|
|
|
|
ত্রিপুরায় ভোটে নেই তৃণমূল, সরছেন কর্মীরা
নিজস্ব প্রতিবেদন |
দল ছাড়ছে ত্রিপুরার তৃণমূল কর্মীরা। কেউ ফিরছেন যেখান থেকে এসেছিলেন সেই কংগ্রেসেই। কেউ বা আগামী বিধানসভা নির্বাচনে টিকিটের জন্য নাম লেখাতে চাইছেন বিজেপিতে। আবার কেউ বা ত্রিপুরায় সদ্য আগত, মুলায়মের (বা বলা ভাল কিরণময় নন্দর) সমাজবাদী পার্টিতে।
আসলে সিপিএম-বিরোধী এই কর্মী-নেতারা অনেক আশা নিয়ে তৃণমূলে সামিল হয়েছিলেন। বাংলায় ৩৪ বছরের বাম অচলায়তনকে যিনি ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরা নির্বাচনেও বিরাট ভূমিকা নেবেন এই আশাতেই তাঁরা মূলত কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলের ছাতার তলায় এসেছিলেন। তাঁদের আশা ছিল, দেশের একমাত্র বামশাসিত রাজ্য, ত্রিপুরাতেও বামপন্থীদের কোণঠাসা করতে মমতা বড় ভূমিকা নেবেন। কিন্তু ভোটের মাত্র মাস দেড়েক আগে ত্রিপুরার ভোট ময়দান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়েছেন তাতে হতাশ তৃণমূল কর্মীরা।
রাজ্য তৃণমূলের সভাপতি মানিক দেব জানিয়েছেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁদের জানিয়ে দিয়েছেন, সামনেই পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোট। বাংলা-ভিত্তিক দলটি তা নিয়ে ব্যস্ত। সেই কারণেই এ বার ত্রিপুরার ভোট থেকে দল সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কী করছেন প্রাক্তন কংগ্রেসী মানিকবাবুরা? দল সভাপতি জানিয়েছেন, “আমরা কংগ্রেস বা সিপিএম-এর থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দলীয় কর্মীদেরও সেই মর্মে নির্দেশ দিয়েছি।” ভোটে কী করবেন? মানিকবাবুর উত্তর, “আমরা আপাতত বসে আছি।”
তবে মানিকবাবুরা বসে থাকুন বা না থাকুন, দলের নীচুস্তরের নেতা-কর্মীরা কিন্তু বলে নেই। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায় সেই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। সম্প্রতি ত্রিপুরা সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দিয়েছেন রাজ্যের প্রায় হাজার খানেক নেতা-কর্মী। এঁদের সিংহভাগই তৃণমূলের। সপা-য় যোগ দিয়েছেন প্রদেশ তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের প্রধান মুর্তজাউদ্দিন চৌধুরী, যুব নেতা গোপাল দাস। সঙ্গে গিয়েছেন তাঁদের বেশ কিছু অনুগামী। আশা করা হচ্ছে সপা-র প্রার্থী তালিকাতেও তাঁরা থাকবেন।
আসন্ন নির্বাচনে দলের ৪১ জন প্রার্থীর তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করেছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুধীন্দ্র দাশগুপ্ত। ৬০ সদস্যের বিধালসভায় ৪১টি কেন? বাকি আসনে তাঁরা কী প্রার্থী দেবেন না? বিজেপি সভাপতি বলেন, “ত্রিপুরায় এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে দল মোট ৫০ থেকে ৫৫টি আসনে প্রার্থী দেবে। বাকি ১০-১৫ জন প্রার্থীর নাম কিছু দিনের মধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হবে। সুধীন্দ্রবাবু জানিয়েছেন, ‘‘আসলে রাজ্যের কয়েকটি দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে কথাবার্তা এখনও চলছে। তা ছাড়া, তৃণমূলের বেশ কিছু ব্যক্তি বিজেপিতে যোগদানের ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। হয়তো তাঁদেরকেও কিছু আসন ছাড়তে হবে। তাই দল একই সঙ্গে সব প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি।’’ তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার কথায়, আসলে ভোটের সময় রাজনৈতিক কর্মীরা চুপ করে বসে থাকেন না, থাকতে পারেন না। কোনও একটা মঞ্চ তো দরকার। তাই কেউ কেউ পুরনো দল কংগ্রেসেই ফিরে যাচ্ছে। সিপিএমের বিরুদ্ধে জানপ্রাণ লাগিয়ে খাটবে। আসলে রাজ্যের সব অ-বাম রাজনৈতিক কর্মীরাই ছাইছে বাম জমানার অবসান। মমতার তৃণমূল নেই তো কী, সিপিএম-কে উৎখাতের চেষ্টা তো চলবেই। |
|
|
|
|
|