আততায়ী পরিচিত বলে সন্দেহ
করলার ধার থেকে উদ্ধার কিশোরীর দেহ
জেলাশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের দফতরের ফুট ত্রিশেকের মধ্যেই পাঁকের মধ্যে মুখ গুঁজে থাকা এক কিশোরীর দেহ উদ্ধার করল জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার পুলিশ। বুধবার রাতে বাড়ি থেকে জল আনতে বেরিয়ে হারিয়ে যায় সীমা দাস (১৪) নামে ওই কিশোরী। বৃহস্পতিবার সকালে করলা নদীর ধার থেকে তার দেহ পাওয়ার পরে পুলিশের অনুমান,সীমাকে খুন করা হয়েছে শ্বাসরোধ করে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “ওই কিশোরীকে খুন করা হয়েছে। শারীরিক অত্যাচারের বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে তার দেহ। আশা করছি, শীঘ্রই খুনের কিনারা হবে।”
জলপাইগুড়িতে করলার পাড়ে ওই এলাকায় বাঁধের উপরের রাস্তা রাত হলে নির্জন হয়ে যায়। আলোও নেই। ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারির রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে এমনই এক নির্জন রাতে দিদি রিঙ্কু দাসকে দুষ্কৃতীদের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে মারা গিয়েছিল রাজীব দাস নামে এক কিশোর। জলপাইগুড়ির পুলিশের অবশ্য দাবি, ওই গোটা এলাকাতেই নজরদারি রয়েছে। তবু ওই দিন রাতে সীমা পুলিশের কোনও সাহায্যই পায়নি। যদিও প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, যেখান থেকে সীমার দেহ পাওয়া গিয়েছে সেখানে ধ্বস্তাধ্বস্তির চিহ্নও রয়েছে। সীমার পরনে ছিল নীল জিনসের প্যান্ট আর ছাই রঙা টপ। নাক দিয়ে রক্ত বেরিয়ে জমা হয়ে রয়েছে। কাছেই পড়েছিল ফাঁকা বিয়ারের বোতল। লাল রঙের চটিও পড়ে ছিল একটু দূরে। জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ বলেন, “অত্যন্ত উদ্বেগজনক ঘটনা। পুলিশকে দ্রুত খুনের কিনারা করতে বলেছি।”
পুলিশ সীমার দেহ প্রথমে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগে পাঠানো হবে। ওই কিশোরীর মোবাইল ফোনের হদিস মিলছে না। তবে তার ঘর থেকে পুলিশ বেশ কিছু সূত্র পেয়েছে।
নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে সীমার বাড়ি ওই এলাকা থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে শহরেরই মহামায়া পাড়ায়। সেখানেই কয়েকটি বাড়িতে সে পরিচারিকার কাজ করত।
ঘটনার দিন নমিতাদেবী ফালাকাটায় ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ সীমা তাঁকে একবার ফোনও করেছিল। সীমার ভাই শুভ জানায়, রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তার দিদি বালতি নিয়ে রাস্তার ধারের কল থেকে জল আনতে যায়। তারপর থেকেই তার আর কোনও খোঁজ নেই। রাতে ফিরে নমিতাদেবী মেয়ের খোঁজ করেন। কিন্তু পুলিশকে জানাননি। এই দিন থানায় মেয়ে নিখোঁজ বলে ডায়েরি করতে গিয়ে শোনেন এক কিশোরীর দেহ পাওয়া গিয়েছে। সেই দেহ দেখে তিনি শনাক্ত করেন।
আততায়ী সীমার পরিচিত বলেই সন্দেহ করছে পুলিশ। ওই কিশোরীকে কয়েকজন যুবক বিরক্ত করত বলে তার বাড়ির লোকজনেরা পুলিশকে জানিয়েছেন। নমিতাদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁরা দু’মাস আগে মহামায়াপাড়ায় ঘর ভাড়া নেন। সেখানে তিনি ও তাঁর মেয়ে পরিচারিকার কাজ করতেন। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে সীমা।
নমিতাদেবী বলেন, “আমার মেয়ে খুব সাদাসিধা ছিল। তাকে কেউ কলতলা তুলে নিয়ে গিয়েছে। তাই অনুমান করি, দুষ্কতীরা কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দা।” প্রতিবেশীরা অবশ্য জানিয়েছেন, ওই দিন রাতে ওই কলতলায় তাঁরা অস্বাভাবিক কিছু খেয়াল করেননি। পুলিশের তাই সন্দেহ, সীমার পরিচিত কেউই তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.