৫ দিনে মালদহ শহরে ১০ মন্দিরে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকার গয়না চুরির ঘটনায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। যে ১০ মন্দিরে চুরি হয়েছে তার মধ্যে একটি রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের সদরঘাটের বাড়ির সামনে। রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর পার্টি অফিস সংলগ্ন কালীতলা বুড়াকালী মন্দিরেও চুরির ঘটনা ঘটেছে। চার দিন ধরে দুষ্কৃতীরা মালদহ শহরে একের পর মন্দিরে হানা দিয়ে সোনা, রুপার অলঙ্কার চুরি করলেও পুলিশ একটি মন্দির চুরির ঘটনার কিনারা করতে পারেনি। এ দিকে পর পর মন্দিরে চুরির ঘটনায় পুলিশ কিনারা করতে না-পারায় বেজায় চটে গিয়েছেন জেলার দুই মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ও কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী।
পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “একের পর এক মন্দিরে চুরি হচ্ছে। অথচ এপুলিশ একটি চুরির কিনারা করতে পারেনি। যে সমস্ত পুলিশ শহরের দায়িত্বে রয়েছে তারা কি করছে? পর পর মন্দিরে চুরির পিছনে কোন ষড়যন্ত্র আছে কি না তা পুলিশ সুপারকে দেখতে বলেছি।” রাজ্যের নারী ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, আমার বাড়িতে পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। অথচ বাড়ির সামনের মন্দিরের তালা ভেঙে সোনা, রুপোর গয়না চুরি করে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। শহরে নজরদারি বাড়ানোর জন্য পুলিশ সুপারকে বলেছি।”
এই ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে মালদহ শহরে। এ বিষয়ে মালদহ বার অ্যসোসিয়েশনের প্রবীণ আইনজীবি অসিত বসু বলেন, “মালদহের আইন শৃঙ্খলা যেন ভেঙে পড়েছে। এরই সূযোগে দুষ্কৃতীরা শহরে একের পর এক মন্দিরে চুরি করছে। শনিবার পাঁচটি মন্দিরে চুরির ঘটনার পর পুলিশ যদি একটু সর্তক হতো, তবে আর কোন মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটত না।” শহরের যে ১০ টি মন্দিরে চুরি হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় চুরি হয়েছে কালীতলার বুড়িমা কালী মন্দিরে। ওই কালী মন্দিরের সেবাইত বাবু ভট্টাচার্য বলেন, “আজ সকালে আমার মেয়ে মন্দির খুলতে গিয়ে দেখে গ্রিলের তালা ভাঙা। মেয়ে চিৎকার করলে সকলে জড়ো হন।” প্রায় ১০ লক্ষ টাকার গয়না চুরি হয়েছে বলে আশঙ্কা।
মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “সারা রাত শহরের পুলিশি টহল চলছে। তিনটি দল রাতে টহলদারি করছে। এর পরেও কী ভাবে মন্দিরে চুরি হচ্ছে বুঝতে পারছি না। তবে মনে হচ্ছে একটি দলই এই সমস্ত মন্দিরে চুরি করছে। তাদের ধরতে পুলিশ চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে। ২-১ দিনের মধ্যেই মন্দিরের চুরির কিনারা হয়ে যাবে।” |
একনজরে |
শনিবার চুরি হয় মালদহ শহরের ৪টি মন্দিরে। চুড়িপট্টির শীতলা মন্দিরে। ৫টি টিকলি, ৩ জোড়া দুল, শিবের সোনার খড়ম, ১২ ভরি রুপার অলঙ্কার। চুড়িপট্টির কালী মন্দিরে সোনার জিভ, সোনার টিপ, সোনার চোখ, চুড়ি-সহ লক্ষাধিক টাকার গয়না। সদরঘাট কালী মন্দিরে ১০ ভরি রুপোর ও সোনার অলঙ্কার। উত্তর বালুচর শ্মশানঘাটে হেমন্ত রায়ের কালী মন্দিরে বিগ্রহের মুকুট, চাদর এবং অলঙ্কার।
|
রবিবার রাতে চুরি হয়েছে বাবুপাড়ার সন্তোষী মাতার মন্দিরে। রুপোর হার, সোনার দুল এবং টিকলি।
|
সোমবার চুরি হয় ১টি মন্দিরে। সারদাপল্লি দুর্গা মন্দিরে ৭০ হাজার টাকার সোনা ও রুপোর অলঙ্কার।
|
মঙ্গলবার রাতে ৪টি মন্দিরে চুরি হয়েছে। কালীতলার বুড়াকালী মন্দিরে ১০ লক্ষাধিক টাকার গয়না। দক্ষিণ বালুচরের কালীমন্দিরে ৬০ হাজার টাকার সোনা-রুপোর অলঙ্কার। দক্ষিণ বালুচরের দক্ষিণা কালী মন্দিরে ৭০ হাজার টাকার অলঙ্কার। দক্ষিণ বালুচরের মনসা মন্দিরে প্রায় ৪০ হাজার টাকার গয়না। |
|