ঘোষণায় ভুল, ফের অবরোধ ভাঙচুরে স্তব্ধ ট্রেন
লাপাতা ফেলে নয়। যান্ত্রিক বিভ্রাট-সহ রেলের নিজস্ব নানা কারণে শিয়ালদহ মেন লাইনে প্রায় রোজই থমকে যাচ্ছে ট্রেন চলাচল। তবে বৃহস্পতিবার যন্ত্র-বিভ্রাট নয়, ভুল করেছেন কর্তব্যরত রেলকর্মী। ঘোষণায় ভুলের জেরে শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ-অবরোধ। লাইনে স্লিপার ফেলা, ট্রেনে ইট ছোড়ার সঙ্গে সঙ্গে চলে ভাঙচুরও। ট্রেন আটকে থাকে প্রায় দেড় ঘণ্টা। ট্রেন চলাচল ফের স্বাভাবিক হয় প্রায় তিন ঘণ্টা পরে। বাতিল হয় পাঁচ জোড়া লোকাল ট্রেন। রোগী, পরীক্ষার্থী-সহ সব স্তরের যাত্রীরা চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েন।
রেল সূত্রের খবর, সকাল ৯টা নাগাদ শ্যামনগর স্টেশনে দু’টি ডাউন ট্রেন ঢুকছিল। কল্যাণী-মাঝেরহাট আর শিয়ালদহমুখী শান্তিপুর লোকাল। ট্রেন দু’টি যে-সব প্ল্যাটফর্মে আসছে বলে রেলের মাইকে ঘোষণা করা হয়েছিল, সেগুলিতে আসেনি। প্ল্যাটফর্ম বদলে যায়। ফলে যাঁরা কল্যাণী-মাঝেরহাট লোকালে উঠতে চেয়েছিলেন, তাঁরা সেই ট্রেন ধরতে পারেননি। যাঁরা শান্তিপুর লোকালে যেতে চেয়েছিলেন, তাঁদেরও অনেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে গিয়ে তাতে উঠতে পারেননি। ক্ষিপ্ত যাত্রীরা অবরোধ শুরু করে দেন। দাবি তোলেন, দু’টি ট্রেনকেই শ্যামনগর স্টেশনে ফিরিয়ে আনতে হবে।
শ্যামনগরে গোলমালের সঙ্গে পরের স্টেশন জগদ্দলেও দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে ট্রেন না-পেয়ে অবরোধ শুরু করে দেন যাত্রীরা। স্লিপার ফেলে দেওয়া হয় লাইনে। চলন্ত ট্রেনে ছোড়া হয় ইটপাথর। ওই দু’টি স্টেশনে লাইন জুড়ে ট্রেন আটকে পড়ায় মেন লাইনের অন্যান্য স্টেশনেও ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়। নাকাল হতে হয় যাত্রীদের। অনেকেই সময়মতো অফিস, স্কুল-কলেজ, হাসপাতালে যেতে পারেননি। ট্রেন না-পেয়ে অনেকে সড়কপথ ধরেন।
এমনিতে প্রায় প্রতি রাতেই শিয়ালদহে ঘোষণার পরে আচমকাই ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম পাল্টে দেওয়া হয়। অনেক সময় প্ল্যাটফর্ম পাল্টে দেওয়ার পরেও বাতিল করা হয় সেই ট্রেন। সেটা বাড়ি ফেরার সময় বলে যাত্রী-বিক্ষোভ তত জোরদার হয় না। কিন্তু এ দিন অফিসের ব্যস্ত সময়ে শ্যামনগর স্টেশনে মাইকে ভুল ঘোষণার ফলে যাত্রীরা নির্ধারিত ট্রেন ধরতে পারেননি। আর তাতেই আগুনে ঘি পড়ে।
অসুস্থ মাকে নিয়ে শ্যামনগর স্টেশনে ট্রেন ধরতে এসেছিলেন অসীম দাস। দক্ষিণ কলকাতার একটি নার্সিংহোমে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু ওই গোলমালে তাঁরা আটকে পড়েন। তাঁর মায়ের অসুস্থতা বেড়ে যায়। তাঁকে একটি ওষুধের দোকানে বসিয়ে রাখেন অসীমবাবু। মা পরে কিছুটা সুস্থ হলে তাঁরা বাড়ি ফিরে যান। তার আগে অসীমবাবু বলেন, “রোজই এক অবস্থা। হয় সময়মতো ট্রেন আসে না। যখন আসে, এত ভিড় হয়ে যায় যে, ট্রেনে ওঠা যায় না। তার উপরে রেলের ভুলের প্রতিবাদে অবরোধ এবং ট্রেন বন্ধ।” কলেজের পরীক্ষা ছিল তনিমা সরকারের। তিনি শ্যামনগরেরই বাসিন্দা। ট্রেন না-পেয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন তিনিও। বলেন, “কী করব, পরীক্ষাটা আর দেওয়া হল না! দেখি, শিক্ষকেরা কী বলেন।”
সামাল দিতে কী করল রেল? পূর্ব রেলের কর্তারা জানান, অবরোধকারীদের বলা হয়েছিল ব্যারাকপুর বা টিটাগড়ে ওই দু’টি লোকালকে দাঁড় করিয়ে রাখা হবে। যাত্রীরা অন্য ট্রেনে ব্যারাকপুর বা টিটাগড়ে গিয়ে দু’টি ট্রেনই পেয়ে যাবেন। কিন্তু যাত্রীরা সেই প্রস্তাব মানতে চাননি। ফলে ওই সময়ে ট্রেন চালানো যায়নি। কিন্তু মেন লাইনে রোজ অব্যবস্থা কেন, জবাব নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.