চোখ খুলে দিয়েছে চিত্রাঙ্গদা, এ বার ঘরে ফেরার পালা
ন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। পুলিশ ফিরিয়ে আনার পরেও পরিবার ফিরিয়ে নেয়নি তাঁদের। ‘চিত্রাঙ্গদা’- নৃত্যনাট্যই ওই মেয়েদের কয়েক জন অভিভাবকের চোখ খুলে দিল। মেয়েদের অবশেষে বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে শুরু করলেন তাঁরা।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্রি হয়ে যাওয়া মেয়েদের মধ্যে জনা কুড়িকে উদ্ধার করে একটি হোমে রেখেছিলেন রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের (সিআইডি) কর্তারা। যোগাযোগ করেছিলেন ওই মেয়েদের অভিভাবকদের সঙ্গে। কিন্তু তাঁদের ফিরিয়ে নিতে আসেননি কেউই। ওই নাবালিকাদের দিয়ে গত নভেম্বরে রবীন্দ্রসদনে ‘চিত্রাঙ্গদা’ নৃত্যনাট্য করিয়েছিলেন সিআইডি কর্তারা। সেই অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছিল মেয়েদের বাড়ির লোকেদেরও। সমাজ ও পরিবারের বিরুদ্ধে তাঁদের যাবতীয় ক্ষোভ ওই নৃত্যনাট্যের মাধ্যমেই যেন উজাড় করে দিয়েছিলেন বিনা দোষে ‘সমাজচ্যুত’ হয়ে পড়া মেয়েরা। সে দিনের ওই অনুষ্ঠানে তাই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি মেয়েদের পরিবারের লোকেরাও। তখনই অনেকে জানিয়েছিলেন, মেয়েদের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে নিজেদের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করবেন তাঁরা।
ফিরে পাওয়া। মেয়েকে নিয়ে বাড়ির পথে বাবা-মা।—নিজস্ব চিত্র
সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে শুরু করেছেন অভিভাবকেরা। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের বাড়িতে নিজের মেয়েকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন এক অভিভাবক। এ দিন চিত্রাঙ্গদার প্রদর্শনীর পরে শিশির মঞ্চের বাইরে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে তাঁর বাবা বলেন, “আমি চাই মেয়ে আবার স্কুলে যাক। যে নাচের মধ্যে দিয়ে আমার মেয়েকে নতুন করে ফিরে পেয়েছি, তা-ও বন্ধ করতে চাই না।” প্রায় দু’বছর পর নিজের সন্তানকে ফিরে পেয়ে আনন্দে বিহ্বল মেয়েটির মা-ও। মেয়ে যে অনেক রোগা হয়ে গিয়েছে, তা-ও চোখ এড়ায়নি মায়ের। মেয়েকে বাড়িতে নিয়েই খাইয়েছেন বিরিয়ানি, যা মেয়ের সব চেয়ে প্রিয়। উদ্ধারের পর যে পরিবার তাঁকে প্রতাখ্যান করেছিল, সেখানে ফিরতে পেরে খুশি মেয়েটিও। তবে বাড়িতে থাকলেও হোমের সঙ্গে তার যোগাযোগ থাকবে বলে সে জানিয়েছে। সিআইডি-র ইনস্পেক্টর শর্বরী ভট্টাচার্য ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নাচের শিক্ষক সঞ্চয়িতা পাল হালদার জানিয়েছেন, নাচ চালিয়ে যাওয়ার জন্য মেয়েটিকে সব ধরনের সাহায্য করা হবে।
শুধু ওই মেয়েটির অভিভাবকেরাই নন, মেয়েদের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদন এসেছে আরও কয়েক জনের কাছ থেকে। তাঁরাও বাড়িতে ফেরার জন্য দিন গুনছেন। হোমের পক্ষ থেকে তপতী ভৌমিক বলেন, “অনেকেই মেয়েদের বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে চান। আমরাও নিয়ম মেনে তাঁদের সাহায্য করছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.