃণমূল কর্মী কাজি নাসিরুদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তভার দেওয়া হল সিআইডিকে। যদিও এ দিনই মৃতের পরিবারের পক্ষে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে ঘটনার সিবিআই তদন্তের আর্জি জানানো হয়েছে। পরিবারের সঙ্গে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য।
গত ১৮ জানুয়ারি রাতে পুলিশি হেফাজতে মারা যান নাসিরুদ্দিন। পুলিশ তাঁকে পিটিয়ে মেরেছে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় দলেরই স্থানীয় বিধায়ক অসীমা পাত্রের ‘ইন্ধন’ আছে বলে অভিযোগ করেন মৃতের স্ত্রী মানুজা। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস। রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী, প্রদীপ ভট্টাচার্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতারা দেখা করেছেন মানুজার সঙ্গে। কংগ্রেসের তরফে পরিবারটিকে আর্থিক সাহায্যও করা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে ধনেখালিতে সভা করেছেন অধীরবাবু। ইতিমধ্যেই বিষয়টিতে আন্দোলনে নেমেছে সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-ও। |
আন্দোলনে তৃণমূল। সোমবার ধনেখালিতে দীপঙ্কর দে-র তোলা ছবি। |
সব মিলিয়ে নাসিরুদ্দিনের অস্বাভাবিক মৃত্যু রাজ্য সরকারের উপরে কিছুটা চাপ সৃষ্টি করেছে। সিআইডিকে তদন্তভার দেওয়ার ঘটনা সে দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। যদিও হুগলি জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, জেলা পুলিশের তরফেই সিআইডি তদন্তের আর্জি জানানো হয়েছিল।
এ দিকে, তৃণমূল কর্মীর মৃত্যুতে কংগ্রেস যে ভাবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ তুলে মাঠে নেমেছে, তাতে ক্ষুব্ধ তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। এ দিনই তৃণমূলের তরফে মিছিল বেরোয় ধনেখালিতে। কেন্দ্রীয় সরকারের নানা নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে মিছিল থেকে। অসীমা পাত্র ছাড়াও মিছিলে ছিলেন হুগলির সাংসদ রত্না দে-নাগ, জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দিলীপ যাদব-সহ প্রমুখ। যদিও তৃণমূলেরই একাংশ জানাচ্ছে, নাসিরুদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনাকে সামনে রেখে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ধনেখালিতে কংগ্রেস যে ভাবে ‘প্রভাব’ বাড়ানোর চেষ্টা করছে, তারই ‘পাল্টা’ হিসাবে এ দিনের মিছিল।
হুগলি জেলা পুলিশ অবশ্য এর আগে দাবি করেছিল, পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বচসার অভিযোগে নাসিরুদ্দিনকে ডেকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল মাত্র। কিন্তু পর দিন মারা যান বছর ছত্রিশের ওই যুবক। পুলিশ তাঁকে মারতে মারতে গাড়িতে তুলেছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ এবং মৃতের পরিবারের লোকজন। মানুজার দাবি, অন্ত্যেষ্টির সময়ে তাঁর স্বামীর শরীরে মারধরের দাগও ছিল। এ দিন মানুজাদের রাজ্যপালের কাছে নিয়ে যান প্রদীপবাবু নিজেই। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতির ‘অবনতি’ নিয়ে রাজ্যপালকে অবহিত করেন তিনি। রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই সিআইডি-র একটি তদন্তকারী দল ধনেখালি যাবে। এর আগে যে ম্যাজিস্ট্রেট মৃতদেহের সুরতহাল করেছিলেন, তিনি রিপোর্টে জানিয়েছিলেন, দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কংগ্রেস এবং মৃতের পরিবারের তরফ অবশ্য তার আগে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল, ময়না-তদন্তের কাজ যথাযথ ভাবে হয়নি।
|