ট্রেভর জেমস মর্গ্যান কি আশা ও আশঙ্কার মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছেন? শনিবার পুণে এফসি-র বিরুদ্ধে খেলতে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগে লাল-হলুদ কোচের গলায় দু’রকম অভিব্যাক্তি ফুটে উঠল। আই লিগ স্বপ্নভঙ্গের মধ্যেও মর্গ্যানকে যখন নতুন আশার আলো দেখাচ্ছেন অ্যান্ড্রু বরিসিচ, তখন আশঙ্কার রক্তচাপ বাড়াচ্ছে উগা ওপারার অনুপস্থিতি। কার্ড সমস্যায় নাইজিরিয়ান স্টপারকে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ইস্টবেঙ্গলের জন্য সুখবর হল, বরিসিচ শুরু থেকেই খেলবেন।
আই লিগের আশা কার্যত শেষ ইস্টবেঙ্গলের। সেখানে বরিসিচের বোধনে লাল-হলুদে কি নতুন সূর্যোদয় হবে? উত্তরটা যাই হোক না কেন, পুণে ম্যাচের আগে পেন-মেহতাবদের নিশ্চয়ই অক্সিজেন জোগাবে মুম্বই এফসি-র সঙ্গে চার্চিল ব্রাদার্সের গোলশূন্য ড্র। পুণে থেকে স্বয়ং ইস্টবেঙ্গল কোচ ফোনে বললেন, “এই সুযোগটা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। যে করেই হোক তিন পয়েন্ট তুলতে হবে।”
মর্গ্যান মুখে বললেও কাজটা অবশ্য বেশ কঠিন। ইস্টবেঙ্গল যেখানে আই লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে খাদের কিনারায় এসে পড়েছে, সেখানে ডেরেক পেরেরার দল অঘটন ঘটানোর আশায় দিন গুনছে। লিগের পরিসংখ্যান দেখলেই অবশ্য সেটা স্পষ্ট ফুটে উঠবে। চার্চিল (১৬ ম্যাচে ৩৮), ইস্টবেঙ্গল (১৭ ম্যাচে ৩৩), ডেম্পো (১৬ ম্যাচে ৩৩) এবং পুণে (১৫ ম্যাচে ৩০)। অর্থাৎ সুভাষ ভৌমিকের সঙ্গে পেরেরার পার্থক্য আট পয়েন্টের (একটা ম্যাচ কম খেলে)। শনিবার তাই ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ব্যবধান কমানোর লক্ষ্যে বালেওয়াড়ি স্টেডিয়ামে ঝাঁপাবেন মোগারাও। |
চার্চিল ম্যাচের ধাক্কা সামলে মর্গ্যান অবশ্য অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী। ফুটবলারদের হারিয়ে যাওয়া মনোবলকে ফিরিয়ে আনতে পেন-চিডিদের দিনভর ভোকাল টনিক দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। চার্চিল ম্যাচের ডিভিডি বার বার করে দেখাচ্ছেন। খুটিয়ে খুটিয়ে বোঝাচ্ছেন, কোথায় গাফিলতি হচ্ছে। বেটোদের কাছে মূলত রক্ষণের দুর্বল সংগঠনের জন্যই হারতে হয় ইস্টবেঙ্গলকে। হয়তো সে কারণেই ওপারার অনুপস্থিতিতে শুক্রবার অনুশীলনে চার ডিফেন্ডার নওবা, সৌমিক, রাজু এবং অর্ণবকে নিয়েই সারাক্ষণ সময় কাটালেন মর্গ্যান। লাল-হলুদ কোচ বললেন, “চার্চিল ম্যাচের প্রথম গোলটা অফসাইড ছিল। কিন্তু পরের দু’টো জঘন্য খেয়েছি। ডিফেন্স দুর্বল হলে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা যায় না।”
পুণের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই আক্রমণের ছক কষছেন মর্গ্যান। আর এখন তো বরিসিচকেও পাওয়া যাবে শুরু থেকে। তবে প্রশ্ন একটাই, চিডি-বরিসিচ জুটি কি বিস্ফোরণ ঘটাতে পারবে? মর্গ্যান বলছিলেন, “বরিসিচ খুব বুদ্ধিমান ফুটবলার। গতির সঙ্গে ওয়ান টাচ ফুটবল খেলতে ভালবাসে। ওর সবচেয়ে বড় গুণ হল, খুব তাড়াতাড়ি মিশে যেতে পারে। এখানেও অল্প সময়ের মধ্যে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ফেলেছে। আমার মনে হয়, চিডির সঙ্গে খেলতে ওর কোনও অসুবিধা হবে না।”
শনিবারের ম্যাচে অর্ণব ছাড়া রক্ষণের হালহকিকৎ পুরো বদলে ফেললেও, মাঝমাঠে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। সেই পেন-মেহতাবের দু’পাশে থাকবেন হরমনজিৎ সিংহ খাবড়া ও কেভিন লোভো। তবে গোলকিপার কে হবেন, তা নিয়ে শুক্রবার রাত পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। শোনা যাচ্ছে মর্গ্যানের পছন্দ অভিজিৎ। কিন্তু গোলকিপার কোচ অতনু ভট্টাচার্য চাইছেন গুরপ্রীতকে। আসলে পুণের লং বল থিওরি এবং লম্বা চেহারার মোগাকে আটকাতে কোন দাওয়াই কাজে লাগবে, সেটাই এখন খুঁজছে লাল-হলুদ শিবির। তবে পাল্লা ভারী গুরপ্রীতেরই।
|