|
|
|
|
গ্রামে গিয়ে সমস্যা শুনুন: রাহুল
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
রাজ্য দিল্লির কাছে আসবে না, দিল্লিকেই যেতে হবে রাজ্যের কাছে। রাজধানীতে বসে বড়কর্তার মতো হাবভাব না করে প্রদেশ নেতৃত্বের কথা শুনতে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিভিন্ন রাজ্যে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিলেন দলের নতুন সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী।
২৪ নম্বর আকবর রোডে কংগ্রেস সদর দফতরে এসে গত কাল আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন রাহুল। পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সাংগঠনিক নেতাদের ‘বিগ ব্রাদার’-এর মতো আচরণ বন্ধ করতে হবে, বিশেষ করে যাঁরা বিভিন্ন রাজ্যের দায়িত্বে রয়েছেন। রাজ্যের বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রদেশ কংগ্রেস নেতা বা রাজ্যের মন্ত্রীদের দিল্লিতে ডাকার বদলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেই যেতে হবে রাজ্যে। আঞ্চলিক নেতৃত্বের কথা মন দিয়ে শুনতে হবে। প্রার্থী বাছাই থেকে শুরু রাজ্যের বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় নেতৃত্বের মতামতকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।
রাহুল-ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানান, প্রদেশ নেতৃত্বের তরফে হাইকম্যান্ডের নেতাদের সম্পর্কে বিস্তর অভিযোগ এসেছে রাহুলের কাছে। এমনকী মধ্যপ্রদেশের এক নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁকে সম্প্রতি এ-ও বলেছেন যে, কোনও বিষয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেস সদর দফতরে এসে রাজ্যের নেতাদের কার্যত গণেশ প্রদক্ষিণের মতো কেন্দ্রীয় নেতাদের পিছনে ঘুরতে হয়। এমন মনোভাবের পাশাপাশি আঞ্চলিক নেতৃত্বকে বাড়তে না দেওয়া, রাজ্যের দুই নেতাকে পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দেওয়ার মতো অভিযোগও রয়েছে। কিন্তু এ বার এই সমস্ত রেওয়াজে ইতি চাইছেন রাহুল। দলের নেতাদের তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, স্থানীয় আবেগ ও স্থানীয় নেতৃত্বের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে হবে। এবং তা সুসংহত ভাবে না করা পর্যন্ত আঞ্চলিক শক্তিগুলিকে পর্যুদস্ত করা অসম্ভব।
শুধু মুখোমুখি বৈঠক নয়, হাইকম্যান্ডের সঙ্গে আঞ্চলিক নেতৃত্বের দূরত্ব ঘোচাতে প্রযুক্তিরও সাহায্য নেওয়ার কথা বলেছেন রাহুল। জয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের সাংগঠনিক ঘোষণাপত্রেই বলা হয়েছিল যে, প্রদেশ ও জেলা স্তরের কংগ্রেস কার্যালয়গুলিতে ইন্টারনেটের বন্দোবস্ত রাখতে হবে। সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে রাহুলকে পরামর্শ দিয়েছেন স্যাম পিত্রোদা, যাঁকে নব্বইয়ের দশকে গোটা দেশে টেলি-যোগাযোগ বিস্তারের কাজে লাগিয়েছিলেন রাজীব গাঁধী। পিত্রোদার পরামর্শ মেনে প্রদেশ ও জেলা কংগ্রেসের দফতরগুলিতে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের ব্যবস্থাও করা হবে, যাতে প্রয়োজন মতো রাজ্য এমনকী জেলার নেতাদের সঙ্গেও হাইকম্যান্ডের নেতারা আলোচনা করতে পারেন। রাহুল আগামিকাল যুব কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। তিনি নিজে যুব নেতা হিসেবেই রাজনৈতিক জীবন শুরু করে কালক্রমে কংগ্রেসের তরুণ প্রজন্মের মুখ হয়ে উঠেছেন। মনে করা হচ্ছে, আগামিকাল রাহুল যুব নেতাদের বলবেন, সহ-সভাপতি পদে বসলেও তিনি তরুণ প্রজন্মের পাশে আছেন।
রাহুলেরই দাওয়াই মেনে শিক্ষিত ও যুব সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছনোর প্রস্তুতি শুরু করেছে সরকারও। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে সরকারের নীতি, কর্মসূচি ও সিদ্ধান্ত সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে শীঘ্রই ‘ডিজিট্যাল ভলেন্টিয়ার’ হিসেবে কিছু তরুণ-তরুণীকে নিয়োগ করা হবে। |
|
|
|
|
|