মাস খানেক আগে বিবেক মেলার সময়ে ‘আমরা-ওরা’র অভিযোগ তুলেছিল সিপিএম এবং কংগ্রেস। কাটোয়া ব্লক কৃষিমেলাকে ঘিরে ফের অসৌজন্যের অভিযোগ উঠল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে প্রশাসনের কর্তারা মুখ খুলতে চায়নি। তবে তৃণমূল নেতারা প্রশাসনের পাশে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূল নেতাদের দাবি, প্রশাসন কোনও অসৌজন্য দেখায়নি।
কাটোয়া মহকুমার পাঁচটি ব্লকের মধ্যে চারটিতে কৃষিমেলা হচ্ছে। কয়েক দিন আগে কাটোয়ায় মহকুমা কৃষিমেলা অনুষ্ঠিত হয়। কাটোয়া ১ ব্লক তাতে সাহায্য করায় আর ব্লক কৃষিমেলা করছে না। বৃহস্পতিবার কাটোয়া ২ ব্লকের মেঝিয়ারিতে সতীশচন্দ্র স্কুলে কৃষিমেলা হয়। আজ, শুক্রবার মঙ্গলকোটের কাশেমনগরে ও কেতুগ্রাম ২ ব্লকের গঙ্গাটিকুড়িতে কৃষিমেলা শুরু হচ্ছে। সিপিএমের অভিযোগ, এই সব মেলা তৃণমূলের ‘দলীয় অনুষ্ঠান’ হয়ে উঠেছে। তাই কোথাও স্কুল বন্ধ করে, আবার কোথাও কৃষকদের না জানিয়েই কৃষিমেলা হচ্ছে। কংগ্রেসেরও দাবি, ওই সব ব্লকের কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলিকে এই কর্মসূচি থেকে ব্রাত্য করে রেখেছে ব্লক প্রশাসন। |
সিপিএম পরিচালিত কাটোয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হরিনারায়ণ সামন্তের অভিযোগ, “কৃষিমেলা হচ্ছে, অথচ পঞ্চায়েত সমিতি পুরো অন্ধকারে রয়েছে। কৃষি কর্মাধ্যক্ষকে একটি চিঠি পর্যন্ত পাঠানোর সৌজন্য দেখায়নি প্রশাসন।” ব্লক কৃষিমেলার প্রচারপত্রে কেতুগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুলেখা মাঝি ও সহ-সভাপতি মৃণালকান্তি সিংহের নাম রয়েছে। অথচ আমন্ত্রণপত্রে তাঁদের নাম নেই বলে ক্ষোভ মৃণালবাবুর। তাঁর অভিযোগ, “এটা তো মান-সম্মানের প্রশ্ন। আমাদের কিছু না জানিয়ে প্রচারপত্র ছড়িয়ে বোঝানো হল, সবাইকে নিয়ে কৃষিমেলা হচ্ছে। অথচ আমাদের অসম্মান করা হল।”
কংগ্রেসের দাবি, বিবেক মেলার মত কৃষিমেলাতেও তাদের ব্রাত্য করছে প্রশাসন। তাদের অভিযোগ, সিপিএমের মতো তৃণমূলও প্রশাসনকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। তাই তৃণমূল নেতারা যা বলছেন, সেটাই করতে বাধ্য হচ্ছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। মঙ্গলকোটের কংগ্রেস পরিচালিত কৈচর ২ পঞ্চায়েতের প্রধান এনামুল হক শেখের অভিযোগ, “এই মেলা নিয়ে আমাদের কেউ কিছু সরকারি ভাবে জানায়নি। লোকমুখে শুনেছি। তবে কোথায় হচ্ছে জানি না।” কেতুগ্রাম ২ ব্লকে কেতুগ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান তৈবুর রহমান মুন্সি জানান, তাদের নামমাত্র একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “এই মেলাকে ঘিরেও একটা অসৌজন্যের বাতাবরণ তৈরি করা হয়েছে।” সিপিএম পরিচালিত কেতুগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমর মাঝির বক্তব্য, “আমাদের তো কমিটিতেই রাখেনি। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত আমাকে আমন্ত্রণও জানায়নি।”
এ নিয়ে ব্লক কৃষিমেলার সভাপতি বা বিডিও-রা এবং কমিটির আহ্বায়ক তথা সহ-কৃষি অধিকর্তারা (প্রশাসন) কোনও কথা বলতে রাজি নন। তবে প্রশাসনের পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল নেতারা। দলের মঙ্গলকোটের ব্লক নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী থেকে কেতুগ্রামের নেতা রত্নাকর দে-র বক্তব্য, “প্রশাসনের উদ্যোগে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মেলা হচ্ছে। তা দেখেই বিরোধীরা অপপ্রচার শুরু করেছে।” |