স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা সদস্যরা দীর্ঘদিন থেকে তাঁদের তৈরি সামগ্রী বিপণনের ব্যবস্থা করার জন্য পুর কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানিয়ে আসছেন। কয়েকবার দরবারও করেন তাঁরা। অবশেষে রায়গঞ্জ পুরসভা স্বনির্ভর মেলার আয়োজন করে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে সামগ্রী বিক্রির সুযোগ করে দেওয়ায় গোষ্ঠীর সদস্যরা খুশি। মঙ্গলবার থেকে শহরের ২৫টি ওয়ার্ডের ৬০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে নিয়ে করোনেশন হাই স্কুল চত্বরে দুদিনের ওই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু মেলা কেন মাত্র দু’দিনের জন্য করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। সিপিএমের রায়গঞ্জ লোকাল কমিটির সম্পাদক নীলকমল সাহা বলেন, “মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত চারটি ছুটির দিন পড়েছে। তাই মেলা অন্তত পাঁচদিন অনায়াসে করা যেত। আশা করছি পুর কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে বেশি দিন ধরে স্বনির্ভর মেলার আয়োজন করবে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “বাসিন্দারা কিছু বুঝে ওঠার আগে মেলা শেষ হয়ে গেল। ভবিষ্যতে সপ্তাহব্যাপী মেলার আয়োজন করা হলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা যেমন বেশি করে তাঁদের সামগ্রী বিক্রি করার সুযোগ পাবেন। তেমন অনেকে মেলা দেখে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবেন।”
পুরসভার কর্তারা জানান, স্কুল চত্বরে কৃষিমেলা ও ফুলমেলা চলেছে। রয়েছে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান। সেই কারণে জায়গা না পাওয়ায় দুদিনে মেলা শেষ করতে হয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “এ বছর প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে স্বনির্ভর মেলার আয়োজন করা হল। ভবিষ্যতে হাতে সময় নিয়ে মেলা হবে।” স্বনির্ভর মেলায় সামিল হয়ে খুশি রায়গঞ্জের ৭ নম্বর ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের দুই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য সুপ্রিয়া বল ও শিলা অধিকারী। তাঁরা জানান, শহরের বিভিন্ন দোকানে ও বাড়িতে গিয়ে নিজেদের তৈরি সামগ্রী বিক্রি করতে হয়। দীর্ঘদিনের দাবি মেনে পুরসভা স্বনির্ভর মেলার আয়োজন করায় প্রত্যেকে খুশি। মেলায় ক্রেতাদের কাছে সরাসরি সামগ্রী বিক্রি করতে পেরে কাজের উৎসাহ বেড়েছে। দুদিনের মেলায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা কাপড় ও তুলোর পুতুল, শুকনো খাবার, গুঁড়োমশলা, ধুপকাঠি, ঘর সাজানোর বিভিন্ন সামগ্রী সহ বাঁশ, কাঠ, ঝিনুক, পাথর, পুঁথি, মাটি, উল ও কাপড় দিয়ে তৈরি করা নানা সামগ্রী বিক্রি করেন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ২৫টি ওয়ার্ডে ৫৬৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। পুরসভার শহর প্রকল্প আধিকারিক শ্যামল সেনগুপ্ত বলেন, “এ বার জায়গার অভাবে প্রত্যেক গোষ্ঠীকে মেলায় সামিল করা সম্ভব হয়নি। এর পরে নিশ্চই সবাই সুযোগ পাবেন। এ ছাড়াও শহরে স্থায়ী বিপণন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তখন নিজেদের সামগ্রী বিক্রির সমস্যা থাকবে না।” |