অর্থাভাবে তৈরি হচ্ছে না নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র
মাথার উপর ছাদ নেই। অগত্যা, খোলা আকাশের নীচে চলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। গাছতলাতেই ক্লাস হয়। পাশে উনুনে রান্না। এ ছবি পিছিয়ে পড়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়েই। এমন পরিস্থিতিতেও নতুন অঙ্গনওয়াড়ি তৈরি করা যাচ্ছে না। অনুমতি পেয়েও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় কাজ প্রকল্প শিকেয় উঠেছে। সব মিলিয়ে ২৪৫টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির অনুমতি পেয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। এর মধ্যে ১৭০টি কেন্দ্রের কাজ করাই সম্ভব হয়নি। বিষয়টি সম্প্রতি চিঠি দিয়ে রাজ্য সরকারকে জানিয়েছেন জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। এমনিতে অনুমতি পেতেই বেশ কিছু সময় গড়িয়ে যায়। তারপর অর্থ মঞ্জুর হলে শুরু হয় কাজ। এ ক্ষেত্রে অনুমতি মেলার পরও কাজ না হওয়ায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
কেন এই পরিস্থিতি? জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির অনুমতি মিলেছিল। তবে সরকার থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ দেওয়া হয়নি। যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল, তা দিয়ে যতগুলো কেন্দ্র তৈরি করা যায়, তা করা হয়েছে। কয়েকটি কেন্দ্র তৈরির কাজ এখনও চলছে। বাকি কেন্দ্র তৈরির জন্য বারবার অর্থ চেয়ে সরকারের কাছে দরবার করা হয়েছে। কিন্তু মেলেনি। তাই বেশ কিছু সংখ্যক কেন্দ্র তৈরি করা সম্ভব নয় বলে সরকারকে জানানো হয়েছে।” সভাধিপতি আরও বলেন, “আমরা কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু টাকা না পেলে কাজ করব কী ভাবে? তাই চিঠি দেওয়া ছাড়া অন্য কোনও পথ ছিল না।” জানা গিয়েছে, এক-একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির জন্য সরকার থেকে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল (আরআইডিএফ) থেকে জেলা ২০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির অনুমতি মিলেছিল। এরমধ্যে ৯টির কাজ শেষ হয়েছে। ২টির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বাকি ৯টি তৈরি করা সম্ভব হয়নি। সমাজকল্যাণ দফতর ২০০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির অনুমতি মিলেছিল। এর মধ্যে ৩৫টির কাজ শেষ হয়েছে। ১২টির কাজ চলছে। বাকি ১৫৩টি তৈরি করা সম্ভব হয়নি। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের তহবিল থেকে ২৫টি কেন্দ্র তৈরির অনুমতি মিলেছিল। ১৭টির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৮টির কাজ করা যায়নি।
তবে সমস্যা যেখানে ছিল, সেখানেই থেকে গেল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। পশ্চিম মেদিনীপুরের অধিকাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন নেই। জেলায় ১ হাজার ৮৩ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আবার চলে খোলা জায়গায়। ৯ হাজার ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ২ হাজার ৮৭৩ টির নিজস্ব ঘর রয়েছে। ২ হাজার ৩০৮ টি অন্য সরকারি জায়গায় চলে। ১ হাজার ৯৯৮ টি বেসরকারি জায়গায় চলে। যেখানে মাথার উপর ছাদ রয়েছে। বাকি ১ হাজার ৮৩টি চলে খোলা আকাশের নীচে। ফলে, বর্ষাকালে ভীষণ সমস্যা হয়। সামান্য বৃষ্টিতেও অঙ্গনওয়াড়ি চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে। অন্য দিকে, শহর এলাকায় ৩৩১টি কেন্দ্র চলে ভাড়া বাড়িতে। এক সময় সব কেন্দ্রের জন্যই নিজস্ব ঘর তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু শেষমেশ সেই মতো পদক্ষেপ করা সম্ভব হয়নি। মেদিনীপুর সদর ব্লক এলাকার এক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীর কথায়, “কেন্দ্রের নিজস্ব ঘর না থাকার ফলে প্রচুর সমস্যা হয়। বিশেষ করে বর্ষাকালে। তখন পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। প্রশাসনের কাছে কেন্দ্রের নিজস্ব ঘর তৈরি করে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে না। অগত্যা খোলা আকাশের নীচেই কেন্দ্র চালাতে হচ্ছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.