মোবাইল খরচ বাড়লেও কমবে না গ্রাহক
মোবাইল ফোন ব্যবহারের খরচ বাড়লেও গ্রাহক সংখ্যার উপর তা বিশেষ প্রভাব ফেলবে না বলেই মনে করছেন টেলিকম বিশেষজ্ঞরা। বরং তাঁদের দাবি, টেলিকম শিল্পের এখন যা অবস্থা, তাতে মাসুল বাড়ানো ছাড়া কোনও উপায় নেই সংস্থাগুলির। সকলেই আর্থিক সঙ্কটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। এর থেকে বাঁচতেই দীর্ঘকাল পরে মাসুল বৃদ্ধির পথে হাঁটছে তারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রবণতা এখন চলবে।
এয়ারটেল, আইডিয়া-সহ নানা সংস্থা ঘুরপথে পরিষেবার খরচ বাড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, সরাসরি মাসুল হার বাড়ালে গ্রাহকদের কি ধরে রাখতে পারবে সংস্থাগুলি? কারণ সর্বনিম্ন মাসুল হারের দেশগুলির মধ্যে ভারত অন্যতম। গ্রাহকেরাও মাসুল সচেতন।
উপদেষ্টা সংস্থা কেপিএমজি-র পার্টনার তথা টেলিকম শাখার প্রধান কর্তা রোমেল শেট্টি বলছেন, “সরাসরি মাসুল হার বাড়তেই পারে। টেলিকম শিল্পের স্বার্থে কাউকে না কাউকে এ ধরনের সাহসী সিদ্ধান্ত নিতেই হত।” অবশ্য তাঁর বক্তব্য, মাসুল হার খুব বেশি বাড়বে না। গ্রাহকদের উপরও তেমন চাপ পড়বে না। বরং ব্যক্তিগত ভাবে কোনও গ্রাহকের খরচ যতটা বাড়বে, সার্বিক ভাবে তার চেয়ে বহু গুণ বেশি আয় হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থার। সংস্থার আর্থিক স্বাস্থ্য ভাল হলে উন্নত পরিষেবার বিষয়টিও নিশ্চিত করা যাবে। তবে বাজার অর্থনীতির নিয়ম মেনে কোনও সংস্থাই ইচ্ছে মতো চড়া মাসুল নিতে পারবে না বলেই তাঁর আশা।

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ২০০৮-এ প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজার আমলে যে-সব সংস্থাকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে অনেকেই এই শিল্পে নতুন ছিল। দ্রুত বাজার ধরার তাগিদে কেউ কেউ মাসুল হার অনেক কমিয়ে দেয়। শুরু হয় ‘প্রাইস-ওয়ার’ বা মাসুল-যুদ্ধ। ফলে আয়-ব্যয়ের ভারসাম্যে চাপ পড়লেও গ্রাহক ধরে রাখতে পুরনোদেরও সেই পথে সামিল হতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মাসুল হার স্বাভাবিকের চেয়ে কম রেখে ব্যবসা চালানো কার্যত অসম্ভব। ফলে গোটা টেলিকম শিল্পে তার প্রভাব পড়ে। টান পড়ে পরিষেবায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, আগে স্পেকট্রাম বরাদ্দের ক্ষেত্রে গ্রাহক সংখ্যা অন্যতম মাপকাঠি ছিল। ফলে ক্ষতি স্বীকার করেও গ্রাহক টানার লক্ষ্যে মাসুল-যুদ্ধে পা মেলাতে হয়েছিল সকলকেই।
এ বার ছবিটা অন্য রকম দাবি করে শেট্টি বলেন, এখন টেলিকম ব্যবসায় যে-কয়েকটি সংস্থা রয়েছে, তার মধ্যে বেশিরভাগই পুরনো। এবং দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসায় টিকে থাকতে তারা সকলেই মাসুল বাড়াতে চায়। অন্য সংস্থা গ্রাহক টেনে নেবে, এই আতঙ্ক থেকে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা এখন কার্যত নেই। অন্য সংস্থার হাতছানি না-থাকলে গ্রাহকের সামনেও অন্য সংস্থাকে বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকছে না।
শেট্টি বলেন, “এককালীন স্পেকট্রাম ফি ছাড়া থ্রি-জি ও ফোর-জি স্পেকট্রাম বাবদ টেলিকম সংস্থাগুলির বিপুল খরচ হয়েছে। কিন্তু এখনও বাজার সে ভাবে বাড়েনি। উপরন্তু, গ্রামাঞ্চলের বাজার ধরতে চাইলেও, সেখানে আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য রাখতে পারছে না তারা।” তিনি এবং নির্মল ব্যাং ইক্যুইটিজ-এর বিশেষজ্ঞ হরিৎ শাহের মতে, আসন্ন নিলামে স্পেকট্রাম জিততে ফের প্রচুর টাকা দরকার। তাই তার আগে আয় বাড়ানো সংস্থাগুলির পক্ষে একান্ত জরুরি।
তবে সম্প্রতি টানা কয়েক মাস গ্রাহক সংখ্যা কার্যত বাড়েনি। টেলিকম শিল্পমহল সূত্রে খবর, এ জন্য দায়ী সেই গ্রাহক সংখ্যার মাপকাঠি বদল। স্পেকট্রাম পাওয়ার ক্ষেত্রে আগে বেশি গ্রাহক দেখানোর জন্য অনেকেই তাদের ‘নিষ্ক্রিয়’ গ্রাহকদের সংযোগ বাতিল করত না। কিন্তু এখন মাপকাঠি বদলে যাওয়ায় ক’টি সংযোগ ঠিক মতো চালু, তার উপরই গুরুত্ব দিচ্ছে টেলিকম শিল্প।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.