|
|
|
|
|
পয়লা থেকে অ্যানালগে দাঁড়ি |
সেট-টপ বক্স ছাড়া টিভি এ বার অন্ধকার
প্রভাত ঘোষ • কলকাতা |
|
জানুয়ারি ফুরোলেই কেব্ল টেলিভিশনে অ্যানালগ সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দিল চ্যানেল-মালিকদের সংগঠন। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কলকাতা মেট্রো-এলাকায় সেট-টপ বক্স ছাড়া টেলিভিশনে কোনও বেসরকারি চ্যানেল দেখা যাবে না। ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টার্স ফাউন্ডেশন (আইবিএফ)-এর এই সিদ্ধান্ত চিঠি মারফত কলকাতার ন’টি মাল্টি সিস্টেম অপারেটর (এমএসও)-কেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে আপত্তির কোনও সুর এখনও শোনা যায়নি। বস্তুত, বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে সরকার আর বিরোধিতার রাস্তায় হাঁটবে না বলেই মহাকরণের ইঙ্গিত।
অর্থাৎ, সব ঠিকঠাক চললে ফেব্রুয়ারিতেই কলকাতার টেলিভিশনে পুরোদস্তুর শুরু হয়ে যাবে ডিজিট্যাল জমানা। টেলিভিশন সম্প্রচারে সাবেক অ্যানালগ প্রযুক্তির পরিবর্তে ডিজিট্যাল ব্যবস্থা চালু করতে কেন্দ্র অনেক আগে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ পাঠিয়েছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেট-টপ বক্সের ‘অপ্রতুল’ জোগানের যুক্তি দেখিয়ে এত দিন তা কার্যকর করতে দেয়নি। বিরোধিতা করে অপারেটরদের একাংশও। তাই দীর্ঘ টানাপোড়েন চলেছে। একাধিক বার অ্যানালগ সম্প্রচারে ইতি টানার সময়সীমা ধার্য করেও পিছোতে হয়েছে।
তবে এ বার পরিস্থিতি ভিন্ন। আইবিএফ স্থির করেছে, প্রতিটি চ্যানেলের সদর থেকেই অ্যানালগ সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হবে। আইবিএফের সভাপতি মনজিৎ সিংহ মুম্বই থেকে টেলিফোনে বলেন, “বর্ধিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত, ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে জাতীয় চ্যানেলগুলো আর অ্যানালগ সম্প্রচার করবে না। রাজ্য সরকারের করণীয় কিছু নেই। কারণ, চ্যানেলগুলোর সদর থেকেই অ্যানালগ সিগন্যাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফলে সেট-টপ বক্স ছাড়া ছবি দেখা যাবে না।” এমনকী, পে-চ্যানেলের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা-সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ‘ফ্রি’ চ্যানেলেরও অ্যানালগ সিগন্যাল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মনজিৎ। তবে দূরদর্শনের মতো সরকারি চ্যানেল দেখতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।
এবং মহাকরণের তরফেও বাধাদানের ইঙ্গিত এখনও নেই। রাজ্যের পুর-নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি। সরকারের এক মুখপাত্রের দাবি: কেব্ল-গ্রাহকেরা সেট-টপ বক্স কেনার অনেক সময় পেয়েছেন। বাজারে এখন যন্ত্রটির বিশেষ অভাবও নেই। তাই সরকার আর আপত্তি করতে চায় না।
দিল্লির পরিকল্পনা হল, আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে পনেরো রাজ্যের ৩৮টি শহরে সেট-টপ বক্স আবশ্যিক করা। দেশে টেলিভিশন সম্প্রচারকে সম্পূর্ণ ‘ডিজিটাইজড’ করার লক্ষ্যে যা দ্বিতীয় ধাপ। তার আগে প্রথম ধাপের কাজ, অর্থাৎ কলকাতা-মুম্বই-দিল্লি-চেন্নাইয়ে ডিজিট্যাল অ্যাকসেস সিস্টেম (ড্যাস) বলবৎ করে ফেলতে চাইছে কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক। এ নিয়েই চলতি সপ্তাহে মুম্বইয়ে বৈঠকে বসেছিল আইবিএফ। মনজিৎ বলেন, “সারা দেশে টেলিভিশন সম্প্রচার সংক্রান্ত আইন সংসদে পাশ হয়েছে। সেই অনুসারে কেন্দ্র নির্দেশ দিয়েছিল, ২০১২ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সব চ্যানেল ডিজিট্যাল করতে হবে। তা মানা যায়নি। এখন আর অপেক্ষা করা যাবে না।”
অতএব টানাপোড়েনে এ বার অবসানের আশা। “চ্যানেলগুলোর উপরে তো রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেই। দিল্লি, মুম্বই বা সিঙ্গাপুর থেকে সিগন্যাল বন্ধ করে দিলে সরকার আটকাবে কী ভাবে?” মন্তব্য উত্তর কলকাতার এক এমএসও-কর্তার। |
|
|
|
|
|