মালদহে চালু মহিলা আদালত
বুধবার মালদহে দেশের প্রথম মহিলা আদালতের উদ্বোধন করলেন কলকাতা হাইকোর্টের মহামান্য প্রধান বিচারপতি অরুন মিশ্র। আগামীকাল, বৃহস্পতিবার থেকে ওই আদালতে মামলা শুরু হবে। অতিরিক্ত সেশন ও দায়রা জজ মিনা সরকার ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্যেট কেয়া সরকারের আদালতে কেবলমাত্র মহিলা নির্যাতন সংক্রান্ত মামলার বিচার হবে। এদিন মহিলা আদালত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি, বিচারপতি সঞ্জীব বন্দোপাধ্যায়, বিচারপতি কানোয়াল জিত সিং আলুওয়ালিয়া। বিচারপতি কানোয়াল জিত সিং আলুওয়ালিয়া বলেন, “মহিলাদের প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার জন্য মহিলা আদালতে বিচারক থেকে শুরু করে আর্দালি, সেরেস্তাদার , পিওন ও নিরাপত্তারক্ষী সব পদে মহিলা রাখা হয়েছে। পুলিশ মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ না নিলে আদালতে আর্জি জানান। আদালত আপনাকে ইনসাফ দেবে।”
তবে উদ্বোধনের সুর কিছুটা কেটে যায় আইনজীবীরা অংশ না-নেওয়ায়। সমস্ত আইনজীবীদের আমন্ত্রণ না জানানোয় ক্ষুব্ধ মালদহ বার অ্যসোসিয়েশনের আইনজীবীরা মহিলা আদালত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যাননি। মালদহ বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আমিনূল ইসলাম বলেন, “মহিলা আদালত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কেবল বারের সভাপতি ও সম্পাদককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সেই কারণে আজ মহিলা আদালতের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমরা যাইনি।”
এই সেই আদালত। মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
এ দিন মহিলা আদালতের উদ্বোধন উপলক্ষে জেলা আদালতের উদ্যোগে লিঙ্গ বৈষম্য ও নারী নিযার্তন সংক্রান্ত একটি সেমিনারে টাউন হলে ভাষন দিতে গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী পশ্চিমবঙ্গে নারী পাচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ এমনই একটি রাজ্য যেখানে নারী পাচার সবচেয়ে বেশি। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি থানা আছে যেখানে তিনটি অভিযোগে আমি দেখেছি ৫১ জন মহিলা পাচার হয়ে গিয়েছেন। যাদের হদিশ এখনও নেই। এরকম কত থানা আছে, যেখানে কত মহিলা পাচার হয়েছে, তার হদিস নেই।”
এদিন সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আক্ষেপের সঙ্গে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, “দেশের আইন প্রণয়ন যেখানে হয়, তার শীর্ষে রয়েছেন মহিলা, কেন্দ্রে যে সরকার দেশ চালাচ্ছেন তার শীর্ষে এক জন মহিলা, এমনকি বিরোধী দলের নেত্রীও মহিলা। ক্ষমতায় এতো মহিলা থাকা সত্ত্বেও মহিলারা এত অত্যাচারিত হচ্ছে কেন? এটা আমি বলতে পারব না। এর উত্তর সমাজবিদরাই দেবেন।
এরই পাশাপাশি, দেশে পুরুষের তুলনায় মহিলাদের সংখ্যা কমে যাওয়ার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, “পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ১৯৭০ সালে প্রতি ১০০০ পুরুষে ৯৬৪ জন মহিলা ছিল, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৯১৪ তে। মহিলাদের সংখ্যা কমে যাওয়ার সাথে সাথে মহিলাদের অবমূল্যায়ন হচ্ছে। মহিলার সংখ্যা যত কমবে, মহিলাদের উপরে তত বেশি নিপীড়ন, অত্যাচার, ধর্ষণ বাড়বে।” তাঁর মতে, “আইন দিয়ে সমাজের অপরাধকে নির্মূল করা যাবে না। সামাজিক কলঙ্ক থেকে শুধু আমরাই পারি আমাদেরকে মুক্ত করতে। এ জন্য নিজের ভিতরের কালিমা, বৈষম্য ও অপরাধ করার প্রবণতা দমন করতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.