তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আরাবুল ইসলাম আদালতে হাজিরা দিতে না-পারায় আপাতত তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশই বহাল থাকছে। হাজির হতে পারেননি বলেই তাঁর জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানি হয়নি।
সিপিএম নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লার উপরে হামলার মামলায় (কেএলসি থানার কেস নম্বর-৮) গত সোমবার আরাবুলের আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতেই তাঁর অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছিল আদালত। কিন্তু বামনঘাটায় সিপিএম-কর্মীদের উপরে হামলা এবং গাড়িতে আগুনের মামলায় শুনানি হয়নি। সেই মামলায় তাঁকে পুলিশি হেফাজতেই থাকতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই মামলায় বারুইপুর আদালতে আরাবুলের জামিনের আর্জি (কেএলসি, কেস নম্বর-১১) জানান তাঁর আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু আদালত জানিয়ে দেয়, যে-হেতু তিনি আদালতে হাজির হতে পারেননি, তাই তাঁকে আপাতত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশই বহাল থাকছে। আরাবুল যে-দিন আদালতে আসতে পারবেন, সে-দিন তাঁর জামিনের আর্জির শুনানি হবে।
পুলিশি হেফাজত থেকে মুক্তি মেলেনি অন্য মামলায় অভিযোগ থাকায়। কিন্তু কেন হাসপাতাল থেকে ছাড়া হচ্ছে না আরাবুলকে?
ওই তৃণমূল নেতার জন্য গড়া মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকেরা জানান, বুকের ব্যথা কমলেও আচমকা তাঁর বমি শুরু হয়েছিল। তবে আরাবুল যে-চিকিৎসকের অধীনে ভর্তি হয়েছেন, সেই কার্ডিওলজিস্ট সইদুল ইসলাম এ দিন জানিয়েছেন, সকালে কোনও খাবার থেকে তাঁর একটু অ্যাসিডিটি হয়েছিল। এখন তিনি ভালই আছেন। স্বাভাবিক খাওয়াদাওয়াও করেছেন। যদি এই রকমই থাকেন, তা হলে আজ, শুক্রবার তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক।
হাসপাতালে দলের নেতা-কর্মীরা অনবরত আরাবুলের সঙ্গে দেখা করছেন, কথা বলছেন। কিন্তু পুলিশ তাঁকে জেরা করতে পারছে না। কেন?
সরাসরি জবাব মেলেনি। তবে রাজ্য পুলিশের এক কর্তা এ দিন বলেন, “শুক্রবার ওই তৃণমূল নেতাকে যদি হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয় এবং তিনি সুস্থ বলে চিকিৎসকেরা যদি শংসাপত্র দেন, তা হলে কয়েক দফা জেরা করা হবে। তার পরে তাঁকে আদালতে তোলা হবে।” এ দিন আদালতে মেডিক্যাল বোর্ডের যে-রিপোর্ট পেশ করা হয়, তাতে চিকিৎসকেরা ‘আরাবুলের আরও কিছু শারীরিক পরীক্ষা দরকার’ বলে লিখেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ব্যাপারে সইদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর উত্তর, “আমরা লিখেছি, যদি রোগী আবার নতুন করে অসুস্থ হয়ে পড়েন, তা হলে পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। সুস্থ থাকলে তার দরকার নেই।” এর আগে এসএসকেএম-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, আরাবুলের ‘ট্রেড মিল টেস্ট’ হবে। অ্যাঞ্জিওগ্রাফিও হতে পারে। এ দিন পিজি-র সুপার তমালকান্তি ঘোষ বলেন, “চিকিৎসকেরা তাঁকে কয়েক দিন পর্যবেক্ষণ করে মনে করেছেন, আর ওই পরীক্ষাগুলির দরকার নেই। তাই ওই সব পরীক্ষা করা হয়নি।” |