ফের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ছিনতাই বারুইপুরে। এ বার ভয় দেখাতে শূন্যে গুলিও ছুড়ল দুষ্কৃতীরা।
পুলিশ জানায়, বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ বারুইপুর হরিহরপাড়ার বাসিন্দা মহুয়া দে চক্রবর্তী কয়েক জনের সঙ্গে বেরিয়েছিলেন। তিন ছিনতাইবাজ মোটরবাইকে চেপে এসে তাঁর সোনার হার ছিনতাই করে পালায় বলে অভিযোগ। মহুয়াদেবী মোটরবাইকের পিছু নিলে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়।
গত সপ্তাহেই ভরদুপুরে বারুইপুরের আটঘরা-সাদাবাড়ি এলাকায় শাশ্বতী ঘোষ নামে এক মহিলার মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে হার ছিনতাই করেছিল মোটরবাইক-আরোহী দুষ্কৃতীরা। তবে সে-দিন কোনও গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি। |
ছিনতাইয়ের ক্ষত। হার খুইয়ে আঁচড়ের দাগ দেখাচ্ছেন মহুয়া। —নিজস্ব চিত্র |
ঠিক কী ঘটেছে এ দিন?
মহুয়াদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, নিজের মেয়েকে নিয়ে তিনি এ দিন অনামিকা মণ্ডল ও মৌসুমী মুখোপাধ্যায় নামে দুই প্রতিবেশী মহিলা এবং তাঁদের দুই মেয়ের সঙ্গে স্থানীয় ক্লাবে গিয়েছিলেন। সেখানে দৃষ্টিহীন ছেলেমেয়েদের খেলার প্রতিযোগিতা ছিল। মাঝরাস্তায় পিছন থেকে একটি কালো মোটকবাইক চেপে তিন জন দুষ্কৃতী এসে পথ আটকায়। এক দুষ্কৃতীর মুখ হেলমেটে ঢাকা ছিল। মহুয়াদেবীর কথায়, “হঠাৎ গলার পিছনে পিঁপড়ে কামড়ানোর মতো অনুভূতি হয়। পিছন ফিরে দেখি, এক যুবক গলায় হাত দিয়ে হার খোলার চেষ্টা করছে। চিৎকার করে উঠি। দেখি, মোটরবাইক থেকে অন্য একটি যুবক নেমে এসেছে।” তারা মহুয়াদেবীর হাত মুচড়ে ধরে। ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয় তাঁর সঙ্গীদের। তার পরে মহুয়াদেবীর গলা থেকে প্রায় ১৫ গ্রাম ওজনের সোনার হার ছিনিয়ে নিয়ে মোটরবাইকে উঠে পড়ে। মহুয়াদেবী চিৎকার করতে করতে পিছু নেন। তাঁর সঙ্গীরা এবং আশপাশের লোকজনও দুষ্কৃতীদের লক্ষ করে ইট ছোড়েন। দুষ্কৃতীরা তখন শূন্যে প্রায় ১০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে বলে তাঁদের অভিযোগ। তবে পুলিশি সূত্রের দাবি, ঘটনাস্থলে মাত্র একটি গুলির খোল মিলেছে।
মহুয়াদেবীর শাশুড়ি মায়াদেবী বলেন, “মূল রাস্তায় টুকটাক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও পাড়ার ভিতরে এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম।” গত বছর কলকাতার যাদবপুর ও বাবুবাগানে ছিনতাই করতে গিয়ে গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তার পরে লালবাজারের গোয়েন্দারা কয়েকটি দলকে গ্রেফতার করলেও খোয়া যাওয়া জিনিস এবং কোনও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে পারেননি। স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ, কলকাতায় পুলিশ সক্রিয় হওয়ার ফলেই ছিনতাইবাজেরা সোনারপুর-বারুইপুর এলাকায় সরে আসছে।
তদন্তকারীরা জানান, দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে শাশ্বতীদেবী ও মহুয়াদেবী যে-বর্ণনা দিয়েছেন, তাতে বেশ কিছু মিল পাওয়া গিয়েছে। তাই পুলিশের সন্দেহ, দু’টি ঘটনায় একই দল জড়িত থাকতে পারে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। দু’টি ঘটনায় একই দল জড়িত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |