আগামী দু’মাসের মধ্যে পুনর্বাসন ‘প্যাকেজ’-এর সুযোগ সুবিধা মিটিয়ে দেওয়া না হলে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিলেন কাওয়াখালি উপনগরী প্রকল্পের ভূমিহারাদের একাংশ। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে দেখা করে তাদের দাবির বিষয়গুলি জানান ভূমিহারারা। পুনর্বাসন নিয়ে অতিরিক্ত দাবি-দাওয়া তোলায় নতুন কমিটি গড়ে সে সব খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। ঠিক হয়েছে, চার-পাঁচ জন প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। আগামী চার মাসের মধ্যে তারা দাবির বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবেন। তার পরেই নথিপত্র দেখে দাবির বিষয়গুলি যতটা সম্ভব মেটানোর ব্যবস্থা করা হবে। তবে মাঝেমধ্যেই ভূমিহারাদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফে নতুন দাবি তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ দিনের পর আর কোনও নতুন দাবির বিষয়টি গ্রহণযোগ্য হবে না বলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন। পোড়াঝাড় ভূমিরক্ষা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির অভিযোগ ২ মাসের মধ্যে তাদের পুনর্বাসনের সুবিধাগুলি মিটিয়ে দেওয়া না হলে তাঁরা প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেবেন। আগামী ২৮ জানুয়ারি উত্তরবঙ্গ উৎসবে মুখ্যমন্ত্রী এলে তাঁকে দিয়ে উপনগরী প্রকল্পে ‘ফিল্ম সিটি’ তৈরির শিলান্যাস করতে চাইছেন এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ। জমিহারারা ওই কাজে বাধা না-দিলেও দ্রুত পুনর্বাসন প্যাকেজের সুবিধা মিটিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। |
গৌতমবাবু বলেন, “ইতিমধ্যেই জমিহারাদের দাবির একাংশ মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য যে সব দাবি তাঁরা তুলেছেন সেগুলি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গড়া হবে। আগামী চার মাসের মধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং ভূমি সংস্কার বিভাগের কর্তাদের নিয়ে দফতরে বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। ভূমিহারাদের দাবি, বড় জমির মালিকদের পুনর্বাসন প্রকল্পে ‘ফ্ল্যাট’ দেওয়ার কথা প্রথমে ঠিক হয়েছিল। এখন তাঁরা ফ্ল্যাটের পরিবর্তে অধিকাংশই ‘প্লট’ চাইছেন। তা ছাড়া এখন অনেকে অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি। পোড়াঝাড় ভূমিরক্ষা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির তরফে কার্তিক মণ্ডল বলেন, “গত বছর ৯ জুন মন্ত্রী বৈঠক করে তিন মাসের মধ্যে সমস্যা খতিয়ে দেখে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। আমরাও সেই মতো প্রকল্পের জায়গায় সীমানা পাঁচিল দেওয়ার কাজে সহযোগিতা করেছি। অথচ এখনও পুনর্বাসন প্যাকেজ মেনে আমাদের দাবির বিষয়টি মেটানো হয়নি। ৪ মাস নয়। আমরা চাই দু’মাসের মধ্যে সমস্যা মেটাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অন্যথায় আমরা প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব।” তাঁদের দাবি, অন্তত ৫০০ জন ‘প্লট’ পাবেন। কাওয়াখালি পোড়াঝাড় ভূমিরক্ষা কমিটির পক্ষে যুগল কিশোর সরকার জমিহারাদের সকলকেই পুনর্বাসন প্যাকেজের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার দাবি তোলেন। তাঁর কথায়, প্রায় ১৪০০ বাসিন্দা পুনর্বাসন প্রকল্পে ‘প্লট’ পাবেন। এখন পর্যন্ত অর্ধেককে সেই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, লটারির মাধ্যমে ইতিমধ্যেই অনেককেই ‘প্লট’ বিলি করা হয়েছে। পুরনো তালিকায় আরও ১৬৮ জনকে প্লট বিলি করতে লটারি হওয়ার কথা। তা আগে করার কথা ভাবা হয়েছে। এ দিন জমিহারাদের দুই সংগঠনের তরফে নতুন যাঁরা প্লট চাইছেন এবং পুরনো তালিকায় যাঁরা রয়েছেন সকলেরই এক সঙ্গে প্লট বিলির লটারি করার দাবি জানানো হয়েছে। |