দুধ, নারকেল দিয়ে তো পিঠে করেন অনেকেই। কিন্তু চালের পুলির মধ্যে যদি ভরে দেওয়া যায় বোনলেস চিকেন বা কাঁচকলার রেসিপি, তবে তা চেখে দেখতে তো আসতেই হবে বর্ধমান উৎসবে।
আজ, শুক্রবার বর্ধমান উৎসব প্রাঙ্গনে রয়েছে পিঠে পুলি প্রতিযোগিতা। তাতে ক্রেতাদের যেমন স্বল্পমূল্যে বিভিন্ন পিঠে চেখে দেখার সুযোগ মিলবে, তেমনই প্রতিযোগীরাও ক্রেতাদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারবেন নিজেদের পিঠের মূল্যায়ণ। প্রতিযোগিতার ফলাফল জানানো হবে ২৬ জানুয়ারি, সন্ধ্যেয়।
উৎসব কমিটি সূত্রে জানানো হয়েছে, মেলা প্রাঙ্গনে এ বার আর রান্না করার ঝামেলা থাকছে না। বাড়ি থেকেই রান্না করে আনতে হবে অন্তত ৩০টি রান্না করা পিঠে, পাটিসাপটা বা পুলি। তার সংখ্যা অন্তত ৩০টি। উৎপাদন খরচ দিয়ে দেবে উৎসব কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ পুরস্কার না পেলেও ক্ষতি নেই। হাতে আসবে কিছু টাকাও। একটি পিঠে কৌটোয় ভরে প্রতিযোগীর নাম লিখে দিতে হবে বিচারকদের কাছে। প্রতিযোগিতার শেষে কৌটো ফেরত পেয়ে যাবেন তাঁরা। |
কিন্তু মা-ঠাকুমার তৈরি পিঠে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে যাদের, তাঁরা সাবধান। ফাঁকিবাজি চলবে না পিঠে রান্নায়। মৌলিক, নিজস্ব রন্ধনপ্রণালীটি কাগজে লিখে সবশুদ্ধ পিঠের সঙ্গে জমা দিতে হবে বিচারকদের কাছে। প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তা গৌতম তা বলেন, “রন্ধন প্রণালী প্রথমে কাগজে লিখে জমা দিতে হবে। পরে আলাদাভাবে প্রতিযোগীর কাছে জানতে চাওয়া হবে, রেসিপিটা কী? প্রতিযোগীর উত্তর থেকেই বোঝা যাবে পিঠে রান্নায় ঠাকুমার টুকলি করেছেন কিনা! আমাদের ধুরন্ধর পিঠে বিশেষজ্ঞদের সেটুকু বুঝে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।”
প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জেতার টিপ্সও বাতলে দিচ্ছেন গৌতমবাবুরাই। জানালেন, গড়পড়তা পিঠের মধ্যে যদি একটু নতুন স্বাদ পাওয়া যায়, তাহলেই কিস্তিমাত। দুধ-নারকেলের বদলে অন্য কিছু দিয়ে পুর হতে পারে। এমনকী কাঁচকলার রেসিপি থেকে বোনলেস চিকেনও চলবে। পুলি পিঠে দুধের বদলে সেদ্ধ করতে পারেন মাংসের ঝোলেও। কিন্তু শেষবিচারে খেতে ভাল হতে হবে।
সবই হল, কিন্তু এই প্রতিযোগিতার তেমন প্রচার নেই বলে আক্ষেপ গৌতমবাবুর। তাঁর কথায়, “প্রচারের এত অভাব! যত দর্শক আসেন, তত প্রতিযোগী আসেন না। এছাড়া এই প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়াটাও ব্যয়বহুল। প্রতিযোগীর খরচের চাপ কমাতে আমরাই প্রত্যেকের সব পিঠে কিনে নেব বলে ঠিক করেছি। দর্শকেরা তা স্টল থেকে কিনে খেতে পারবেন। উৎসবের স্বেচ্ছাসেবীদেরও টিফিন হিসেবেও দেওয়া হবে ওই পিঠে বা পাটিসাপটা। তাঁরাও পিঠের স্বাদ ও মান নিয়ে মন্তব্য করবেন।”
গৌতমবাবুর খেদ সত্ত্বেও উৎসবকে ঘিরে উত্তেজনার পারদ কিন্তু চড়ছেই। দর্শকেরাও এসে খোঁজ নিচ্ছেন, প্রতিযোগিতার। গতবার এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিলেন প্রায় ৪০ জন। এবার সেই সংখ্যাটা বাড়বে বলেই আশা কর্তৃপক্ষের। |