বন্ধ হল ডুয়ার্সের চামুর্চি চা বাগান
শ্রমিক অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে কারখানার ফটকে সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিশ ঝুলিয়ে শেষমেশ বাগান বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিল কর্তৃপক্ষ। মজুরি নিয়ে মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের ঝামেলা হয়। ওই রাতে বাগান ছেড়ে চলে যান ম্যানেজার। বাগান বন্ধ বলে বুধবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন থেকেই শ্রমিকরা উদ্বেগে ছিলেন। তবে বুধবার সকালে কারখানার গেটে নোটিশ দেখার পর তাঁরা বুঝতে পারেন, সত্যিই বাগানটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে ডুয়ার্সে বন্ধ বাগানের তালিকায় যুক্ত হল চামুর্চির নাম। গত ১০ বছর ধরে ঢেকলাপাড়া বন্ধ। গত ৬ মাসে বন্ধ হয়েছে আরও তিনটি চা বাগান। বাগানগুলি কবে চালু হবে তার কোন নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না জেলা প্রশাসনের কর্তারা। জলপাইগুড়ির জেলা শাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “শ্রমিকদের কাজ নিয়ে ওই বাগানে অশান্তি চলছিল বলে শুনেছি। তবে, আশা করি দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে বাগানটি ফের চালু করা সম্ভব হবে। আমাদের পাশাপাশি বাগানটি দ্রুত চালু করতে শ্রম অধিকারীদের উদ্যোগ নেবার কথা জানাব।”
বন্ধ চামুর্চি চা বাগানের সামনে শ্রমিকেরা। ছবি: রাজকুমার মোদক।
বাগান সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার শ্রমিকদের মজুরি দেবার দিন কর্তৃপক্ষ ৫৪ জন শ্রমিকের ১২ দিনের মজুরি আট দিনের হিসেবে দিতে চাইছিলেন। ওই ঘটনা নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের বাদানুবাদ ও বচসা হয়। কর্তৃপক্ষ পরে বানারহাট থানায় খবর দিলে বাগানে পুলিশ পৌঁছয় সন্ধ্যায়। অবশ্য দাবি মেনে মালিক পক্ষ ১২ দিনের টাকা মিটিয়ে দেয় বলে শ্রমিকরা জানান। অশান্তি মিটলেও ওই রাতে বাগানের ১০ জন সহকারী ম্যানেজারকে নিয়ে বাগান ছাড়েন ম্যানেজার। বাগানের শ্রমিকদের অভিযোগ, ভাল সেচ ব্যবস্থা না থাকায় শীতকালে চা বাগান থেকে তেমন পাতা মিলছিল না। বাগান চালালে শ্রমিকদের মজুরি মেটাতে হবে ভেবে মালিকরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ঝামেলা সৃষ্টি করে। সেই অজুহাতে কর্তৃপক্ষ সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিশ ঝোলায়।
বাগানের সিটু শ্রমিক নেতা মহম্মদ নাজিমুদ্দিন বলেন, “কাজ করেও টাকা কম দিলে শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি চাইতে পারেন। সে জন্য বাগান বন্ধ করার মানে হয় না। বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানাব।” ২০০২ সালে প্রথমবার ভুটানের সীমান্ত লাগোয়া চামুর্চি বাগান বন্ধ করে চলে যায় কর্তৃপক্ষ। বিপাকে পড়েন বাগানের ১০৭৪ জন শ্রমিক। চা শিল্পের মন্দা দশার কারণে সে সময় ডুয়ার্সে বেশ কয়েকটি বাগান বন্ধ ছিল। পাশের কাঁঠালগুড়ি বাগানে মৃত্যুর মিছিল দেখা দেয়। তবে ওই বাগানের শ্রমিক নেতৃত্ব ভাল থাকায় বাগানের শ্রমিকরা কাঁচা পাতা তোলার পাশাপাশি বাগান পরিচর্যা করে কষ্টে দিন গুজরান করতেন। ২০০৮ সালে চা শিল্প চাঙ্গা হতে একের পর এক বাগান ফের খুলতে শুরু করে। ২০০৯ সালের ১ অক্টোবর নতুন মালিক এসে বাগানটি চালু করেন। বাগানটি চালাতে যাতে কর্তৃপক্ষের সুবিধা হয় তাই রাজ্য সরকার সে সময় থেকে শ্রমিকদের অন্ত্যদয়ের চাল ও একশো দিনের কাজ করিয়ে আসছে। সরকারি সুবিধা পেয়েও কেন মালিক মুখ ফেরাল তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। চা বাগান মালিক সংগঠন ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখ্য উপদেষ্টা অমিতাংশু চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, “কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠছে তা ঠিক নয়। আসলে ঠিক মতো কাজ না করে একটি অংশ মজুরি নিচ্ছিল বাগানে। অশান্তি হচ্ছে। তাতে নিরাপত্তার কথা ভেবে মালিক পক্ষ বাগান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.