নিরাপত্তার দাবিতে ভাওয়াইয়া উৎসবের মনোনীত বিচারকদের ১০ জন দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে চিঠি দিতেই নড়েচড়ে বসল ময়নাগুড়ি ব্লক প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সকালে ওই বিচারকদের নিয়ে কয়েক দফায় বৈঠক করে নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। দুপুর নাগাদ পুলিশ পাহারায় বিচারকেরা তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পৌঁছে প্রতিযোগিতা পরিচালনার কাজ শুরু করেন। ময়নাগুড়ির যুগ্ম বিডিও সমরেশ রায় বলেন, “জটিলতা কেটেছে। বিচারকদের দাবি মত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ‘আমরা ওঁরা’র বিভাজনে প্রায় ভেস্তে যেতে বসেছিল ময়নাগুড়ি ব্লক ভাওয়াইয়া উৎসব। আগামী ৩০ জানুয়ারি হেলাপাকড়ি বাজারে ওই উৎসবের প্রস্তুতি চলছে। অনুষ্ঠানে যোগ্য শিল্পীদের তুলে আনতে ২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে প্রতিযোগিতা। কিন্তু মঙ্গলবার চাপান উতোরের জেরে ধর্মপুর, পদমতি-১ এবং মাধবডাঙ্গা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিযোগিতা বাতিল হয়ে যায়। ওই দিন স্থানীয় সিপিএম অফিসের সামনের রাস্তায় দাঁড়ানো বিচারকদের বাস ঘেরাও করে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখান বলে অভিযোগ। ঘটনার পরে মনোনীত বিচারকদের মধ্যে বড় অংশ আমরা ওঁরা বিভাজন তৈরির অভিযোগ এবং নিরাপত্তার প্রশ্ন তোলেন। তার পরে তাঁরা সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রশাসনকে জানিয়ে দেন।
বিচারকদের তরফে ভুপেন রায় বলেন, “সিপিএম অফিসের সামনের রাস্তা থেকে একজন বিচারককে বাসে তুলতে গেলে তৃনমূলের একদল কর্মী সমর্থক ঘিরে অভব্য আচরণ করেন। সেটা মেনে নিতে পারিনি। তাই ১১ জন বিচারকের মধ্যে ১০ জন দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চান। এ দিনের বৈঠকে আমাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।” বিচারকদের অন্যতম চৈতন্যদেব রায় বলেন, “আমরা চাই অনুষ্ঠান হোক। কিন্তু পরিবেশ যেন ঠিক থাকে। প্রশাসনের তরফে আশ্বাস পেয়ে কাজ শুরু করেছি।” তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য বিচারকদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। দলের ময়নাগুড়ি ব্লক সভাপতি মনোজ রায় বলেন, “আমরা চাই উৎসবের নিরপেক্ষতা বজায় থাকুক। কিন্তু কোনও দলীয় দফতর থেকে বিচারকদের নিয়ে যাওয়া হলে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। মঙ্গলবার তাই প্রতিবাদ করা হয়েছে।” বিচারকরা যদিও জানান, একজন বিচারক সিপিএম আফিসের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তা নিয়ে সমস্যার সূত্রপাত। |