|
|
|
|
অযোগ্যদের সরাতে চান রাজনাথ
দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় • নয়াদিল্লি |
কঠিন পরীক্ষা সামনে। সামনেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার পরে রয়েছে লোকসভা। তাই যোগ্যতা বিচার করে নিজের ‘টিম’ তৈরি করতে চান নতুন বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ। তা করতে গিয়ে নিতিন গডকড়ীর পছন্দের অনেককেই সরাতে পারেন তিনি।
রাজনাথ শিবিরের বক্তব্য, টিমে নতুন মুখ আনার বাহানায় এমন অনেককে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছিল, যাঁরা গত তিন বছরে দলের সংগঠন মজবুত করতে পারেননি। যেমন অনুরাগ ঠাকুর।
গডকড়ী তাঁকে দিয়েছিলেন যুবমোর্চার দায়িত্ব। রাজ্যে-রাজ্যে যুবকদের সংগঠিত করে দলের ভিত তৈরির দায়িত্ব ছিল তাঁর। একটি যাত্রা ছাড়া আর কোনও বড় কাজ করেননি অনুরাগ। উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে যুব সংগঠনের উপরে
|
রাজনাথ সিংহ |
অনেকটা ভরসা করা হয়েছিল। সেখানেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। মহিলা মোর্চার দায়িত্ব গডকড়ী দিয়েছিলেন টিভি অভিনেত্রী স্মৃতি ইরানির হাতে।
দলের এক নেতার কথায়, স্মৃতি দলের তারকা প্রচারক। তাঁর নামে সভায় লোকও হয়েছে। কিন্তু প্রধান বিরোধী দলের মহিলা সংগঠন চালাতে অনেক বেশি উদ্যোগী হওয়া উচিত ছিল স্মৃতির। বিভিন্ন রাজ্যে মহিলাদের সংগঠন দাঁড় করাতে পারেননি তিনি।
সংগঠনের কাজে গডকড়ী সবচেয়ে বেশি ভরসা করতেন ওড়িশার নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধানের উপরে। কর্নাটক, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের ভার দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সব রাজ্যেই মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। উত্তরাখণ্ডে ক্ষমতা খোয়াতে হয়েছে দলকে। ঝাড়খণ্ডে জোট ভেঙেছে শিবু সোরেনের সঙ্গে। কর্নাটকে দল ভেঙে বেরিয়ে গিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা।
এমনকী ধর্মেন্দ্র প্রধানের নিজের রাজ্য ওড়িশাতে নবীন পট্টনায়েককে এনডিএ জোটে ফেরানোর ব্যাপারে অগ্রগতি হয়নি।
রাজনাথ যখন এর আগে সভাপতি ছিলেন, তখন দিল্লিতে বিজেপি-র সদর দফতরের দায়িত্বে ছিলেন শ্যাম জাজু। তাঁর সময়েই বিজেপি দফতর থেকে দু’কোটি টাকা চুরি হয়।
অভিযোগের আঙুল উঠেছিল জাজুর দিকেও। কিন্তু গডকড়ী জমানায় তাঁকে সচিবের পদ দেওয়া হয়। চন্ডীগড়ের পুননির্বাচনের দায়িত্বও পান তিনি। সেই ভোটে ভরাডুবি হয় বিজেপি-র। সাধারণ সম্পাদক পদে মহিলা রাখার তাগিদে নিয়ে আসা হয় রাজস্থানের নেত্রী কিরণ মহেশ্বরীকে। কিন্তু তিন বছরে কোনও ভাবেই তিনি দাগ কাটতে পারেননি।
দিল্লির নেতা বিজয় গোয়েলকে অসমের ভার দিলেও সেই রাজ্যে জেতেনি বিজেপি। গোয়েলের সঙ্গে সংঘাতের জন্য মাঝপথে ময়দান ছেড়ে চলে যান বরুণ গাঁধী। উত্তরপ্রদেশের প্রবীণ নেতা কলরাজ মিশ্রও দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।
উপযুক্ত কৌশল রচনা করতে পারেননি সঙ্ঘ ও দলের মধ্যে যোগসূত্রকারী রামলাল। মহারাষ্ট্র থেকে বিনয় সহস্রবুদ্ধকে সহযোগী করে এনেছিলেন রামলাল। কিন্তু তা সত্ত্বেও সঠিক সময়ে সঠিক কৌশলের পরামর্শ দিতে পারেননি সভাপতিকে।
এ বছরেই কর্নাটক, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে নির্বাচন। তারপর লোকসভা। এই রাজ্যগুলিতে জয় ছিনিয়ে লোকসভার হাওয়া তোলাই এখন চ্যালেঞ্জ রাজনাথের সামনে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্দের ‘গেরুয়া-সন্ত্রাস’ মন্তব্যের প্রতিবাদে আজই যন্তর-মন্তরে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়। ফের সভাপতি হওয়ার পর এটাই ছিল রাজনাথের প্রথম জনসভা। কিন্তু সভাতে লোক ছিল হাতে গোনা। যা দেখে কিছুটা হতাশ রাজনাথ। এই ফিকে সাড়ার অর্থ কী? সাংগঠনিক দুর্বলতা না কি রাজনাথের প্রতি অনীহা? প্রশ্ন ঘুরছে বিজেপি মহলে। |
|
|
|
|
|