|
|
|
|
জনমত সমীক্ষার অঙ্কে এগিয়ে বিজেপি, মোদী
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
এবিপি নিউজ-এসি নিয়েলসেনের জনমত সমীক্ষা কংগ্রেসের নতুন কাণ্ডারীর জন্য সুখবর আনল না।
সমীক্ষা বলছে, এখন ভোট হলে ডাহা ফেল করবে ইউপিএ। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রাহুল গাঁধীকে পিছনে ফেলে দেবেন নরেন্দ্র মোদী। সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, এখন ভোট হলে ইউপিএ পাবে মাত্র ২২ শতাংশ ভোট। অন্য দিকে, ৩৯ শতাংশ ভোট পাবে এনডিএ। এখন প্রধানমন্ত্রীর পদে মোদীকে পছন্দ ৪৮ শতাংশের। রাহুল পেয়েছেন ১৮ এবং মনমোহন সিংহ মাত্র ৭ শতাংশের ভোট।
কিন্তু এই সমীক্ষার সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। এবিপি নিউজ-এসি নিয়েলসেন সমীক্ষাটি চালায় ১০ থেকে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে। তখনও রাহুল আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসের হাল ধরেননি। নিতিন গডকড়ীকে হটিয়ে রাজনাথ সিংহও হননি বিজেপি সভাপতি। তখনও রয়ে গিয়েছে দিল্লির গণধর্ষণের পরে মানুষের তীব্র ক্ষোভের রেশ। সমীক্ষার বক্তব্যকে খণ্ডন করতে এই যুক্তিগুলিই এ দিন দিয়েছেন রাজীব শুক্ল, মণীশ তিওয়ারিরা। বলেছেন, নরেন্দ্র মোদী তখন সবে গুজরাত জয় করেছেন। সেই ঘটনার প্রভাবও পড়েছে সমীক্ষার উপরে। তাঁরা আরও বলছেন, এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে শহরাঞ্চলে (২৮টি শহরের ৮৮৪২ জনের সঙ্গে কথা বলেছে এবিপি নিউজ-এসি নিয়েলসেন)। কংগ্রেস নেতা রশিদ আলভির বক্তব্য, “সমীক্ষা রিপোর্টে শহরের মানুষের মত নেওয়া হয়েছে। অণ্ণা হজারের আন্দোলন ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার শহরে বেশি প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু গ্রামের মানুষ কেন্দ্রে ইউপিএ শাসনের একাধিক সিদ্ধান্তের সুফল পেয়েছে।” |
যদি এখন ভোট |
কে প্রধানমন্ত্রী |
কোন দল |
মোদী ঘোষিত প্রার্থী হলে |
নরেন্দ্র মোদী ৪৮
|
এনডিএ ৩৯
|
৪৯ |
১৭ |
ইউপিএ ২২ |
|
রাহুল গাঁধী ১৮
|
মনমোহনের কাজ
|
খুব খারাপ ১৯ |
খারাপ ১৭ |
ভাল ২০ |
|
মনমোহন সিংহ ৭
|
* সব হিসেব শতাংশে।
• ১০-১৭ জানুয়ারি ২০১৩-এর মধ্যে
২৮টি শহরে ৮৮৪২ জনের সঙ্গে কথা বলে
এবিপি নিউজ-এসি নিয়েলসেন এই সমীক্ষা চালিয়েছে। |
|
|
|
সমীক্ষার পরের সপ্তাহে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে বলেও দাবি করেছেন কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের যুক্তি, রাহুল গাঁধীকে দলের ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। যে সব কারণে জন-অসন্তোষ আছড়ে পড়েছিল দিল্লির রাজপথে, তার কারণগুলিকে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করে প্রশমনের প্রক্রিয়াও শুরু করেছে দল এবং সরকার। মহিলাদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন ও ভর্তুকি মূল্যে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে সরকার।
স্বাভাবিক ভাবেই সমীক্ষা রিপোর্টে উচ্ছ্বসিত বিজেপি। কারণ, সব দিক থেকেই এগিয়ে তারা। এমনকী, মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে ভোটে গেলে কী করবেন সেই প্রশ্নের জবাবে ৪৯ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তাঁরা বিজেপিকে ভোট দেবেন। মাত্র ১৭ শতাংশ কংগ্রেসের পক্ষে। এমন একটা সময়ে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, যখন দুর্নীতির দায়ে দলীয় সভাপতির পদ থেকে নিতিন গডকড়ীর অপসারণ নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে বিজেপি। তাই বিজেপি নেতা শাহনওয়াজ হুসেন বা আরএসএস মুখপাত্র রাম মাধব বলেছেন, দেশের এই মনোভাব জানতে সমীক্ষার প্রয়োজন ছিল না। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মানুষের অসন্তোষ কতটা, তা সাম্প্রতিক ঘটনাগুলিতে টের পাওয়া গিয়েছে।
অবশ্য রাজনীতির কারবারিদের মতে, যে হেতু রাজনীতি সতত পরিবর্তনশীল, তাই লোকসভা ভোটের সময় অঙ্ক কোথায় দাঁড়াবে, ফলাফলই বা কী হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষের প্রতিফলন সমীক্ষায় ঘটেছে ঠিকই। কিন্তু এই সমীক্ষার বাইরেও একটি রাজনীতি রয়েছে। সেই রাজনীতির অন্যতম বিষয় নরেন্দ্র মোদীকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে। বিজেপি এখনও মোদীকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরতে পারেনি। কারণ, তা করলে নীতীশ কুমার এনডিএ ছাড়বেন। আবার তৃণমূলের মতো নতুন শরিকও পেতে অসুবিধা হবে বিজেপির।
বিজেপি নেতাদের একাংশ অবশ্য মনে করছেন, এনডিএ-র সমীকরণ নিয়ে এখন থেকেই চিন্তার প্রয়োজন নেই। মোদীকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করে যদি তাঁরা আসন অনেক বাড়াতে পারেন, তা হলে ভোটের পর শরিক জুটে যাবে। দলের এক নেতার কথায়, এই রিপোর্ট রাজনাথের বেশি করে পড়া উচিত। যদি তিনি দলে ঐক্যের বাতাবরণ তৈরি করতে পারেন, তা হলে এই সমীক্ষা রিপোর্টকে সত্যি প্রমাণ করে দেখানো কঠিন হবে না। |
|
|
|
|
|