|
|
|
|
জাতীয় ভোটার দিবস আজ |
নতুন পরিচয়পত্রেও ত্রুটি, দেওয়া যাচ্ছে না সকলকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আজ, শুক্রবার জাতীয় ভোটার দিবস। জেলা, মহকুমা এবং ব্লক স্তরে দিনটি পালন করা হবে। নতুন ভোটারদের হাতে সচিত্র পরিচয়পত্র তুলে দেওয়া হবে। তবে নতুন ভোটারদের সকলের হাতে এখনই সচিত্র পরিচয়পত্র তুলে দিতে পারছে না পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। কারণ, একাংশ পরিচয়পত্রে ত্রুটি (মিস ম্যাচ) রয়েছে। যেমন, কোনও পরিচয়পত্রে যাঁর নাম রয়েছে, তাঁর ছবি নেই। অন্য কারও ছবি রয়েছে। কোনও পরিচয়পত্রে যাঁর ছবি রয়েছে, তাঁর নাম নেই। অন্য কারও নাম রয়েছে। সতর্কতার অভাবেই এমনটা হয়েছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।
জেলার বিভিন্ন ব্লকেই কমবেশি এমন ত্রুটিপূর্ণ সচিত্র পরিচয়পত্র পৌঁছেছে। তবে ত্রুটিপূর্ণ সচিত্র পরিচয়পত্রের সংখ্যাটা ঠিক কত, তার হিসেব নেই জেলা প্রশাসনের কাছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও) কাছে পরিচয়পত্র পৌঁছনোর পরই ত্রুটি ধরা পড়ে। তাঁরা বিষয়টি ব্লক স্তরে জানান। পরে ব্লক থেকে মহকুমা স্তরে খবর আসে। শুক্রবার থেকে সচিত্র পরিচয়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ফলে, জেলায় ত্রুটিপূর্ণ পরিচয়পত্রের সংখ্যাটা ঠিক কত, তা এখনই জানা যাবে না।”
জেলা প্রশাসন অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে, সচিত্র পরিচয়পত্রে ত্রুটি থাকলে তা দ্রুত সংশোধন করে দেওয়া হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের নির্বাচন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক বিশ্বরঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব ত্রুটি সংশোধন করে দেওয়া হবে।” জেলা স্তরে অভিযোগ না এলেও ব্লক স্তরে কিন্তু ইতিমধ্যে অভিযোগ জমা পড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতি দেখে জেলারই এক ব্লকের আধিকারিক মানছেন, “সচিত্র পরিচয়পত্র তৈরির সময় কিছু ত্রুটি হয়। অসতর্কতার ফলেই কিছু পরিচয়পত্র ‘মিস ম্যাচ’ হয়ে যায়। তবে অন্য বারের থেকে এ বার মিস ম্যাচের সংখ্যাটা মনে হচ্ছে একটু বেশি।”
মেদিনীপুর বিধানসভা এলাকার একটি বুথে যেমন ২০টিরও বেশি নতুন সচিত্র পরিচয়পত্র পৌঁছেছে। এর মধ্যে ছ’টিই ‘মিস ম্যাচ’ হয়েছে। এগুলো ফের সংশোধন করতে হবে। অন্য কয়েকটি ব্লকে একই পরিস্থিতি। কেশিয়াড়ির বিডিও অসীমকুমার নিয়োগী বলেন, “কিছু সংখ্যক পরিচয়পত্রে ‘মিস ম্যাচ’ হয়েছে। বিএলও’রা ত্রুটি চিহ্নিত করেছেন। ব্লক থেকে বিষয়টি মহকুমায় জানানো হয়েছে।” তাঁর আশ্বাস, “দ্রুত সংশোধিত পরিচয়পত্র ব্লকে এসে পৌঁছবে।” কেশপুরের বিডিও মহম্মদ জামিল আখতারেরও বক্তব্য, “কিছু পরিচয়পত্রে ‘মিস ম্যাচ’ হয়েছে। বিএলও’রা বিষয়টি জানাচ্ছেন। এমন পরিচয়পত্রের সংখ্যাটা ঠিক কত, আর ক’দিন পর তা জানা যাবে।” সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে ত্রুটিমুক্ত পরিচয়পত্র হাতে না পেলে নতুন ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন না। অবশ্য জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “সংশোধিত পরিচয়পত্র হাতে পেতে খুব বেশি হলে এক মাস সময় লাগবে। এর বেশি নয়।”
খসড়া ভোটার তালিকা আগেই প্রকাশিত হয়েছিল। ইতিমধ্যে জেলায় চূড়ান্ত ভোটার তালিকাও প্রকাশিত হয়েছে। খসড়া ভোটার তালিকার থেকে এ বার দেড় লক্ষেরও বেশি ভোটার বেড়েছে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায়। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, পশ্চিম মেদিনীপুরের ভোটার সংখ্যা ৩৯ লক্ষ ২৬ হাজার ২৫৬। খসড়া ভোটার তালিকায় ভোটারের সংখ্যা ছিল ৩৭ লক্ষ ৬৩ হাজার ৭৮। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ছিল ১৯ লক্ষ ৪৫ হাজার ৭১৫। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ছিল ১৮ লক্ষ ১৭ হাজার ৩৬৩। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, জেলায় পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ২০ লক্ষ ২৭ হাজার ৬৫৩। আর মহিলা ভোটার সংখ্যা ১৮ লক্ষ ৯৮ হাজার ৬৩। অর্থাৎ, সবমিলিয়ে ভোটার বেড়েছে ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ১৭৮ জন। শতাংশের হারে ৪.৩৪ শতাংশ। প্রতি বছর ২৫ জানুয়ারি জাতীয় ভোটার দিবস পালন করা হয়। সেই মতো আজ, শুক্রবারও দিনটি পালন করা হবে। নতুন ভোটারদের হাতে সচিত্র পরিচয়পত্র তুলে দেওয়া হবে। তবে মিস ম্যাচের জন্য নতুন ভোটারদের সকলে এখনই পরিচয়পত্র পাবেন না। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “কিছু সংখ্যক সচিত্র পরিচয়পত্রে ত্রুটি রয়েছে। আগামী দিনে যাতে এমন না হয়, তার জন্য সব রকম পদক্ষেপ করা হবে।” |
|
|
|
|
|